1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
শিশু খায় না বলে ডাক্তারের কাছে যাবেন না
       
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ০৭:৫৭ পূর্বাহ্ন

শিশু খায় না বলে ডাক্তারের কাছে যাবেন না

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, ৩০ মে, ২০১৮

মাহবুবা জান্নাত: প্রথমেই বলি, শিশুর খাবারে অনীহার ক্ষেত্রে চিকিৎসকরা কিন্তু মায়েদেরই দোষ দিয়ে থাকেন।  ৮০ এর দশকের নামকরা শিশু বিশেষজ্ঞ আকবর আলীর চেম্বারের দরজাতেই লেখা থাকত, ‘শিশু খায় না। এই অভিযোগ নিয়ে কেউ এখানে আসবেন না।’

এর ব্যাখ্যাও তিনি দিতেন নিজের জীবনের উদাহরণ দিয়ে। বলতেন, ‘আমরা ছিলাম দশ ভাই বোন। আমারে মায়ের অত সময় ছিল না যে ছেলেমেয়েদের পেছনে খাবার নিয়ে ঘুরবেন। আমরা ভাই বোনরা কাড়াকাড়ি করে খেয়েই কুল পেতাম না।’

বিষয়টি আসলেই সত্য। এখনকার মায়েদের মাত্র একটি বা দুটি সন্তান। সেই সন্তানের খেভালের জন্য রয়েছে আরও অন্তত একজন বা দুইজন গৃহকর্মী। তাই এই সন্তানকে খাওয়াতেই তিনি পার করে দেন দিনের একটি সময়।

এই মা রা বুঝতে চান না যে, শিশুর পাকস্থলী আর তার পাকস্থলী এক সমান নয়। শিশুর শরীরের চাহিদা যতটুকু, ততটুকুই সে খাবে। তাছাড়া এক বার খ্ওায়ার পর সেটি হজম হতেও তো সময় দিতে হবে।

আমরা যদি দুই ঘণ্টা পর পর একটি এক বছরের শিশুকে খাওয়াতে চাই, তবে সেটি তার জন্য অত্যাচার হয়ে যাবে। আরও অত্যাচার হবে, যখন শিশুটিকে জোর করে খাওয়ানোর পর সে বমি করে দেয় এবং ‘সব খাবার বের হয়ে গেল’ ভেবে মা আবারো ঠেসে ঠেসে খাবার ঢুকিয়ে দেন তার মুখে।

নবজাতকের খাদ্যাভ্যাসের কথাই বলি। শিশু বিশেষজ্ঞরা ক্রমাগত বলে চলেছেন, মায়ের শালদুধ হবে নবজাতকের প্রথম খাবার। জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শালদুধ (গাঢ় এবং হলদেটে) দিতে পারলে শিশু মৃত্যুর হার ৩৭ শতাংশ কমে যায়।

মায়ের দুধে থাকে প্রায় ২৫০ উপাদান। এটি শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে, শিশুর সার্বিক পুষ্টি নিশ্চিত করতে যথেষ্ট। তাই বারে বারে শিশুকে মায়ের দুধ দিতে হবে। শিশু যখনি চাইবে, তখনই।

শিশু কাঁদলে, মুখে হাত দেয়ার চেষ্টা করলে বুঝতে হবে তার ক্ষুধা পেয়েছে। শিশু দিনে ছয় বার প্রস্রাব করলে বুঝতে হবে সে যথেষ্ট পরিমাণ দুধ পাচ্ছে।

কিন্তু বাস্তবতা হলো, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিশুর দাদি, নানিরা মায়ের কানের কাছে ক্রমাগত বলতে থাকেন যে, বাচ্চার ক্ষুধা মিটছে না। বাচ্চা শুকিয়ে যাচ্ছে।

তাই মায়ের দুধের পাশাপাশি গুঁড়া দুধ দিতে জোরাজুরি করতে থাকেন তারা। এতে যে ফল হয়, তা হলো শিশুটি খেতে বেশ নাদুস নুদুস হয়। কিন্তু কমে যায় তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। বেড়ে যায় পেটের অসুখ।

