1. abusufian7389@gmail.com : .com : sk .com
  2. ashfakur85@gmail.com : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. b.c.s.bipro@gmail.com : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. zihad0292@gmail.com : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. ahmedmdmahfuz@gmail.com : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. nazimahmed2042@gmail.com : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. shahadotchadni@gmail.com : Md Sh : Md Sh
  8. ashfakur86@gmail.com : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. shuddhobarta24@gmail.com : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. surveyor.rasid@gmail.com : Abdur Rasid : Abdur Rasid
ভয়ংকর ফাঁদে সুন্দরী মেয়েরা        
সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ১০:১৮ পূর্বাহ্ন

ভয়ংকর ফাঁদে সুন্দরী মেয়েরা

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৮ মে, ২০১৮

ডেস্ক নিউজ:

 রাজধানীর উত্তর যাত্রাবাড়ীর মেয়ে কান্তা মনি (২৩)। প্রেমের অভিনয় করে যুবক ইয়াছিন হোসেন কিরণকে বিয়ে করেন। সূত্রাপুরের কুলুটোলা কাজী অফিসে পাঁচ লাখ টাকায় বিয়ের কাবিন হয় ২০১২ সালের ১ অক্টোবর। কিরণের সঙ্গে বিয়ের সময় কান্তা নিজেকে কুমারী দাবি করেন। বিয়ের কয়েক দিন পর আসল রূপে ফেরেন কান্তা। মদ্যপ অবস্থায় বাসায় ফিরতে শুরু করেন।

এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে মনোমালিন্যের একপর্যায়ে কান্তা কাবিনের পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা আদায় করতে না পেরে কিরণ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। একপর্যায়ে কিরণ জানতে পারেন এর আগেও কান্তার সঙ্গে নারায়ণগঞ্জের সুজন ভূঁইয়ার বিয়ে হয়। ওই বিয়েতে কাবিন হয় এক লাখ টাকা। সেখানেও একইভাবে টাকা নিয়ে সটকে পড়েন কান্তা মনি।
নিজেকে কুমারী পরিচয়ে সরাসরি বিয়ে করা। কিছু দিন যেতে না যেতেই স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা। অতঃপর কাবিনের অর্থ নিয়ে রফাদফা। খোদ রাজধানীতে এভাবেই চলছে বিয়ে বাণিজ্য। আবার কখনো যৌন সম্পর্ক করার প্রলোভন দেখিয়ে বিত্তবানদের ব্লাকমেইল, কখনো প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায়ের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে সুন্দরী তরুণীরা। উদ্দেশ্য একটাই, প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।
এমনই এক সুন্দরী প্রতারকের বিষয়ে তদন্ত করতে গিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে। যা নিয়ে পুলিশ হতবাক। পরিকল্পিতভাবে একের পর এক ভুয়া বিয়ে করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া এক সুন্দরী নারী প্রতারক চক্রের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অহিদা বেগম কবিতা নামের এই নারী গড়ে তুলেছে বিশাল এক প্রতারক চক্র।
চক্রে ভুয়া শ্বশুর-শাশুড়ি, শ্যালক, শ্যালিকা, আত্মীয়স্বজন, খালা-খালু ও বিয়ে পড়ানো কাজী থেকে শুরু করে সব ধরনের আত্মীয়স্বজন রয়েছে। বিয়ে করার পর কারও বোঝার উপায় নেই, তার স্ত্রীর পক্ষের সব আত্মীয়স্বজনই ভুয়া। কবিতা বিয়ের পর ছয় থেকে সাত মাস পর্যন্ত সংসার করে। ওই সময়ের মধ্যেই টার্গেটকৃত ব্যক্তির মন জয় করে নগদ টাকা, দামি দামি আসবাবপত্র, স্বর্ণালঙ্কার, জমি, ফ্ল্যাট হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।

