মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে পড়ে থাকা গুলিবিদ্ধ তরুণীর লাশের পরিচয় মিলেছে। নিহতের নাম শাহিদা বেগম (২২)। তার বাড়ি ময়মনসিংহে। শ্রীনগর ও লৌহজং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) জেলার শ্রীনগর উপজেলার দোগাছি গ্রামের এক্সপ্রেসওয়ের সার্ভিস লেন থেকে তরুণীর গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মরদেহের পাশে থেকে ৫টি গুলির খোসা ও তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। সেই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, নিহত তরুণী শাহিদা বেগম ময়মনসিংহের কোতায়ালী থানার বেগুনবাড়ী বাজার গ্রামের মৃত মোতলেব হোসেনের মেয়ে। তিনি রাজধানীর ওয়ারী এলাকায় একটি ভাড়াবাড়িতে মা ও দুই ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন।
তরুণীর ভাই মো. জসিম জানান, তার বোন রাজধানীর বলদা গার্ডেনের পাশে ১০ নম্বর বাড়ির এক আন্টির ছেলে-মেয়েদের স্কুল থেকে আনা-নেওয়ার কাজ করতেন। শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই আন্টির বাসায় যাওয়ার কথা বলে নিজ বাসা থেকে বের হয় শাহিদা। ১০ বছর আগে গ্রামের বাড়ি থেকে পরিবার নিয়ে রাজধানীর ওয়ারীতে চলে আসেন তিনি। তারা ৩ বোন ও ২ ভাই। বোনের সঙ্গে কারও প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না জানে না তিনি।
নিহতের মা জরিনা খাতুন বলেন, ‘পাশেই একটি বাড়িতে বাচ্চাদের স্কুলে আনা-নেওয়ার কাজ করত শাহিদা। সেই বাড়িতেই রাত্রিযাপন করতেন। শুক্রবার রাতে সেখানে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। সকালে পুলিশের কাছে খবর পেয়ে থানায় আসি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই এলাকার তৌহিদ নামের এক ছেলে আমার মেয়েকে বিরক্ত করতো। একসময় তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিছুদিন আগে সে আমার মেয়েকে চাঁদপুর নিয়ে যায়। সেখানে এলাকাবাসী তাদের আটক করে। আমরা বিয়ে দিতে চাইলেও তার পরিবারের লোকজন রাজি হয়নি। সে আমাদের বাড়িতে এসে আমাকে ও মেয়েকে মারধর করে। কিছুদিন পরপর আমার মেয়ে তার সঙ্গে বের হয়ে যায়। শুক্রবার রাতে কাজের কথা বলে সেই ছেলের সঙ্গেই বাসা থেকে বের হয়। তৌহিদ আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমি তার ফাঁসি চাই।’
পরিচয় শনাক্তের ব্যাপারে শ্রীনগর ও লৌহজং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিছুর রহমান জানান, প্রাথমিকভাবে থানা পুলিশ আশেপাশে খোঁজাখুঁজি করে ক্লু পাওয়ার চেষ্টা করেছে। পিবিআই ঘটনাস্থলে পৌঁছে তরুণীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেয়, তাতেও পরিচয় শনাক্ত হয়নি। পরিশেষে আইফোনের সিমকার্ড অন্য আরেকটি মোবাইল ফোন সেটে ব্যবহার করে পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। শ্রীনগর থানায় নিহতের স্বজনরা এসে লাশ শনাক্ত করেছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।