Home » বিল গেটসের ৭টি কারখানার মধ্য যেকোনো একটি কাজে লাগবে করোনা টিকা আবিষ্কারে

বিল গেটসের ৭টি কারখানার মধ্য যেকোনো একটি কাজে লাগবে করোনা টিকা আবিষ্কারে

অনলাইন ডেস্ক : সারাবিশ্বে বর্তমানে তাণ্ডব চলছে মহামারি করোনাভাইরাসের। চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া এই প্রাণঘাতী ভাইরাসে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজারের মতো মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ১৩ লাখ মানুষ।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে প্রায় ৭০ হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সবমিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন বিশ্বের ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৮০০ জন। আর দুই লাখ ৬২ হাজার মানুষ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় সবার উপরে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে তিন লাখ ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। এতে মৃত্যু মৃত্যু হয়েছে ৯ হাজার ৬১৮ জনের।

এই ভাইরাসের নেই কোনো প্রতিষেধক। তবে করোনাভাইরাসের একটি ভ্যাকসিন আবিষ্কারের জন্য বিশ্বের সেরা সেরা বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেই চেষ্টায় সফল হতে তাদের সময় লাগবে অনেক, বলা হচ্ছে অন্তত এক বছর হতে ১৮ মাস।

এরই মধ্যে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির জন্য সাতটি পৃথক কারখানা স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছিলেন মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস। 

যেখানে টিকা আবিষ্কার হতেই অনেক দেরি, সেখানে এখনই কেন তিনি সাতটি কারখানা স্থাপন করতে চাইছেন? যুক্তরাষ্ট্রের একটি জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান ‘দ্য ডেইলি শো’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন।

বিল গেটস তার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে যে সাতটি কারখানা তৈরি করবেন, তার মধ্যে শেষ পর্যন্ত কাজে লাগবে একটি বা দুটি মাত্র কারখানা। বাকিগুলো এক অর্থে অপচয়। কিন্তু করোনাভাইরাস থেকে যে লাখ লাখ মানুষের প্রাণ এবং অর্থনীতির যে বিপুল ক্ষতি এর ফলে এড়ানো যাবে, সে তুলনায় এটি কিছুই নয় বলে মনে করেন তিনি।

করোনা 

ভাইরাসের জন্য এখন অন্তত ৩০টি ভিন্ন ভিন্ন টিকা  নিয়ে গবেষণা চলছে। একটি টিকা তৈরির পর দীর্ঘ সময় ধরে এটি নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে হয়।

তবে যেসব টিকা নিয়ে এখন কাজ চলছে, তার মধ্যে সাতটি টিকাকে খুবই সম্ভাবনাময় বলে মনে করা হচ্ছে। বিল গেটস মনে করছেন, এই সাতটির যেকোনো একটি বা দুটি টিকা  হয়তো শেষ পর্যন্ত সবচেয়ে কার্যকরী বলে প্রমাণিত হবে।

সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেন, তাদের ফাউন্ডেশন চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত একটি বা দুটি টিকা বেছে নেবে এবং সেগুলো বিপুল সংখ্যায় তৈরি করতে শুরু করবে।

টিকা আবিষ্কারের আগেই কেন কারখানা তৈরি করে প্রস্তুত রাখছেন সেটা ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এতে করে সময় বাঁচবে, অনেক মানুষের জীবন বাঁচবে এবং বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, সংক্রামক রোগের ব্যাপারে আমাদের ফাউন্ডেশনের যেহেতু খুবই গভীর অভিজ্ঞতা আছে আমরা তাই এই মহামারি নিয়ে অনেক ভেবেছি। 

আমরা একটা টিকা তৈরির প্রচেষ্টায় অর্থ সাহায্য দিয়েছি। আমাদের এই দ্রুত আর্থিক সাহায্য এই প্রচেষ্টাকে অনেক ত্বরান্বিত করতে পারে। যদিও আমরা সাতটি টিকার মধ্যে বড়জোর একটি বা দুটি টিকা বেছে নেব, আমরা সাতটির জন্যই কারখানা বানাতে টাকা দেব। 

যাতে করে আমাদের একটির পর একটি টিকা পরীক্ষা করে সময়ের অপচয় করে বলতে না হয়, কোন টিকাটি কাজ করছে, তারপর আবার সেই টিকার কারখানা বানাতে গিয়ে আরো সময় নষ্ট না হয়।

বিল গেটস বলেন, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে টিকা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা যখন চলবে তার পাশাপাশি টিকা তৈরির কারখানার কাজ যেন পাশাপাশি চলে।

যে টিকাগুলো পরীক্ষায় সফল বলে প্রমানিত হবে না, সেগুলোর কারখানা আগে থেকে তৈরি করতে গিয়ে যে শত কোটি ডলারের অপচয় হবে সেটা স্বীকার করেন তিনি।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের এখন যা পরিস্থিতি, যে হাজার হাজার কোটি ডলারের অর্থনৈতিক ক্ষতি তার তুলনায় এই অপচয় কিছু নয়।

বিল গেটস বলেন, টিকা আবিস্কার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের কারখানায় টিকা তৈরির কাজ শুরু হয়ে যেতে পারবে, এতে করে বহু মাস সময় বাঁচবে। কারণ প্রতিটি মাস এখন গুরুত্বপূর্ণ।

করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় বিল গেটস এবং তাঁর স্ত্রী মেলিন্ডা গেটস এরই মধ্যে দশ কোটি ডলার দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

সূত্র : বিবিসি

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *