1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
হত্যাশ কৃষক-হাওরে অর্ধেক দামে ধান বিক্রি
       
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৯ অপরাহ্ন

হত্যাশ কৃষক-হাওরে অর্ধেক দামে ধান বিক্রি

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৮ মে, ২০১৮

শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোরডটকম ডেস্ক : হাওরে ধানের ভালো ফলনের পরও কৃষকের মুখে হাসি নেই। এরই মধ্যে হাওরের অধিকাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। ধান কেটে গোলায় তোলার পরও বাজারে ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না তারা। কোনো কোনো স্থানে অর্ধেক দামে ধান বিক্রি হওয়ায় নানা ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের কৃষক, বর্গা ও প্রান্তিক চাষি। এ ছাড়া সরকারিভাবে ধান কেনা শুরু হয়নি। তার আগেই ফড়িয়াদের মাধ্যমে ধানের বাজার মিলারদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার অভিযোগ এসেছে।

রোববার সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপাড়ের খলায় বসেই ধান বিক্রি করছিলেন জগন্নাথপুর গ্রামের কৃষক এখলাছ মিয়া। ৬০০ টাকা মণে শুকনা ৫০ মণ ধান কেনার জন্য মিলারের খেওয়াল ‘ওজনকারী’ দিলোয়ার হোসেন খলায় এসেছেন। এখলাছ মিয়া বললেন, ‘গত বছর চৈত্র মাসে ক্ষেত পানির নিচে গেছে। একমুঠা ধান পাইছি না। সারাবছর ঋণ করে খেয়েছি। টাকা যার কাছ থেকে এনেছিলাম, তার সঙ্গে কথা ছিল বৈশাখ মাসে ধান ওঠানোর পর টাকা ফেরত দেবো। এখন ধান খলায় থাকতেই ঋণ দিতে হচ্ছে। খলা থেকে কেউ ৫০০ থেকে সাড়ে ৫০০ টাকার বেশি ধান নিচ্ছে না। অনেক কষ্টে পাশের বাজার বেতগঞ্জের মিলার আক্রম আলীকে ৬০০ টাকা মণে ধান কিনতে রাজি করিয়েছি। তার লোক এসে শুকনা ধান ওজন করে নিয়ে যাচ্ছে।’

ধান ওজন করতে করতে খেওয়াল দিলোয়ার হোসেন বললেন, ৬০০ টাকায় ধান কিনলে কী হবে, তারা আজ বিকেলে বা কাল সকালেই এই ধান এক হাজার ২০০ বা এক হাজার ২৫০ টাকা মণে বিক্রি করে দেবে।

এই খলার পাশেই আরেক খলায় ধান শুকাচ্ছিলেন জগন্নাথপুর গ্রামের মিসবাহ্‌ উদ্দিন।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমার সংসার কীভাবে চলবে। কৃষকরা কীভাবে বাঁচবে। আমার ধান ৫০০ টাকায় যারা নিতে চাচ্ছে, তারাই আবার এই ধান গোডাউনে দেবে এক হাজার ৪০ টাকা মণে। অথচ আমি গোডাউনে নিয়ে গেলে বলবে ধান চিটা, কম শুকনা, ধান নিয়ে গোডাউনের সামনে ১৫ দিন বসে থাকতে হবে। এমন যন্ত্রণায় কৃষকরা গোডাউনে যান না।

কিষানি সখিনা বেগম বলেন, আমাদের দুখের শেষ নেই। খলা থেকেই পাওনাদারের ঋণ শোধ করতে কম দামে ধান বিক্রি করতে হবে। যে ধান পেয়েছি, এর দশ ভাগের এক ভাগও বাড়িতে নেওয়া হবে না।
সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় আড়ত মধ্যনগরে রোববার ধানের দাম ছিল ৭০০ থেকে ৭০৫ টাকা মণ। বৈশাখের শুরুর দিকে এই আড়তে ধানের দাম ছিল ৭২৫ টাকা। এই কয়দিনে ধানের দাম আরও কমে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় নেমে এসেছে।

মধ্যনগর ধান-চাল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জ্যোতির্ময় রায় বলেন, ট্যাক্স ছাড়া বিদেশি চাল দেশে আসায় প্রচুর চাল বাজারে রয়েছে। এ জন্য চালের দাম বাজারে কম। আমাদের ক্রেতারা হচ্ছে চাঁদপুর, মদনগঞ্জ, আশুগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ কাঠপট্টি এলাকার মিলাররা। এরা ৭১০ টাকা মণের বেশি ধান কিনছে না। এ কারণে আমরাও ধানের দাম বাড়াতে পারছি না।

