1. abusufian7389@gmail.com : .com : sk .com
  2. ashfakur85@gmail.com : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. b.c.s.bipro@gmail.com : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. zihad0292@gmail.com : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. ahmedmdmahfuz@gmail.com : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. nazimahmed2042@gmail.com : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. shahadotchadni@gmail.com : Md Sh : Md Sh
  8. ashfakur86@gmail.com : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. shuddhobarta24@gmail.com : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. surveyor.rasid@gmail.com : Abdur Rasid : Abdur Rasid
করোনার ভয়াবহতা নিয়ে ইতালির ডাক্তারের হৃদয়ছোঁয়া চিঠি        
সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:৪০ অপরাহ্ন

করোনার ভয়াবহতা নিয়ে ইতালির ডাক্তারের হৃদয়ছোঁয়া চিঠি

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, ১৮ মার্চ, ২০২০

বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের মহামারিতে এখন সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ইতালিতে। লাফিয়ে লাফিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। দেশটিতে নতুন করে ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে ভাইরাস সংক্রমণের মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১৫৮ জন।

নতুন করে ইতালিতে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৭৩ জন। সবমিলিয়ে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭ হাজার ৮২০। সুস্থ হয়েছেন ২৭৪৯ জন।

এমন পরিস্থিতিতে ইতালির গাভাটেসনি হাসপাতালের চিকিৎসক ড. ড্যানিয়েল ম্যাককিনি ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখা চিঠিতে করোনাভাইরাসে রোগীদের মৃত্যুর ঘটনা এবং পরিস্থিতির এক হৃদয়বিদারক বর্ণনা দিয়েছেন। যা থেকে ইতালির পরিস্থিতির ভয়াবহতা টের পাওয়া যাচ্ছে।

তিনি লিখেছেন…

‘আমাদের দেশে এখন ঘটে চলছে ভয়াবহ এক ট্রাজেডি। বৃদ্ধ রোগীরা মারা যাবার আগে চোখের পানি ফেলছেন। কাছের মানুষদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার সৌভাগ্যও তাদের নেই। তারা একা একা মরতে চাননি। কিন্তু তাদের বিদায় জানাতে হচ্ছে ক্যামেরাকে।

তারা সজ্ঞানে, সব কষ্ট সহ্য করতে করতে মরে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই স্বামী ও স্ত্রী একই দিনে মারা যাচ্ছেন। বৃদ্ধ দাদা-দাদী, নানা-নানীর তাদের নাতিদের মুখ শেষবারের মতোও দেখতে পাচ্ছেন না।

এই রোগ ফ্লুর চাইতেও ভয়াবহ। বিশ্বাস করুন, ফ্লুর চাইতে অনেক ভিন্ন রকমের অসুখ এটি। এই রোগকে দয়া করে তাই ফ্লু বলবেন না।

জ্বর অসম্ভব রকমের বেশি। রোগীর দম এমনভাবে বন্ধ হয়ে আসতে চায় যেন সে ডুবে যাচ্ছে। রোগীরা হাসপাতালে আসতে চায় না। শুধু একটু অক্সিজেন পাবার জন্য তারা বাধ্য হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

এই রোগের বিরুদ্ধে খুব সামান্য কিছু ওষুধ কাজ করে। আমরা সাহায্য করার সাধ্যমত চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু সবকিছুই নির্ভর করছে রোগীর অবস্থার উপর।

বৃদ্ধ রোগীরা এই রোগের সঙ্গে যুদ্ধে পেরে উঠছেন না। আমরা কাঁদছি। আমাদের নার্সরা কাঁদছেন। সবাইকে বাঁচিয়ে তুলবার সামর্থ্য আমাদের নেই।

চোখের সামনে মেশিনে তাদের জীবন থেমে যেতে দেখছি প্রতিদিন। প্রচুর রোগী আসছে। অতি দ্রুত আমাদের আরও বেড প্রয়োজন হবে। সবার একই সমস্যা। সাধারণ নিউমোনিয়া। প্রচণ্ড শক্তিশালী নিউমোনিয়া।

আমাকে বলুন কোন ফ্লু এই ট্রাজেডির জন্ম দেয়?

