Home » ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে আক্রান্ত ৩ লাখ হেক্টর ফসলী জমি

ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে আক্রান্ত ৩ লাখ হেক্টর ফসলী জমি

অনলাইন ডেস্ক : প্রলয়ংকারী ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে আক্রান্ত হয়েছে দেশের ১৩ জেলার ২লাখ ৮৯ হাজার ৬ হেক্টর ফসলী জমি। আবাদী ফসলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোপা আমন আক্রান্ত হয়েছে। হারের হিসেবে সবচেয়ে বেশি শতকরা ১০০ ভাগ আক্রান্ত হয়েছে আলু। এর পরেই রয়েছে চীনাবাদামের অবস্থান, যার শতকরা হার ৬৬.৬৭ ভাগ। দূর্যোগে আক্রান্ত ফসলের জমির মধ্যে রয়েছে ২ লাখ ৭০ হাজার ২২৯ হেক্টর রোপা

আমন, ৭৬৯৬ হেক্টর শীতকালীন সব্জি, ৫০ হেক্টর আলু, ৭১১ হেক্টর সরিষা, ১০ হেক্টর চীনাবাদাম, ৮১৬৩ হেক্টর খেসারী, ৪০৩ হেক্টর পেঁপে, ৪৬৮ হেক্টর কলা ও ৫৭৮৩ হেক্টর পান ফসলের জমি।
ঝড়ে জাতীয়ভাবে আবাদী ২২.২৪ ভাগ ফসলী জমি আক্রান্ত হয়েছে। আক্রান্তের মধ্যে রোপা আমন ফসলের শতকরা ২১.৯৫ ভাগ, শীতকালীন সব্জি ৩০.২৪ ভাগ, আলু ১০০ভাগ, সরিষা ৫৯.৩৫ভাগ, চীনাবাদাম ৬৬.৬৭, খেসারী ২৭.৫৬ ভাগ, পেঁপে ৪০.৮৩ ভাগ, কলা ৯.৩৫ ভাগ ও ২২.০৬ ভাগ পান ফসলের ক্ষতি হয়েছে।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং এর উপ পরিচালক (মনিটরিং) মো. মিজানুর রহমান জানান ঝড়ে আক্রান্ত জেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে; খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও ভোলা। গত ৯ অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত করা হিসেবে আরো জানানো হয়, ঝড়ে এই অঞ্চলে মোট ১২ লাখ ৯৯ হাজার ২৭৩ হেক্টর জমির ফসল দন্ডায়মান রয়েছে।


ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত ফসলের জমিতে এখন চাষিদের কি করা উচিত জানতে চাইলে সরেজমিন উইং এর পরিচালক কৃষিবিদ চন্ডী দাস কুন্ডু বলেন, বর্তমানে যেসব জমির রোপা আমন ধান শতকরা ৮০ ভাগ পেকে গেছে তা দ্রুত কেটে ফেলতে হবে। আধা পাকা অথচ যেসব ধান মাটিতে ঢলে পড়েছে সেসব ধান গাছ সোজা করে তুলে ধরে ঝুঁটি বেধে দিতে হবে। যেহেতু এখন রবি মৌসুম এসে যাচ্ছে তাই দ্রুত ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত জমি পরিস্কার করে সেখানে সরিষা, সূর্যমূখি ও গম জাতীয় ফসল দ্রুত আবাদ শুরু করতে হবে।


এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, লক্ষীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম, বান্দরবান, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি ও ভোলা জেলার চাষের জমিতে অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন করতে হবে। জমি থেকে পানি সরে গেলে বোরো বীজতলা তৈরী এবং সরিষা, ভূট্টা, ডাল, আলু ইত্যাদি বপন শুরু করতে হবে। পরিপক্ক ও হেলে পড়া ধান দ্রুত সংগ্রহ করে নিরাপদ স্থানে রাখতে হবে। জমি থেকে পানি সরে যাওয়ার পর আবার সবজির বীজ বপন ও চারা রোপন করতে হবে।

গবাদি পশু এবং হাঁস-মুরগী নিরাপদ এবং শূকনো জায়গায় রাখতে হবে। বন্যার কর্দমাক্ততার কারণে পুকুরে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দিতে পারে, তাই বাঁশ দিয়ে পুকুরের পানি নেড়ে দিতে হবে। চ-ী দাস কু-ু আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি পুশিয়ে নিতে কৃষকরা রবি ফসল আবাদের উদ্যোগ নিলে তাদেরকে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বীজ ও সার প্রণোদনা হিসেবে দেয়া হবে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে ৬ লাখ ৯২ হাজার টাকা দামের ১৩টি গরু, ৫০ হাজার টাকার একটি মহিষ, ৩ লাখ ৩ হাজার টাকার ৫৮টি ছাগল,

৪৪ হাজার টাকার ১১টি ভেড়া, ৫ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা দামের ২৮০৬টি মুরগি ও ৪৪ হাজার ৪০০ টাকার ২০১টি হাঁস। ঝড়ে ১১ হাজার ২৫০ টাকার ০.২৫০ টন দানাদার খাদ্য, ১৫ লাখ ৫২ হাজার টাকা দামের ১৬০.৪ মেট্রিক টন খড় ও ১২ লাখ ৭ হাজার ৪০০ টাকার ৪১০.২ মেট্রিক টন ঘাস নষ্ট হয়েছে বলেও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের পরিচালক মো. আতাউর রহমান খান জানান। এছাড়া বুলবুলের তা-বে ৯টি জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ১৪ লাখ ৬০ হাজার টাকার মুরগির খামার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। খুলনা বিভাগের খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষিরা, বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালি, বরিশাল, পিরোজপুর ও বরগুনা এবং চট্টগাম বিভাগের লক্ষীপুরে এ ক্ষয়ক্ষতি হয়। সম্পাদনা : রেজাউল আহসান

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *