Home » সিলেট বিভাগের ৮২টি ইউনিয়নে ভোট শেষ : চলছে গণনা

সিলেট বিভাগের ৮২টি ইউনিয়নে ভোট শেষ : চলছে গণনা

সিলেট বিভাগের ৮২টি ইউনিয়নে আনন্দ-উৎসবের মধ্য দিয়ে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় ভোটের লড়াই। বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ শেষে এখন চলছে গণনা। ফলাফলের জন্য রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছেন সকল প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।

চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের এ চতুর্থ ধাপেও সিলেটে প্রতিটি কেন্দ্রে ছিলো উৎসবের আমেজ। পাশাপাশি নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। শত বছরের বেশি বয়েসি মানুষকেও স্বত:স্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে এসে ভোট দিতে দেখা যায়।

রবিবার বিভাগের যে ৮২টি ইউনিয়ন পরিষদে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো হচ্ছে- সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা, গোলাপগঞ্জ, ফুলবাড়ী, লক্ষীপাশা, বুধবারিবাজার, ঢাকা দক্ষিণ, লক্ষণাবন্দ, ভাদেশ্বর, পশ্চিম আমুড়া, উত্তর বাদেপাশা, শরীফগঞ্জ ইউনিয়ন ও বিয়ানীবাজার উপজেলার আলীনগর, চারখাই, দুবাগ, শেওলা, কুড়ারবাজার, মাতিউরা, তিলপাড়া, মুল্লাপুর, মুড়িয়া, লাওতা ইউনিয়ন।

মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ফতেহপুর, উত্তরভাগ, মুনশীবাজার, পাঁচগাঁও, রাজনগর, টেংরা, কামারচাক, মনসুরনগর ইউনিয়ন ও মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর, মনুমুখ, কামালপুর, আপারকাবাগলা, আখাইলকুড়া, একাটুনা, চাদনীঘাঁট, কনকপুর, আমতৈল, নাসিরাবাদ, মুস্তফাপুর, গিয়াসনগর ইউনিয়ন।

হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার লাখাই, মুড়াকুড়ি, মুড়িয়াউখ, বামৈ, করাব, বুল্লা (ইভিএম) ইউনিয়ন ও বানিয়াচং উপজেলার বানিয়াচং উ.পূ, বানিয়াচং উ.প, বানিয়াচং দ.পূ, দৌলতপুর, খাগাপাশা, বড়ইউড়ি, খাগাউড়া, পুকড়া, সুবিদপুর, মকরমপুর, সুজাতপুর, মন্দরি, মুরাদপুর, পৈলারকন্দি ইউনিয়ন।

সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার কলকলিয়া, চিলাউড়া হলদিপুর, রাণীগঞ্জ, সৈয়দপুর শাহারপাড়া, আশারকান্দি, পাইলগাঁও, পাটলি ইউনিয়ন ও দিরাই উপজেলার রফিনগর, ভাটিপাড়া, রাজানগর, চরনারচর, দিরাই সরমঙ্গল, করিমপুর, জগদল, তাড়ল, কুলঞ্জ ইউনিয়ন ও বিশ্বম্বরপুর উপজেলার ফতেহপুর, বাধাঘাট দক্ষিণ, পলাশ, ধনপুর ও সলুকাবাদ ইউনিয়ন।
জানা যায়, বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটারদের সারি দীর্ঘ হতে শুরু করে। এর মধ্যে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিলো লক্ষণীয়। ভোটগ্রহণ সুষ্ঠু করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও ছিলেন কঠোর অবস্থানে।
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, ভোট হওয়া প্রতিটি উপজেলার জন্য নির্ধারিত ৪ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়। এর বাইরেও শঙ্কাপূর্ণ উপজেলায় দেওয়া হয় অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট। কেন্দ্র প্রতি মোতায়েন করা হয় পুলিশ, আনসার, অঙ্গীভূত আনসারের ২২ জনের ফোর্স। এছাড়াও পুলিশ, এপিবিএন ও ব্যাটালিয়ন আনসারের একটি করে টিম প্রতি ইউনিয়নে মোবাইল ফোর্স হিসেবে এবং প্রতি তিনটি ইউনিয়নের জন্য একটি করে স্ট্রাইকিং ফোর্স দায়িত্ব পালন করে। প্রতি উপজেলায় ছিলো র‌্যাবের দুটি মোবাইল টিম ও একটি স্ট্রাইকিং টিম এবং মোবাইল টিম হিসেবে বিজিবির দুই প্লাটুন সদস্য। বিজিবির আরও এক প্লাটুন নিয়োজিত রাখা হয় স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে।

এদিকে, রবিবারের নির্বাচন সিলেটে উৎসবপূর্ণ হলেও ঘটেছে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা। সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার ৪নং শেওলা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে দিগলবাক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাল ভোট দিতে গিয়ে চার কিশোর ধরা পড়েন। তাদের সবার বয়স ১৬ বছরের নিচে। আটকের পর ফাহিম মিয়া (১৬) নামের এক কিশোরকে প্রিসাইডিং অফিসার তার কক্ষের টেবিলের নীচে মাথা নিচু করে রেখে শাস্তি প্রদান করেন। তবে ফাহিম ছাড়া আটককৃত অন্যদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি। সেই সাথে তাদের পরিচয়ও জানাতে অনিহা প্রকাশ করেন ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার শাহেদুল হক।

একই কেন্দ্রে দুপুরের একটু পরে ভোট দিতে গিয়েছিলেন হালিমা বেগম (৫৫) নামের এক নারী। প্রায় আধঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটকক্ষে গিয়ে জানতে পারেন- তাঁর ভোট দেয়া হয়ে গেছে। এসময় তিনি ভোট দেন নাই জানালেও কোনো পদক্ষেপ নেননি সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা। পরে তিনি ভোট না দিয়েই বাড়ি ফিরে যান।

অপরদিকে, সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুরে জাল ভোট দেয়ার সময়ে দুজনকে আটক করে পুলিশে দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। আটককৃতরা হলেন- বিশ্বম্ভপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের সিরাজপুর বাগগাঁও গ্রামের জিয়া রহমানের ছেলে নাঈম হোসেন (১৮) এবং একই গ্রামের মঞ্জুর আলীর ছেলে কামরুজ্জামান (১৯)।

রবিবার দুপুরে উপজেলার সিরাজপুর বাগগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের একটি বুথে এ দুজন জাল ভোট দিতে গেলে কেন্দ্রের সহকারী পুলিং এজেন্টের সন্দেহ হলে পরিদর্শন করতে আসা ম্যাজিস্ট্রেটকে বিষয়টি জানান। পরে ম্যাজিস্ট্রেট প্রাথমিক যাচাই-বাছাই করে আটককৃত দুজনকে পুলিশের মাধ্যমে থানায় পাঠান।

 

 

 

 

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *