Main Menu

সিলেটে তামাবিলসহ সবকয়টি বন্দর দিয়ে পাঁচ দিন ধরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

সিলেট বিভাগের দুটি স্থলবন্দর ও ৯টি শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রয়েছে গত পাঁচ দিন থেকে। ফলে একদিকে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে বন্দরে কর্মরত অন্তত ১০ হাজার শ্রমিক বেকার দিন কাটাচ্ছেন। বন্দরের আশেপাশে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও স্থবির হয়ে পড়েছে। এতে সংশ্লিষ্টরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বিপাকে আছেন। বিশেষ করে শ্রমিকদের চুলা জ্বলছে না। তামাবিল, সতারকান্দি স্থল বন্দর এবং ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলী ও ছাতকের ইছামতি শুল্ক বন্দরে চলছে শুনসান নিরবতা।

একদিকে হিমমশীতল আবহওয়া। অন্যদিকে কাজের অভাবে এলাকার খেটে খাওয়া মানুষজন বড়ই কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, পণ্যে শুল্ক কর বৃদ্ধির প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা গত ৮ জানুয়ারি থেকে পাথর, চুনা পাথর আমদানি বন্ধ করে দেন। একই সঙ্গে অন্যান্য পণ্য আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে পড়ে।

এদিকে পাঁচ দিনেও বিষয়টির কোনো সুরাহা না হওয়ায় তারা এখন রাজপথে নেমেছেন। শনিবার দুপুরে ভোলাগঞ্জের ১০ নম্বর পয়েন্ট সংলগ্ন মহাসড়কে এবং ভোলাগঞ্জ বাজারে প্রতিবাদ মিছিল করেন পাথর আমদানি-রপ্তানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও পাথর উত্তোলনে জড়িত শ্রমিকরা। এসময় তারা নানা ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন। সংশ্লিষ্টরা জানান, গত চার মাসের মধ্যে দুই বার পাথর ও চুনাপাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু (আমদানি মূল্য) বাড়ানোতে ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে পাথর আমদানি বন্ধ করে দেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছেন, সারা দেশে যে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু আছে তার চাইতেও সর্বনিম্ন হার সিলেটে নির্ধারণ করা হয়েছে, কিন্তু ব্যবসায়ীরা তাদের সিদ্ধান্তে অনড়। তারা বলছেন, বর্ধিত ভ্যালু না কমালে তারা পাথর ও চুনাপাথর আমদানি করবেন না। সিলেট শুল্ক বিভাগ বলছে, ‘আইনের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।’

ভারতের পাথর ও চুনাপাথরের খনি সমৃদ্ধ মেঘালয় রাজ্য সিলেটের একেবারেই লাগোয়া। ফলে অন্য স্থানের তুলনায় কিছুটা কম দামে ও কম খরচে মেঘালয় থেকে পাথর আমদানি করেন এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের বক্তব্য—প্রতি টন পাথর ও চুনাপাথর সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ ডলারে তারা আমদানি করেন। তবে এই পাথরের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নিম্নমানের থাকায় তা ফেলে দিতে হয়। তবুও গত বছরের জুলাই পর্যন্ত শুল্ক বিভাগ আমদানি মূল্য নির্ধারণ করেছিল পাথর ১১ ডলার ও চুনাপাথর সাড়ে ১১ ডলার। ব্যবসায়ীরা বলেন, এই হারে শুল্ক পরিশোধ করে তেমন লাভ থাকে না ব্যবসায়ীদের। এর মধ্যে হঠাৎ গত বছরের আগস্টে পাথর ও চুনাপাথরের অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১ ডলার বাড়িয়ে পাথর ১২ ডলার ও চুনাপাথর সাড়ে ১২ ডলার করে চিঠি দেয় শুল্ক বিভাগ। সে সময়ও ক্ষুব্ধ হয়ে আমদানি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। এর পর চার দিন বন্ধ থাকে বন্দর।

সিলেটের কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনার মোহাম্মদ এনামুল হক সংবাদমাধ্যমকে জানান, সারা দেশে যে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু আছে তার সর্বনিম্ন হার তারা সিলেটে নির্ধারণ করেছেন। সিলেটের জন্য একবারে চাপিয়ে না দিয়ে দুই ধাপে গত আগস্টে ০.৭৫ ডলার আর এই জানুয়ারিতে ১ দশমিক ২৫ ডলার বাড়ানো হয়। এদিকে শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের দাবি—শুল্ক কমিয়ে পাথর আমদানির সুযোগ দেওয়া হোক।

এর আগে গত সোমবার ৮ জানুয়ারি দুপুর হতে ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন তামাবিল স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারকরা।

তামাবিল চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি লিয়াকত আলী জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (জারাবো) ভারত থেকে পাথর ও চুনাপাথর আমদানির ওপর অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু প্রতি মেট্রিক টনে বৃদ্ধি করে। এই বাড়তি শুল্ক দিয়ে পণ্য আমদানি করতে হলে আমদানিকারকরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই তামাবিলসহ সিলেটের সবকয়টি বন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনপাথর পাথর আমদানি বন্ধ রাখা হয়েছে।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.