Main Menu

বর্ধিত ভাড়াতেও সব সিটে যাত্রী বহন

মহামারি করোনার মধ্যেও কোনও নিয়ম মানছে না রাজধানী ঢাকার গণপরিবহনগুলো। দূরপাল্লার বেশির বাসে অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যাত্রী বহন করার নির্দেশনা মানা হলেও রাজধানীতে চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন। বর্ধিত ভাড়া নেওয়া হলেও প্রায় সব আসনেই যাত্রী বসানোর পাশাপাশি দাঁড়িয়েও পরিবহন করার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে প্রায়শই। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ যাত্রীরা। কিছু চালক ও হেলপার এমন কাজ করছেন- স্বীকার করে তাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে বলেও দাবি করছেন পরিবহন মালিকরা।

নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ পরিবহনেই সব আসনে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। আবার সরকার নির্ধারিত ৬০ শতাংশ ভাড়াও বেশি আদায় করা হচ্ছে। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি বলতে কোনও নিয়মই মানা হচ্ছে না। এ নিয়ে হেলপারের সঙ্গে যাত্রীর বাকবিতণ্ডা নিত্য ঘটনায় পরিণত হয়েছে। এ অবস্থায় বর্ধিত ভাড়া আদায় প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

সকালে নগরীর পল্টন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, অধিকাংশ পরিবহনেই সব আসনে যাত্রী রয়েছে। বেসরকারি কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিসির গণপরিবহনকে এই নিয়ম বেশি ভাঙতে দেখা গেছে। অবশ্য এ জন্য যাত্রীর ঘাড়েই দোষ চাপালেন বিআরটিসির এক বাসের হেল্পার। বেশি যাত্রী নিচ্ছেন কেন?- জিজ্ঞাসা করতেই তার পাল্টা প্রশ্ন, মানুষ যদি তার নিজের স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন না হয় আমরা কীভাবে করবো? আমরা তো তাদের জোর করে তুলছি না। তারা কেন অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে বাসে ওঠে, মানুষ বাসে না উঠলেই তো হয়।

অবশ্য গাড়ির হেলপারের সঙ্গে কথা বলার সময়ও কয়েকজনকে বাসে উঠতে দেখা গেল। বাসের আসন প্রায় পূর্ণ থাকলেও হেলপার যাত্রী উঠতে বাধা না দিয়ে বরং সহযোগিতাই করছেন। বিষয়টি দেখিয়ে দিতেই বাস ছেড়ে দিলো। জবাব পাওয়ার আগেই পরের গন্তব্যের দিকে বাড়লো বাস, সুযোগ বুঝে মুখ ফেরালেন হেলপারও। তবে বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখা গেল অনেকেই পর্যাপ্ত গণপরিবহন না পেয়ে অনেকেই জোর করেও উঠছেন বাসে।

সকালে কুড়িল এলাকায় দেখা গেছে, জোয়ার সাহারা-সদরঘাট রুটে চলাচলরত বিআরটিসির দ্বিতল বিশিষ্টবাসগুলোর প্রতিটি আসনে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। রিয়াজুল ইসলাম নামে বেসরকারি একটি কোম্পানিতে কর্মরত এক যুবক বলেন, সকাল সাড়ে ৮টা থেকে কুড়িল এলাকায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। অধিকাংশ বাসই সব আসনে যাত্রী পরিবহন করেছে। ইচ্ছা করছে না স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে এভাবে বাসের যাত্রী হই। কিন্তু উপায় খুঁজে পাচ্ছি না।

শনির আখড়ার বাসিন্দা আরেফিন শাকিল বলেন, লকডাউনে গণপরিবহন যখন চালুর অনুমতি দেওয়ার হয় সেই শুরুর দিকে স্বাস্থ্যবিধি কিছুটা পালন হয়েছিলো। কিন্তু কয়েক দিন যেতে না যেতেই সব আসনেই যাত্রী তোলা হচ্ছে। কিন্তু ভাড়া কম নিচ্ছে না।

জানতে চাইলে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে আমরা আটটি মোবাইল টিম গঠন করেছি। বিআরটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের সমন্বয়ে এই টিমগুলো গঠন করা হয়েছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব পালন করছে। এমন অপরাধের কারণে কয়েকটি বাসের ট্রিপ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঢাকাসহ সারাদেশে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গাড়ি চলাচল নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়ভাবে নয় সদস্য বিশিষ্ট আরেকটি মোবাইল টিম গঠন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাতে গণপরিবহন পরিচালনা করা হয় আমরা সেই দিকে বিশেষ নজর রাখছি।

এদিকে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে ‘যতো সিট ততো যাত্রী’ ভিত্তিতে যাত্রী পরিবহনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, গণপরিবহন মালিকদের নৈরাজ্য আজকের নয়। আমরা অনেক আগ থেকেই বলে আসছি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করে বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে যতো আসন ততো যাত্রী পদ্ধতিতে গণপরিবহন পরিচালনার জন্য।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.