ঝাড়গ্রামে শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারি, ‘‘গাঁটওয়ালা বাঁশ নিয়ে ভোটের দিন গ্রামের এ মাথায় এবং ও মাথায় পাঁচ জন করে বসবেন। ভোটের দিন বাইরের কোনও লোক ঢুকলে লাঠির বাড়ি মারবেন! মারপিট করে যে রকম ভাবে মনোনয়ন জমা দিয়েছি, দরকারে সে রকম ভাবে মারপিট করে ভোট আদায় করব।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল ভবনে বসে দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা চ্যালেঞ্জ, ‘‘বাধা দিলে বাধবে লড়াই, মরতে হবে!’’

ঝাড়গ্রামে বিজেপির কর্মিসভায় দিলীপবাবু এ দিন আরও বলেছেন,  ‘‘এ বার আমাদের সঙ্গে চালাকি করলে মেরে লাল করে দেব! মনোনয়ন তুলতে কেউ যদি বলে, উল্টে বলবেন তোর দম থাকলে তুলিয়ে দেখা! কেউ ধমক দিলে ওর বাড়ি গিয়ে ধমক দিয়ে আসবেন।’’

অন্য দুই বিরোধী বাম ও কংগ্রেস অবশ্য পঞ্চায়েত ভোট ঘিরে অশান্তির বাতাবরণের জন্য শাসক দলকেই দায়ী করছে। তাদের অভিযোগ, বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়ার ডাক দিয়ে শাসক দলের নেতৃত্ব আগেই নির্বাচনকে ‘প্রহসনে’ পরিণত করেছেন। ভোটই হবে সামান্য জায়গায়। তার পরে আবার পার্থবাবুর মন্তব্য আরও অশনি সঙ্কেত বলে তাদের আশঙ্কা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর প্রশ্ন, বিরোধীরা বাধা দেওয়ার জায়গায় আছে কোথায়? নেই। তাঁর কথায়,  ‘‘ডিএম, এসপি-রা মনোনয়ন প্রত্যাহারের তালিকা তৈরি করছেন। কে দেবে তৃণমূলকে বাধা! তিন রকম যে তৃণমূলের ভাগ করেছিলেন পার্থবাবু, বাধা দিলে তারাই একে অপরকে দিতে পারে!’’ আর বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘‘তৃণমূল তো গণতন্ত্রে বিশ্বাসই রাখে না। মুখ্যমন্ত্রী বলে দিয়েছেন ১০০% আসন ওঁরা পাবেন!  নির্বাচনের সমস্ত দফতর দখল করে ফেলা হচ্ছে। তার পরে আবার হুমকি দিচ্ছে!’’

মনোনয়ন-পর্ব থেকেই শাসক দলের বিরুদ্ধে বিরোধীরা হিংসার অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। তা সত্ত্বেও তৃণমূল বারবারই দাবি করছে তাদের কর্মীরা সংযত। সে জন্য তাদেরই চার কর্মী খুন হয়েছেন। পার্থবাবু এ দিনও বলেন, ‘‘কোনও রকম বিবাদে না জড়াতে দল যে নির্দেশ দিয়েছে, তা কর্মীরা অমান্য করবে না বলেই বিশ্বাস।’’ বিরোধীদের মতে, অশান্তির দায় এ ভাবেই বিরোধীদের দিকে আগেভাগে ঠেলে রাখল তৃণমূল।