Main Menu

লাদাখ বৈঠকে যুদ্ধ অবস্থার অবসানের সুর, হারানো জমি নিয়ে চুপ সেনা

লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনার শক্তি আর না বাড়ানো নিয়ে ভারত-চিন দু’দেশই একমত হয়েছে বলে আজ যৌথ ভাবে এক বিবৃতি দিয়ে জানাল দু’দেশ। গত কাল লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপারে চিনা অংশের মলডোতে দু’দেশের সেনা প্রধানদের বৈঠকের চব্বিশ ঘণ্টার মাথায় আজ রাতে জারি করা যৌথ বিবৃতির বক্তব্য, পরিস্থিতি স্থিতিশীল করার জন্য মতবিনিময় হয়েছে। যদিও ওই এলাকায় এপ্রিল মাসের আগেকার অবস্থা ফিরবে কি না, অতীতের মতো আবার নিজেদের এলাকায় ভারতীয় সেনা টহল দিতে পারবে কি না, কব্জা করা ভারতীয় এলাকা থেকে চিনা সেনা কবে সরে যাবে- সে সব নিয়ে বিবৃতিতে একটি বাক্যও খরচ করা হয়নি। পরিস্থিতি আর খারাপ যাতে না হয়, তার জন্য কী কী করা হবে, তা অবশ্য বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত কাল প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় স্থিতাবস্থা ফিরিয়ে আনতে দু’দেশ গভীর ভাবে আলোচনা করে। স্থিতাবস্থা ফেরানোর প্রশ্নে দু’দেশের রাজনৈতিক নেতারা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন, তা রূপায়ণ করতে তৃণমূল স্তরে যোগাযোগ বাড়ানো, পারস্পরিক ভুল বোঝাবুঝি এড়াতেও রাজি হয়েছে দু’পক্ষ। সীমান্তে নতুন করে সেনা মোতায়েন করা হবে না বলে সম্মত হয়েছে দু’দেশ। কোনও দেশ একক ভাবে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পরিবর্তনের চেষ্টা করবে না কিংবা সীমান্ত পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে এমন কোনও পদক্ষেপ না করার প্রশ্নে দুই শিবিরই সহমত হয়েছে।

সাউথ ব্লকের মতে, মস্কোয় হওয়া দু’দেশের বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে ঐকমত্য হয়েছিল, তার প্রতিফলন দেখা গিয়েছে গত কালের বৈঠকে। সেনা পর্যায়ে পাঁচটি বৈঠক করার পরে নয়াদিল্লির কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, কেবল মাত্র চিনা সেনার আশ্বাসে লাদাখ সঙ্কট মিটবে না। শীর্ষ স্তরের রাজনৈতিক নির্দেশিকাকে চিনা সেনার সামনে তুলে ধরাটাও ততধিক জরুরি। সে কারণেই দু’দলের সেনার আলোচনায় গত কাল তাঁর প্রতিনিধিকে পাঠান বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। যদিও চিন বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন, এমন ক্ষেত্রে পুরোটাই ‘ফলেন পরিচয়তে’। কারণ শেষ পর্যন্ত দেশটি চিন। এ ক্ষেত্রে তাই আশাবাদী হয়েও সতর্কতা রাখতে চাইছে মোদী সরকার। বিদেশ মন্ত্রকের মতে, আগামী কয়েক দিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আলোচনা কতটা বাস্তবায়িত হয়, তা আগামী কয়েক দিনেই বোঝা যাবে। বিবৃতিতেও এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, খুব দ্রুত সপ্তম দফা সামরিক পর্যায়ের বৈঠকে বসবে দু’দেশ। সেখানে সমস্যা সমাধানে বাস্তবের জমিতে কতটা কাজ এগিয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা হবে। যৌথ ভাবে সীমান্তে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরানোর প্রশ্নে সক্রিয় হবে দু’দেশ।

দু’দেশের সেনার এই যৌথ বিবৃতি অবশ্য লাদাখে এপ্রিল মাসের আগেকার অবস্থা ফেরানোর প্রশ্নে নীরব। ফলে প্রশ্নে উঠেছে, তা হলে চিন এ যাত্রায় যে এলাকা দখল করে নিল, সেটিই কি এখন থেকে নতুন সীমানা বলে মান্য করা হবে? গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত ফিঙ্গার চার থেকে আট পর্যন্ত টহল দিয়েছে ভারতীয় সেনা। সেই এলাকা এখন চিনের দখলে। ফলে পূর্বাবস্থা ফিরবে কি না, তার কোনও জবাব নেই প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে। সূত্রের মতে, শীত ক্রমশ এগিয়ে আসায় সীমান্তে শান্তি ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে চিন। কিন্তু তারা যে প্যাংগং লেকের চার থেকে আট নম্বর ফিঙ্গার এলাকা নিজেদের দখলে নিয়েছে, গালওয়ান উপত্যকায় জমি দখল করে নির্মাণ কাজ করেছে, সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার প্রশ্নে নীরব বেজিং। তাই পাল্টা জবাবে প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তে দখল করা একাধিক চূড়ো ভারত ছাড়বে না বলে চিনকে গত কাল জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে শান্তি ফেরানোর প্রশ্নে দু’দেশ রাজি হলেও দখল করা জমি ছাড়ার প্রশ্নে চিন যতটা নীরব, ততটাই বেহাত হওয়া জমি ফেরতের প্রশ্নে মুখে কুলুপ ভারতীয় সেনার।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.