Main Menu

আমাদের কাজের কারণেই ফ্যাসিবাদের ফেরার আশঙ্কা বেড়ে গেছে: মির্জা ফখরুল

আজকে আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন কতগুলো কাজ করছি, যে কাজগুলোর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র পুনর্গঠনে লেখক-শিল্পীদের ভূমিকা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিবাদ পরাজিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ যেকোনও সময় আবার ফিরে আসতে পারে। আমরা সেই রাস্তা যেন তৈরি করে না দেই। আজকে আমরা দুর্ভাগ্যজনকভাবে এমন কতগুলো কাজ করছি, যে কাজগুলোর মধ্য দিয়ে কিন্তু ফ্যাসিবাদের ফিরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়।

তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে তুলে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সংস্কার করে, একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা নিঃসন্দেহে একটি জটিল কাজ, আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে। এই কাজটি আমাদের করতে হবে। এই কাজটি করার পেছনে আমাদের সবচেয়ে বেশি যেটা প্রয়োজন— যারা আমরা মনে করেছি, ফ্যাসিবাদের পতন হওয়া দরকার, ফ্যাসিবাদকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থে জনমানুষের উপযোগী একটি রাষ্ট্র, সমাজ নির্মাণ দরকার, তাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে কষ্ট হয়, দুঃখ হয়। এখানে (মতবিনিময় সভা) আসার আগে মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা তার ভাইকে নিয়ে আমার বাসায় এসেছিল। এসে বলছে, ‘স্যার, আজকে মন খুব খারাপ।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন? বললো, ‘গত কয়েক দিন ধরে যা দেখছি, তাতে করে আমার মন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। এই এতদিন ধরে যে কষ্ট যে পরিশ্রম, ত্যাগ, প্রিয় মানুষগুলোর চলে যাওয়া, সব কিছু ছাড়িয়ে কেমন যেন একটা ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হচ্ছে।’ আমার (মির্জা ফখরুল) মনে হয়, অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এই অবস্থা সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং সেটা করছে কথিত ফ্যাসিবাদ।

ফখরুল আরও বলেন, আমরা যারা ফ্যাসিবাদের বিপক্ষে ছিলাম, লড়াই করেছি, সংগ্রাম করেছি, আমরা কেন এখানে বিভাজন সৃষ্টি করছি? আজকে বিভিন্ন জায়গায়, বিভিন্ন কথা শুনলে রীতিমতো ভয় হয়। আজকে আমরা পুরো আন্দোলনকে একটা ভিন্ন দিকে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আমাদের তো এখন লক্ষ্য একটাই হওয়া উচিত। সেটা হলো, একটি সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য যে সংস্কারগুলো প্রয়োজন, সেগুলো করে একটি নির্বাচন করে পার্লামেন্টে যাওয়া।

বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, আমাদের সবার উচিত, অনৈক্য সৃষ্টি না করে ঐক্যের মধ্যে থেকে আমরা যে সুযোগটা পেয়েছি, সেটি কাজে লাগিয়ে কিছুটা হলেও সামনে এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু দুর্ভাগ্য, ৫৩ বছর হয়ে গেছে, আমরা এখন পর্যন্ত পিসফুল ট্রান্সফার অব পাওয়ার করতে পারিনি। আমরা সবসময় যুদ্ধ করছি, লড়াই করছি, ভাই ভাইয়ের রক্ত ঝরাচ্ছি।

তরুণদের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন, আপনারা অনেকে দায়িত্বে এসেছেন। এই দায়িত্বটাকে দায়িত্বশীলভাবে পালন করতে হবে। গোটা জাতিকে সামনে রেখে পালন করতে হবে। আমরা এমন কিছু করবো না, এমন কোনও হ্ঠকারিতা করবো না, যে হ্ঠকারিতার মধ্য দিয়ে আমরা আবার অন্ধকারের মধ্যে চলে যাবো।

জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মনি, লেখক ও বুদ্ধিজীবী সলিমুল্লাহ খান, সাংবাদিক আবু সাঈদ খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক কালের কণ্ঠের সম্পাদক কবি হাসান হাফিজ, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান, গণ-অধিকার পরিষদের সাধারণ রাশেদ খান প্রমুখ।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.