শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর: স্কুলছাত্রী তাসফিয়াকে খুন করা হয়েছে নাকি রক্তে বিষক্রিয়ার মাধ্যমে মৃত্যু হয়েছে। এসব বিষয় জানতে ঢাকার মহাখালী ল্যাবরেটরিতে তাসফিয়ার ভিসেরা রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নগর পুলিশের কর্ণফুলী জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, এ রিপোর্টটা পেলে হত্যার মূল কারণ জানা যাবে। এছাড়াও মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে আমাদের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ক্লু উদঘাটনে একাধিক ইস্যু নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগুচ্ছি। নগরের আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে গ্রেফতার করা ছাড়া মামলার কোন অগ্রগতি নেই। তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিনুল হক বলেন, আমি দ্ব্যার্থহীনভাবে বলতে পারি- পুলিশ চাইলে দু-একদিনের মধ্যেই তাসপিয়া হত্যা মামলার সকল আসামিকে গ্রেফতার করতে পারে। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পুলিশ পারবে না কেন! এরাতো চট্টগ্রাম বা দেশের কোনো না কোনো স্থানে আছে। তাদের গ্রেফতারে গড়িমসি কেন? তাসপিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিনের অভিযোগ, তাসপিয়া হত্যার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলাটি ধামাচাপা দিতে একটি মহল ব্যস্ততম সময় কাটাচ্ছে। তাসপিয়া হত্যার প্রধান আসামি আদনানকে ছাড়া আর কোনো আসামি গ্রেফতার হচ্চে না। তিনি বলেন, পুলিশ তদন্তের জন্য যখন যাই চাচ্ছে, সবই দিচ্ছি। মামলার তদন্তে যেমন অগ্রগতি নেই, তেমনি আসামি গ্রেফতারে অনীহা ভাব দেখা যাচ্ছে। তাসপিয়াকে বাসা থেকে বের করে নেয়ার পর থেকে ঘটনা বর্ণনা দিয়ে মোহাম্মদ আমিন বলেন, তাসপিয়াকে খুঁজে না পেয়ে আদনান মির্জাকে বাসায় ডেকে আনা হয়েছিল। আদনান একপর্যায়ে ফোন করে ডেকে আনে সোহেল, শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম ও ফিরোজকে। তিনি বলেন, তারা প্রথমে আদনানকে ছেড়ে দেয়ার জন্য সময় বেঁধে দেয়। পরে আধাঘণ্টার মধ্যে তাসপিয়াকে বাসায় পাঠানোর আশ্বাস দিয়ে আদনানকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। মোহাম্মদ আমিন বলেন, সোহেল ও আদনান এক সঙ্গেই থাকতো। ঘটনার দিন সোহেলের কাছ থেকেই জানতে পারি তাসপিয়া আদনানের সঙ্গে রেস্টুরেন্টে। ওই দিন তাসপিয়ার আম্মু সোহেলের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে আদনানকে কল করে বলে, তাসপিয়াকে বাসায় পাঠিয়ে দিতে। তিনি বলেন, সোহেলকে গ্রেফতার করতে পারলে হত্যার প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে তাসপিয়াকে হত্যায় আদনানই দায়ী বলে দাবি করেন হতভাগ্য এই বাবা। উল্লেখ্য, স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনএর আগে বুধবার (০২ মে) সকালে স্থানীয়দের খবরে নগরের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতের ১৮ নম্বর ব্রিজঘাটের পাথরের ওপর থেকে সা্নসাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিনের (১৬) মরদেহ উদ্ধার করে পতেঙ্গা থানা পুলিশ। পরে একই দিন সন্ধ্যায় নগরের খুলশী থানার জালালাবাদ হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে আটক করে। আটক আদনান মির্জা বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র এবং ব্যবসায়ী ইস্কান্দার মির্জার ছেলে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (০৩ মে) তাসফিয়ার বাবা বাদী হয়ে আটক আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে পতেঙ্গা থানায় ৬ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান