Main Menu

রহস্যঘেরা নাজিমের মৃত্যু, মুখ খুলছেন না শাহনিয়া

সিলেট নগরীর কাজীটুলাস্থ উচাঁসড়ক এলাকার ৫ তলা ভবন থেকে পড়ে রাবিদ আহমদ নাজিম (২৭) নামক যুবকের মৃত্যুর রহস্য উন্মোচন করতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। নাজিমের স্বাভাবিক না অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এ নিয়ে নানা প্রশ্নের দেখা দিয়েছে। তবে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে মাদক সংক্রান্ত বিরোধের জেরে নাজিমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হতে পারে। এজন্য পুলিশ শাহনিয়া নামের এক নারীকে একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদ করলেও তিনি মুখ খুলছেন না। সেই সাথে শাহনিয়ার দুই ভাই আকবর ও ইয়ামিন মুখ খুলছেন না পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে। তাদের কাছ থেকে কোন তথ্য না পাওয়ায় পুলিশ আজ মঙ্গলবার (৮ জুন) দুপুরে তাদেরকে আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে। আদালত রিমান্ড মঞ্জুর করলে আজ মঙ্গলবার থেকে তাদের রিমান্ডে নেয়া হবে।

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস.এম আবু ফরহাদ জানান, গ্রেফতারকৃতরা পুলিশের কাছে কোন তথ্য দিতে চাচ্ছে না। তারা কোনভাবেই মুখ খুলতে নারাজ। এজন্য তাদেরকে রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করা হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই সাঈদ আহমদ জানান, নাজিমের মৃত্যুর ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোন রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। তবে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব নানা বিষয় মাথায় রেখে তদন্ত করে যাচ্ছে। মামলায় গ্রেফতারকৃত শাহনিয়া, তার ভাই আকবর ও ইয়ামিন এসব বিষয়ে কোন তথ্য দিচ্ছে না। এজন্য পুলিশ তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে ৭দিনের রিমান্ডের আবেদন করবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করবে পুলিশ।

পুলিশ সূত্র জানায়, নাজিমের মৃত্যুকে ঘিরে জড়িয়ে পড়েছেন শাহনিয়া নামের বিবাহিত এক নারী। যার সঙ্গে নাজিম এক ফ্ল্যাটে খালাতো ভাই-বোন পরিচয়ে থাকতেন। যদিও নাজিমের বাসা ভাড়া নিয়ে থাকার বিষয়টি জানতেন না তার পরিবার। এদিকে পুলিশ সোমবার বিকেলে নাজিমের কক্ষ থেকে ইয়াবা ও বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবনের সরঞ্জামাদি জব্দ করে। নাজিম উদ্দিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এমন অভিযোগে সোমবার (৬ জুন) রাতে কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তার পিতা আব্দুন নূর। মামলায় নিজামের সঙ্গে এক ফ্ল্যাটে থাকা নারী শাহনিয়া বেগম (৩০), তার ভাই আকবর (২৬) ও ইয়ামিনকে (২৪) আসামী করা হয়েছে।

ঘটনার পর পরই পুলিশ তাদেরকে আটক করে মামলায় গ্রেফতার দেখায়। তারা সিলেটের বালাগঞ্জ থানার গহরপুর গ্রামের আলাউদ্দিন আনোয়ারের সন্তান। সোমবার রাতে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একাধিকবার শাহনিয়া ও তার ভাইদেরকে পৃথক পৃথক জিজ্ঞাসাবাদ করেন। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা প্রথমে নাজিমকে চেনেন না দাবি করলেও পুলিশ কিছু তথ্য প্রমাণ দেখালে তারা নড়েচড়ে বসেন। তবে নাজিমের মৃত্যুর ব্যাপারে তারা কিছুই জানেন না বলে পুলিশকে জানান। তাদের কথাবার্তায় গড়মিল থাকায় পুলিশের কাছে বিষয়টি রহস্যজনক মনে হওয়ায় পুলিশ রিমান্ডে নেয়ার আবেদনের সিদ্ধান্ত নেয়।

জানা গেছে, সোমবার (৭ জুন) সকালে নগরীর কাজিটুলার ঊঁচাসড়কস্থ চৌধুরী ভিলা নামক ৫ তলা বাসার নিচ থেকে পড়ে রাবিদ আহমদ নাজিম গুরুতর আহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুপুরে সাড়ে ১২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। নাজিম সিলেটের শাহপরাণ থানার পিরেরবাজার এলাকার আটগাও কেউয়া গ্রামের নুর মিয়ার ছেলে। নাজিম ঊঁচাসড়কস্থ চৌধুরী ভিলা নামক ৫ তলা বাসার পঞ্চম তলার বি/৫ ফ্ল্যাটটি খালাতো ভাই-বোন পরিচয়ে শাহনিয়া বেগম ও তার ভাই আকবরের সঙ্গে বাসা ভাড়া নেন। সেখানে তিনি প্রায়ই রাত কাঁটাতেন। নাজিম যাদের সঙ্গে ভাড়া থাকতেন সেই ছেলে ও মেয়ে তার খালাতো ভাই-বোনও নন বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এতে নাজিমের মৃত্যু নিয়ে রহস্য আরও ঘণীভূত হয়েছে। শাহনিয়া বেগম নামের ওই নারী মাদকদ্রব্য কারবারের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাজিমের চাচা আলাউদ্দিন বলেন, এই বাসায় আমার ভাতিজা ভাড়া থাকতো সেটি জানতাম না। নাজিম বিবাহিত, তার তিনটি সন্তানও রয়েছে। বিবাহিত জীবনে সে অসুখি ছিলো না। কী কারণে আমার ভাতিজাকে মৃত্যুবরণ করতে হলো তা খতিয়ে দেখতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.