চাঁদপুরের মিল মালিক নকিব চৌধুরী বলেন, বাজারে প্রচুর আমদানি করা চাল রয়েছে। আমাদের চালের চাহিদা নেই। এ জন্য আমরা ধান কিনছি না। এখন ৬৯০ থেকে ৭০০ টাকায় ধান কেনা যাচ্ছে।

সুনামগঞ্জ জেলা সিপিবির সভাপতি চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, আমরা মনে করছি, কৃষক বাঁচাতে সরকারি ক্রয়কেন্দ্র অস্থায়ী ভিত্তিতে দুই মাসের জন্য গ্রামে গ্রামে নিয়ে যেতে হবে। ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়াতে হবে।

কৃষক সংগ্রাম সমিতির কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক ধর্মপাশার কৃষক নেতা খায়রুল বাশার ঠাকুর খান বলেন, সরকার দ্রুত প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান না কিনলে মধ্যস্বত্বভোগী ফড়িয়া বা সরকারদলীয় প্রভাবশালী ধান-চাল ব্যবসায়ীর কাছে গরিব কৃষকের ধান চলে যাবে।

জেলা প্রশাসক মো. সাবিরুল ইসলাম বলেন, কোনো অজুহাতে কৃষকের ধান ফেরত যাতে না যায়, আমরা সেই বিষয়ে সচেষ্ট রয়েছি। সুনামগঞ্জ থেকে এবার ৩০ হাজার টন ধান সরকারিভাবে কেনার জন্য সুপারিশ পাঠিয়েছি আমরা।

কিশোরগঞ্জ :গত রোববার সরেজমিনে হাওরের প্রধান পাইকারি বাজার চামড়া নৌবন্দরসহ বিভিন্ন বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন ধান কেনাবেচা হচ্ছে। নতুন বোরো হাইব্রিড মোটা ধান প্রতি মণ ৫৫০ টাকা, ব্রি-২৯ ৬৩০ ও ব্রি- ২৮ ধান ৬৫০ টাকা মণে কেনা হচ্ছে। অথচ এক মণ ধান উৎপাদন করতে তাদের ৭০০ টাকা খরচ হয়েছে। একাধিক কৃষক জানান, এ অবস্থা চলতে থাকলে একসময় কৃষক ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। এ বছর ধানের দাম না থাকায় চরম হতাশায় পড়েছেন কৃষক। বর্তমান বাজারদরে উৎপাদন খরচ উঠছে না তাদের। সুদ ও লগ্নির টাকা কীভাবে পরিশোধ করবেন, এ নিয়ে ভাবনায় পড়েছেন তারা।

কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলায় বর্তমানে এক মণ ধান বিক্রির টাকায় এক কেজি মাংস কেনা যাচ্ছে না। বর্তমানে নিকলী উপজেলার সদর বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে এক কেজি খাসির মাংসের দাম ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এক মণ বোরো ধানের দাম ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা। নিকলীর আলিয়াপাড়া গ্রামের কৃষক জহিরুল ইসলাম চরম হতাশায় দুঃখ করে বলেন, এভাবে কি আর সংসার করা যায়! এক মণ ধানে এক কেজি মাংস পাওয়া যায় না। ধান বেচে কামলা খরচ আর মানুষের ঋণ দিতে দিতেই টাকা শেষ। ছাতিরচর গ্রামের আওলাদ মিয়া বলেন, অনেক দিন ধরে ছেলেমেয়েদের মুখে খাসির মাংস দিতে পারিনি। গত শুক্রবার জুমার দিন সকালে এক মণ বোরো ধান ৬৫০ টাকায় বিক্রি করে নিকলী সদর বাজারে গিয়ে দেখি, এক কেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকায়। বাধ্য হয়ে মাংস না নিয়ে খালি হাতেই বাড়িতে ফিরে আসি।
ইটনা উপজেলার বড়িবাড়ী গ্রামের কৃষক আবদুল লতিফ জানান, তার তিন একর জমিতে ২৪০ মণ ধান উৎপাদন হয়েছে। সার, কীটনাশক, সেচ ও অন্যান্য খরচ নিয়ে প্রতি মণ ধানে খরচ হয়েছে ৭০০ টাকার বেশি। বর্তমান বাজারমূল্যে ধান বিক্রি করে তার কয়েক হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

‘অষ্টগ্র্রাম উপজেলার পূর্ব অষ্টগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রঞ্জিত চক্রবর্তী জানান, এবার বাম্পার ফলন আশীর্বাদ হিসেবেই দেখছে হাওরবাসী। আবার ধানের দাম অত্যধিক কম হওয়ায় অভিশাপ নেমে এসেছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পৌঁনে সাত লাখ টন অতিক্রম করবে। তবে ন্যায্যমূল্য না পেলে সার্বিক বাম্পার ফলন আর্থিকভাবে কৃষককে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করবে। সূত্র : সমকাল

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.