শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোর: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর-বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভার্নালিজম চলবে না। ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করবে, এটা বরদাস্ত করা হবে না। শিক্ষকদের দ্বন্দ্বের ফল ছাত্ররা ভোগ করবে, সেটা দেখতে চাই না।
ছাত্রলীগের ২৯তম সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। এর আগে তিনি বিকাল ৪টায় সম্মেলনস্থল ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পৌঁছে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ ছাত্রলীগের বর্তমান ও সাবেক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতি সতর্কবার্তা উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভার্নারিজম চলবে না। ছাত্ররা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করবে, এটা আমি বরদাস্ত করবো না। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। কিন্তু সমস্ত খরচ সরকার দেয়। প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে আমি প্রচুর টাকাপয়সা খরচ করেছি। নতুন নতুন হোস্টেল নির্মাণ, সাবজেক্ট চালু, সবকিছু করে দেওয়া হয়েছে। সেখানে যদি কেউ ভাঙচুর করে, ভার্নারিজম করে, আমার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি নির্দেশ রয়েছে, সে যে দলের হোক আর যেই হোক তাকে ছাড়া হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু ছাত্র নয়, শিক্ষকদেরও বলবো। শিক্ষকেরা শিক্ষকদের বিরুদ্ধে লাগবেন, তারা দ্বন্দ্ব করবেন আর তার ফল ভোগে করবে ছাত্ররা, সেটা আমি চাই না। শিক্ষকরা যদি এভাবে নিজেদের মধ্যে এগুলো করেন তাহলে ছাত্ররা শিখবেটা কী? কারো কিছু বলার থাকলে বলবেন। আমরা এটা দেখবো। আমি দিনে বোধ হয় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা ঘুমাই, বাকি সময়টা তো দেশের কাজেই ব্যয় করি। কেউ তো বলতে পারবেন না, সমস্যা নিয়ে গেলে আমরা তার সমাধান করিনি। আমরা সমাধান করি এবং করতে জানি। কিন্তু কোন কিছু নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করা কখনও বরদাস্ত করবো না। ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এর অপব্যবহার করার জন্য নয়।’
ওয়ান-ইলেভেনের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপির অপকর্মের কারণেই ইমার্জেন্সি শুরু হয়। তারা ক্ষমতায় এসে নির্বাচনের নামে টালবাহানা শুরু করলে আমি তার প্রতিবাদ জানাই। এ কারণে আমাকে সবার আগে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ওই সময় ছাত্রলীগ প্রতিদিনই জেলখানায় আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে বাস করতে পারে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে মাত্র সাড়ে তিন বছরে স্বল্পোন্নত দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। আমরা ক্ষমতায় এসে দেশকে উন্নয়নশীল দেশে নিয়ে গেছি। ১৬টি দেশকে আমরা পেছনে ফেলে এই অর্জন করেছি। এই উন্নয়ন ধরে রাখতে হবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা, আমি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের। এই পরিচয় দিতে যেন মানুষ গর্ববোধ করেন। আমরা এখন সেই পরিবেশটাই সৃষ্টি করেছি।’
বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে এরা ধ্বংস করতে চায়। স্বাধীনতার চেতনা নষ্ট করতে চায়। তারা ২১ বছর সেই চেষ্টা করেছিল, কিন্তু পারেনি। আল্লাহর রহমতে পারবেও না।’
নিজেকে ভবিষ্যত নেতা হিসেবে গড়ে তুলতে হলে এখন থেকেই মানুষের সমস্যা দেখতে হবে। আমরা বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নিয়েছি। সেগুলোতে কোনও দুর্নীতি হচ্ছে কিনা, কাজের মান বজায় রয়েছে কিনা, তা দেখতে হবে। জনগণের প্রতি আস্থা বিশ্বাস অর্জন করেই নেতৃত্ব পেতে হয়।’
![](https://www.shuddhobarta24.com/wp-content/uploads/2020/03/DSC_0563-scaled.jpg)
বার্তা বিভাগ প্রধান