চক্রটির হাতে সাতজনের প্রতারিত হওয়ার তথ্য মিলেছে। যদিও প্রকৃতপক্ষে কতজন প্রতারিত হয়েছেন তার সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য মেলেনি। পাঁচ বছরে চক্রটি হাতিয়ে নিয়েছে অন্তত পাঁচ কোটি টাকার অর্থ সম্পদ। চক্রটির টার্গেট চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষ। একটি প্রতারণার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের ঢাকা মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, অনেক প্রতারণার মামলা তারা তদন্ত করেছেন, কিন্তু এ ধরনের অভিনব প্রতারণার ঘটনা সত্যিই অবাক করার মতো। এমন অভিনব প্রতারণার তথ্য পাওয়ার পর প্রতারণার মামলা আরও গভীরভাবে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে জানা গেছে, অহিদা বেগম কবিতা (৩২) নামের ওই নারী সুন্দরী মূলত প্রতারক। তার পিতা মৃত সাবদার আলী। মায়ের নাম জাহেদা বেগম। বাড়ি কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানাধীন আমড়াতলী গ্রামে। ভাগ্য ফেরানোর সন্ধানে ঢাকায় আসে। ভাগ্যের পরিবর্তনও করেছে। তবে অসৎ পথে। পিবিআই সূত্র জানায়, কবিতা ঢাকায় বিশাল একটি চক্র গড়ে তুলেছে।
সেই চক্রে রয়েছে কবিতার কথিত পিতা-মাতা, ভাই-বোন, খালা-খালুসহ একজন মানুষের যত ধরনের আত্মীয় থাকতে পারে, তা সবই রয়েছে। তবে সবাই ভুয়া। তারা নিজস্ব লোকজনের মাধ্যমে বিয়ের পর সন্তান ও স্বামী রেখে স্ত্রী চলে গেছেন বা স্ত্রীর ডিভোর্স হয়ে গেছে, এমন চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। তারপর সেই পুরুষকে বিয়ে করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে প্রথমে ওই পুরুষের পাশের বাসায় ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে।
তারপর আস্তে আস্তে সম্পর্ক করে বিয়ের পর প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা। এমন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কবিতা মুগদার বাসিন্দা মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ওরফে লিটনকে (৬৪) টার্গেট করে। লিটনের আয়শা (২০), আছিয়া (১৮) ও মাহবুবা (১৩) নামে তিনটি কন্যাসন্তান আছে। ২০০৮ সালে লিটনের সঙ্গে স্ত্রীর বনিবনা না হওয়ায় তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়।

লিটনকে টার্গেট করে প্রতারক চক্রের সদস্য বেলায়েত হোসেন কাজল ওরফে মোহাম্মদ কাজল ওরফে মো. কাজল মিঝি (৪৫) ও তার কথিত স্ত্রী শিলা বেগম ওরফে ফাহিমা বেগম (৩৩) লিটনের পাশাপাশি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করে। চক্রেরই এই দম্পতি সদস্যের বাড়ি ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন থানাধীন বড় মানিয়া গ্রামে। তারা লিটনের ওপর নজর রাখতে থাকে। তার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা অব্যাহত রাখে।

এদিকে মূল প্রতারক কবিতাও লিটনের বাসার পাশে ১/২১ নম্বর দক্ষিণ মুগদা কমিউনিটি সেন্টারের হুমায়ুন নামে এক ব্যক্তির বাসা ভাড়া নিয়ে কথিত স্বামী নিয়ে বসবাস করতে থাকে। কবিতাও মাঝেমধ্যে লিটনের সঙ্গে অনেকটা নাটকীয়তা করে পাশাপাশি বসবাসের সুবাদে যাতে মুখ চেনা থাকে এমন ভাব করে। কবিতা পরিকল্পিত কাকতালীয়ভাবে লিটনের সামনে পড়ে যায় বলে লিটনকে বুঝানোর চেষ্টা করে।

এতে দুজনের মধ্যে পাশাপাশি বসবাসের সুবাদে সামান্য চেনা পরিচয় ঘটে। এর কিছু দিন পরই কবিতার চলতি পথে লিটনের সঙ্গে দেখা হয়ে গেছে, এমনটা ভাব করে। লিটনকে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করে। লিটনও মুখচেনা পরিচয়ের সূত্র ধরে কবিতাকে কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করেন। কবিতা কষ্ট ভরা মন নিয়ে বলেন, আর কেমন থাকি ভাই! ভালো নেই। কারণ জানতে চাইতেই কবিতা জানায়, তার স্বামী তাকে তালাক দিয়েছে। সে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
লিটনের সঙ্গে মাঝেমধ্যে প্রয়োজন হলে দেখা করবেন, এমন কথার ফাঁকে তার মোবাইল নম্বর চেয়ে নেয়। সেই সঙ্গে নিজের মোবাইল নম্বরও দেয়। কয়েক দিন দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। এমন পরিস্থিতিতে প্রতারক চক্রের সদস্য শিলা বেগম লিটনের সঙ্গে দেখা করেন। শিলা লিটনের সঙ্গে আলাপ প্রসঙ্গে জানায়, কবিতা নতুন করে বিয়ে করতে চায়। সে ক্ষেত্রে লিটনকে তার ভালো লেগেছে বলে জানায়। লিটন রাজি থাকলে কবিতা তাকে বিয়ে করতে রাজি আছে। পরবর্তীতে যথারীতি বিয়ে হয়ে যায়। কবিতা লিটনের সংসার করতে থাকে।

মেয়েদের খুবই আদর যত্ন করতে থাকে। এতে লিটন খুবই সন্তুষ্ট হন কবিতার ওপর। কবিতা খুশি করে লিটনের কাছ থেকে বাড়ির জন্য দামি ফ্রিজ, টেলিভিশন, আসবাবপত্র, ভাইকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা ছাড়াও নানা উছিলায় টাকা হাতিয়ে নিতে থাকে। এভাবে ছয় মাস টাকা হাতিয়ে নেয়। এরপর লিটন সন্দেহ করতে থাকলে কবিতা আর তার সঙ্গে সংসার করবে না বলে জানায়।

সর্বশেষ কবিতা স্বামীর কাছ থেকে ঈদের বাজার করার কথা বলে নগদ প্রায় সোয়া লাখ টাকা নেয়। সর্বশেষ লিটন তার অসুস্থ মাকে দেখতে গ্রামের বাড়িতে গেলে কবিতা তার চক্রের সদস্যদের নিয়ে বাড়িতে থাকা সব স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। সব মিলিয়ে কবিতা শুধু নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেয় প্রায় ১৬ লাখ টাকার।
লিটন গ্রাম থেকে বাড়িতে এসে দেখে ঘরে কোনো টাকা-পয়সা ও স্বর্ণালঙ্কার নেই। ঘরে স্ত্রীও নেই। এরপর স্ত্রীর দেওয়া ঠিকানা মোতাবেক খোঁজ করতে গিয়ে তার চক্ষু চড়কগাছ। সব ঠিকানা ভুয়া। এমনকি এতদিন কবিতার পিতামাতাসহ যত আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে বেড়াতে গেছেন, তাদের কারও কোনো খোঁজখবর নেই। কারও কোনো হদিস নেই। এমনকি বিয়ে করানো কাজী অফিসে গিয়ে দেখেন, সে নামে কোনো কাজীই নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট সহকারী অধ্যাপক এবং সমাজ ও অপরাধ বিশ্লেষক তৌহিদুল হক বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং পারিবারিক অনুশাসন না থাকায় উচ্চাভিলাষী কিছু নারী প্রতারণায় নেমেছে। তবে এ ধরনের প্রতারণা করা একার পক্ষে সম্ভব নয়। এর পেছনে রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। ওইসব তরুণীর অবৈধ আয়ের ভাগ পায় সবাই। এটি প্রশাসনের অজানা থাকার কথা নয়। এ ধরনের অপরাধ বিষবাষ্পের মতো ছড়িয়ে পড়ার আগেই রোধ করা না গেলে দেশ এবং নতুন প্রজন্মের জন্য হতে পারে অশনি সংকেত।

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.