এটা অত্যন্ত সংক্রামক। এই ভাইরাসটি একেবারেই অন্যরকম। কোনো কোনো মানুষের জন্য ভয়ংকর। আমাদের দেশে ৬৫ উর্ধ্ব মানুষের প্রায় প্রত্যেকের ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কিংবা কোনো না কোনো রোগ রয়েছে। কোনো কোনো তরুণদের জন্যও এই রোগ ভয়ংকর।

এইসব তরুণ রোগীদের দেখলে কোন তরুণই নিজেকে নিয়ে নিশ্চিন্ত বোধ করতে পারবে না। আমাদের হাসপাতালে কোনো সার্জারি আর হচ্ছে না। বাচ্চাদের জন্ম, চোখের অপারেশন, কিংবা ত্বকের চিকিৎসা। সার্জারি রুমগুলো ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে রূপান্তর করা হয়েছে।

সবাই যুদ্ধ করছি করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে। প্রতি ঘন্টায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলছে। ক্রমাগত হাতে আসছে টেস্ট রেজাল্ট। সব পজিটিভ। পজিটিভ। পজিটিভ!

সব রোগীর একরকমের কমপ্লেইন: অসম্ভব জ্বর। শ্বাসকষ্ট। কাশি। পানিতে ডুবে যাবার মত দমবন্ধ হওয়ার অনুভূতি।

প্রায় সবাই ইনটেনসিভ কেয়ারে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কেউ কেউ অক্সিজেন মাস্কের নিচেও শ্বাস নিতে পারছেন না। অক্সিজেন মেশিন এখন সোনার চাইতেও দামি। বিশ্বাস করতে পারছি না, কি দ্রুত এসব ঘটে গেল! আমরা সবাই ক্লান্ত।

কিন্তু কেউ থামতে চাইছি না। সবাই মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করে চলছি। ডাক্তাররা নার্সদের মত অবিরাম কাজ করে চলছেন। দুই সপ্তাহ ধরে আমি বাসায় যাই না। আমার পরিবারের বয়স্ক সদস্যদের জন্য আমি শংকিত।

সন্তানদের সঙ্গে ক্যামেরা ব্যবহার করে কথা বলছি। মাঝে মাঝে আমি স্ত্রীর ছবির দিকে তাকিয়ে কাঁদি। আমাদের কারো কোনো দোষ নেই।

যারা আমাদের বলেছিল এই রোগটি তেমন ভয়ঙ্কর নয়, সব দোষ তাদের। তারা বলেছিল এটি সাধারণ এক ধরনের ফ্লু। কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর এখন অনেক বেশি দেরি হয়ে গেছে।

দয়া করে ঘরের বাইরে বের হবেন না। আমাদের কথা শুনুন। শুধুমাত্র ইমার্জেন্সি কারণ ছাড়া ঘর থেকে বের হবেন না। সাধারণ মাস্ক ব্যবহার করুন। প্রফেশনাল মাস্কগুলো আমাদের ব্যবহার করতে দিন। মাস্কের অভাবে আমাদের স্বাস্থ্যও ঝুঁকির মুখে। কোনো কোনো ডাক্তারও এখন আক্রান্ত।

তাদের পরিবারের অনেকেই জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তাই নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করুন। বয়স্ক পরিবার পরিজনকে ঘরে থেকে বের হতে দেবেন না।

আমাদের পেশার কারণে আমরা ঘরে থাকতে পারছি না। শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমরা আমাদের রোগীদের বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছি।

দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা নিজেদের শরীরে অসুখ ও ভগ্ন হৃদয় নিয়ে ঘরে ফিরছি। যাদের বাঁচাতে পারছি না তাদের শরীরের কষ্ট কমানোর চেষ্টা করছি। কাল সব ঠিক হয়ে গেলে আমাদের কথা সবাই ভুলে যাবে। ডাক্তারদের এইটাই পেশা। তাই মানুষকে বাঁচানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এই রোগ আপনাকে না ছুঁলেও সাবধানে থাকুন। জনসমাগম থেকে দূরে থাকুন। সিনেমায় যাবেন না, মিউজিয়ামে যাবেন না, খেলার মাঠে যাবেন না।

দয়া করে বৃদ্ধ মানুষগুলোর দুঃখ অনুভব করার চেষ্টা করুন। তাদের জীবন আপনাদের হাতে। এবং আপনারা আমাদের চাইতে বেশি মানুষের জীবন বাঁচাতে সক্ষম। আপনিই তাদের রক্ষা করতে পারেন।

লেখাটি শেয়ার করুন। শেয়ার করুন যেন সব ইতালির নাগরিক এই চিঠিটি পড়তে পারে। সব কিছু শেষ হবার আগেই যেন পড়তে পারে।’

লেখক: ড. ড্যানিয়েল ম্যাককিনি, গাভাটেসনি হাসপাতাল, ইতালি

সূত্র: যুগান্তর

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.