Main Menu

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ‘ক্যাশ সার্ভার’ নিয়ন্ত্রণ

জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ‘ক্যাশ সার্ভার’ সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও মনিটরিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। সব আইএসপি তাদের নেটওয়ার্কে ক্যাশ সার্ভার রাখতে পারবে না। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি এরইমধ্যে নির্দিষ্ট করে দিয়েছে কারা ক্যাশ সার্ভার রাখতে পারবে। তাতে করে আইএসপিগুলোর মধ্যে শুধু নেশনওয়াইড আইএসপি ছাড়া অন্যরা (বিভাগীয়, জেলা ও থানা পর্যায়) ক্যাশ সার্ভার রাখতে পারবে না। এ বিষয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি ৬ মাসের সময় দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বিটিআরসি, যার মেয়াদ আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত।

বিটিআরসির ওই নির্দেশনায় মনোক্ষুণ্ন হয়েছে অন্য আইএসপিগুলো (ইন্টারনেট সেবাদানকারী)। তারাও ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের সুযোগ চায়। এ উপলক্ষে আইএসপিএবি (ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন) নেতারা (সংগঠনের ৫ নেতা) বুধবার (১৬ জুন) বিকালে বিটিআরসির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে বিটিআরসির সামনে প্রেজেন্টেশন দেওয়া হয় আইএসপিএবির পক্ষ থেকে। এতে সব আইএসপিকে সমান সুযোগ (ক্যাশ সার্ভার রাখার) দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। এখন যেভাবে আছে সেভাবেই সবার জন্য সমান সুযোগ রাখার কথাও বলেন তারা।

বৈঠকের একটি সূত্র জানায়, আইএসপিএবি নেতাদেরকে বিটিআরসি জানিয়েছে, আইএসপিএবি আগে নির্দেশনা (ক্যাশ সার্ভার অপসারণ) বাস্তবায়ন করবে। সমস্যা হলে তখন দেখা যাবে। বৈঠকে উপস্থিত বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ আইএসপিএবি নেতাদের বলেছে, আপনারা সময় বাড়ানোর জন্য আবেদন করতে পারেন। সেটা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইএসপিএবি’র সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, ‘বিটিআরসি দেশের স্বার্থে যেটা করতে যাচ্ছে, আমরা সেই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানাই। জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে ঠিক যতটুকু করা সম্ভব, তা করাকে আমরা স্বাগত জানাই।’

দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটর, আইআইজি অপারেটর (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে), এনআইএক্স (ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জ) ও নেশনওয়াইড আইএসপিগুলোকে (১২৯টি) ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের নির্দেশনা দেয় বিটিআরসি। টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্কে শৃঙ্খলা আনা, জাতীয় নিরাপত্তা, রাষ্ট্রের সুরক্ষা, গ্রাহক সংখ্যা, মনিটরিং ব্যবস্থা ইত্যাদি বিবেচনায় নিয়ে বিটিআরসি এই নির্দেশনা দিয়েছে।

নির্দেশনায় বলা হয়, কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক নেশনওয়াইড আইএসপি ছাড়া অন্যসব আইএসপি অপারেটরকে ইতোপূর্বে স্থাপিত সব ধরনের ক্যাশ সার্ভার আগামী ৬ মাসের মধ্যে অপসারণ করতে হবে। গত ১৫ ডিসেম্বর জারি করা আইএসপি লাইসেন্সিং গাইডলাইন অনুযায়ী, নেশনওয়াইড আইএসপি ছাড়া রূপান্তরিত অন্য সব আইএসপি লাইসেন্সের ক্ষেত্রে পরিবর্তিত নির্দেশনাটি প্রযোজ্য হবে।

ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়, আইআইজি ও এনআইএক্স অপারেটরের পাশাপাশি শুধু মোবাইল অপারেটর ও নেশনওয়াইড আইএসপি অপারেটর কমিশনের অনুমোদনক্রমে ক্যাশ সার্ভার স্থাপন করতে পারবে। নেটফ্লিক্স ক্যাশ সার্ভার শুধু এনআইএক্স (নিক্স) অপারেটর প্রান্তে স্থাপনের অনুমতি বহাল থাকবে। এ ছাড়া ক্যাশ সার্ভার স্থাপন, রক্ষণাবেক্ষণ, প্রতিস্থাপন, আপগ্রেডেশন ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিটিআরসি থেকে আগে অনুমোদন নিতে হবে।

উল্লেখ্য, গুগল, ইউটিউব, ফেসবুক ইয়াহু গ্রাহকদের সেবা দিতে বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন অঞ্চলে ডাটার জন্য ক্যাশ সার্ভার বসায়। এরফলে গ্রাহককে সহজে এবং দ্রুত সেবা দেওয়া সহজ হয়। ধরা যাক, বাংলাদেশের কোনও এলাকার গ্রাহকরা ইউটিউব বা গুগলে কোনও কনটেন্ট সার্চ করলে তা তাদের (ইউটিউব ও ফেসবুক) মূল সার্ভারে কানেক্টেড হয়। এরপর ওই ডাটা লোকাল ক্যাশ সার্ভারে মজুত থাকে। পরবর্তী সময়ে কেউ একই কনটেন্ট সার্চ করলে তিনি লোকাল সার্ভার থেকেই ওই তথ্য পাবেন খুব দ্রুত। এজন্য ব্যবহারকারীকে পুরো নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে হয় না। এটাই হলো ক্যাশ সার্ভার।

ক্যাশ সার্ভার স্থাপনে নতুন নিয়ম চালু হলে ব্রডব্যান্ড গ্রাহকের খরচ কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে কথা চালাচালি হচ্ছে। অপরদিকে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কোনও সমস্যা হবে না। তাদের খরচও বাড়বে না। কারণ, দেশের মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকেও ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের অনুমতি দেওয়া আছে। আইএসপি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন নিয়ম কার্যকর হলে ব্যান্ডউইথ পরিবহন খরচ বাড়বে। এখন বিভিন্ন আইএসপির অধীনে ক্যাশ সার্ভার থাকায় গুগল, ইউটিউব, ফেসবুকে ইন্টারন্যাশনাল ব্যান্ডউইথ বেশি ব্যবহার হয় না। ব্যবহার বেশি হয় স্থানীয় ব্যান্ডউইথ। নতুন নিয়মে ঢাকার বাইরের (ধরা যাক পঞ্চগড়ের কোনও আইএসপি) কোনও আইএসপির ক্যাশ সার্ভার বন্ধ হয়ে গেলেও কোনও সমস্যা হবে না। সেই আইএসপি তো কোনও না কোনও নেশনওয়াইড আইএসপির সঙ্গে যুক্ত থাকবে। তখন পঞ্চগড়ের ওই আইএসপির গ্রাহকরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নেশনওয়াইড আইএসপির ক্যাশ সার্ভার ব্যবহার করতে পারবেন। এজন্য নেশওয়াইড আইসপি কোনও চার্জ নিতে পারবে না। চার্জ নিলে তা হবে অবৈধ।

সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, ক্যাশ সার্ভারের জন্য নতুন নিয়ম চালু হলে সরকার ঘোষিত (৬ জুন) ‘এক দেশ এক রেট’-এ ইন্টারনেট সেবা কার্যকর করা কঠিন হয়ে যাবে। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ৫ এমবিপিএস (মেগাবিটস পার সেকেন্ড) ৫০০, ১০ এমবিপিএস ৮০০ এবং ২০ এমবিপিএস এক হাজার ২০০ টাকায় পাওয়া যাবে।

আইএসপি খাত সংশ্লিষ্টদের একাংশ মনে করেন, বেশিরভাগ সিডিএন (কনটেন্ট ডেলিভারি নেটওয়ার্ক) ঢাকাভিত্তিক। ঢাকার বাইরেও আছে তবে কম। এখন ঢাকার বাইরের ক্যাশ সার্ভার বন্ধ হয়ে গেলে সেবা পেতে সমস্যা হবে। আবার অন্যরা বলছেন, বিটিআরসি আইআইজিগুলোকে ঢাকার বাইরে ক্যাশ সার্ভার স্থাপনের নির্দেশনা দিয়েছে। ফলে ঢাকার বাইরে সার্ভিস পেতে গ্রাহকদের কোনও সমস্যা হবে না।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.