মায়ের দুধ শিশুর মস্তিস্ক বা বুদ্ধিমত্তার বিকাশেও সহায়ক। সেই সঙ্গে মায়ের সাথে শিশুর আবেগীয় সম্পর্ক জোরদার করে এক্সক্লুসিভ বেস্টফিডিং বা শুধু বুকের দুধ। ছয় মাস পর্যন্ত এটি চালাতে বলেন চিকিৎসকরা।

ছয় মাস পর

ছয় মাস পর থেকে ঘরে তৈরি খাবার। একটু চালের সাথে ডাল বা একটি সবজি মিশিয়ে তেল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে দিলে শিশু খুবই আগ্রহ নিয়ে খায় তা। তবে সমস্যা হলো শিশু পছন্দ করছে বলে অধিকাংশ মা ই প্রতিদিনই কয়েকবার করে কেবল খিচুড়িই দিতে থাকেন। ফলে অচিরেই সে এই চমৎকার খাবারটির প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।

তাই এ সময় তাকে খিচুড়ির পাশাপাশি দুধ দিয়ে রান্না করা সেমাই, ডিম, কলা ইত্যাদি দিতে হবে। তবে সব একসঙ্গে নয়। বরং কিছুদিন পর পর নতুন নতুন একেকটা আইটেম ট্রাই করতে হবে।

সেরেল্যাক বা কৃত্রিম শিশু খাদ্য, ফর্মুলা মিল্কে ক্ষতিকর প্রিজারভেটিভ থাকে। তাই এগুলো শিশুদের না দেওয়াই ভালো।

আট মাস পর

সাধারণত আট মাস বয়সের পর থেকে শিশুরা সব কিছু মুখে দিতে চায় বলে এ সময় শিশুদের পেটের সমস্যা একটু বেড়ে যায়। তাই অনেকে শিশুদের স্বাভাবিক খাবার দিতে ভয় পান। তবে মজার কথা হলো, বাবা মা যেই খাবার খাচ্ছেন, তা থেকে বাচ্চাকে একটু একটু করে দিলে বাচ্চার টেস্ট বাড সেসব খাবারের প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়ত। ফলে সেসব বাচ্চার জন্য আলাদা খাবারের প্রয়োজন হয় না কিছুদিন পর থেকে।

এ সময় বাচ্চার শরীরে লৌহের চাহিদা বেড়ে যায়। আর মায়ের দুধে লৌহের পরিমাণ থাকে খুব কম। তাই আয়রন সমৃদ্ধ খাবার যেমন কচুশাক, লালশাক, কলিজা ইত্যাদি দ্য়ো প্রয়োজন। নতুবা রক্তশূন্যতায় ভুগবে শিশু। কলা, ডালিমের রসে প্রচুর আয়রন, পটাশিয়াম থাকে। এগুলোও শিশুর জন্য প্রয়োজন। খাবারে বৈচিত্র্য আনতে এ সময় তাদের নুডুলস, মুড়িও দেওয়া যায়।

৯ বা ১১ মাস থেকে শিশু সাধারণত খ্ওায়া নিয়ে ঝামেলা করতে শুরু করে। এর কারণ হতে পারে বৈচিত্র্যহীন, একঘেয়ে খাবার, দুই ঘণ্টা পর পর খাবার নিয়ে মায়ের ‘যুদ্ধ’, খেলাধুলার অভাব বা শারীরিক নিস্ক্রিয়তার কারণে শিশুর মধ্যে খাবারের চাহিদা তৈরি না হওয়া ইত্যাদি।

এ সময় থেকেই মূলত শিশুর খাওয়া নিয়ে মায়ের ধৈর্যের পরীক্ষা শুরু। তবে কিছু কৌশলের মাধ্যমে সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। শিশুকে গালগপ্প বলতে বলতে খাওয়ানো যায়। তবে তা অবশ্যই টিভি বা মোবাইল ফোনের সামনে বসিয়ে না। এতে সে খাবারের রং, স্বাদ চিনবে না। স্বাভাবিকভাবে খাবার চিবিয়েও খাবে না। মোট কথা, খাওয়ার আনন্দ থেকে সে বঞ্চিত হবে। যদিও এতে তার খ্্াওয়ার পরিমাণ বাড়বে।

দ্বিতীয়ত, অন্তত চার ঘন্টা অন্তর একেকটি মিল দেওয়া উচিত। মিল মানে একটি আইটেম নয়। বরং কয়েকটি আইটেমের সমন্বয়, যেখানে তার প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি মিলবে।

যেমন: সকালে ডিম, রুটি, ডাল। একটু মিষ্টি জাতীয় কিছু যেমন কলা, সেমাই বা আপেল সেদ্ধ। সবগুলো আইটেম একটু একটু করে খেলেও বাচ্চার পেট ভরে যাবে।

এরপর দিতে হবে চার ঘণ্টার গ্যাপ। চিকেন স্যুপ শিশুরা খুব পছন্দ করে খায়। সাথে একটু টম্যাটো বা মাশরুম দিয়ে দিলে তা হবে তার জন্য একটি হেলদি ডায়েট। সাথে থাকতে পারে এক টুকরা আলু সেদ্ধ বা ভাত। এমনকি ডাল দিয়ে ভাত চটকে তাতে লেবুর রস দিয়ে দিলেও সেটি শিশুকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি দিতে সক্ষম।

পাশাপাশি থাকবে চিজ, দই, দুধ, পায়েস ইত্যাদি। কৃত্রিম ফলের রস, চকলেট, চিপস শিশুরে ক্ষুধা নষ্ট করে। এগুলোর পুষ্টিমানের বিষয়েও কোনোভাবে বাড়ির রান্না করা খাবারের সাথে তুলনা চলে না।

সকাল, দুপুর, বিকাল বা রাতের খাবারের এক ঘণ্টা আগেও যদি তাদের এসব খাবার দেওয়া হয়, তবে তা শিশুর ক্ষুধা নষ্ট করবে। তাই বড় মিলগুলোর মাঝখানে আর কোন খাবার নয়, শুধু পানি।

বারডেম জেনারেল হাসপাতাল-২ এর সহকারী রেজিস্ট্রার নূরজাহান বেগম বলেন, ‘বাইরের দেশগুলোতে এক বছরের পর থেকেই শিশুকে নিজে নিজে খেতে উৎসাহিত করা হয়। আমাদেরও উচিত, বাবা-মা ও পরিবারের সবার সাথে শিশুকে একসাথে খেতে বসানো।’

‘সে ফেলে, ছড়িয়ে খেলেও তাতে বাধা দ্ওেয়া যাবে না। এভাবেই সে সবার সাথে, সব ধরনের সাধারণ খাবারে অভ্যস্ত হয়ে উঠবে।’

দুই বছর পর

দুই আড়াই বছর পর্যন্ত শিশুর স্বাভাবিক খাবারের সাথে মায়ের দুধ, গরুর দুধ বা ফর্মুলা মিল্ক চলতে থাকে। অনেক শিশু স্বাভাবিক খাবারের চেয়ে দুধের প্রতিই আসক্ত থাকে বেশি।

কিন্তু মায়ের দুধ ছাড়ার পর সাধারণত শিশুর স্ব^াভাবিক খাবারের প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। এ সময় তার জন্য আলাদা করে কোন কিছুই রান্নার প্রয়োজন নেই। সে পুরো বড়দের খাবারই খেতে পারবে। তবে বিকেলের নাস্তায় বৈচিত্র্য আনা যায় ঘরে তৈরি চিকেন ফ্রাই, ফেঞ্চ ফ্রাই, পাউরুটি টোস্ট, কলা বা আম দিয়ে দুধ ভাত ইত্যাদি দিয়ে।

দুই থেকে তিন বছর পর্যন্ত শিশুর শরীরে ক্যালসিয়ামের চাহিদা থাকে সর্বাধিক। এ সময় তাদের হাড়ের গঠন হয়। তাই দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার রাখতে হবে তার খাদ্য তালিকা।

লেখকস্বাস্থ্য নিয়ে সাংবাদিকতা করেছেন এক দশক 

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.