শুদ্ধবার্তাটোয়েন্টিফোরডটকম: যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ইউটিউবের সদরদপ্তরে হামলা চালানো ইরানী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ওই নারীর নাম নাসিম আঘদাম।
ইউটিউবের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এই হামলা চালান নাসিম আঘদাম। গোলাগুলিতে একজন পুরুষ ও দু’জন নারী আহত হন। আঘদাম পরে গুলি চালিয়ে আত্মহত্যা করেন।
তার ভিডিও ফিল্টারিং করায় ইউটিউবের ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন নাসিম আঘদাম। তিনি যে পরিমাণ টাকা আয় করতে পারতেন তা ইচ্ছে করে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ কমিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ছিল তার।
নাসিম আঘদাম দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান ডিয়েগোর বাসিন্দা। তার একটি ইউটিউব চ্যানেল এবং একটি ওয়েবসাইট ছিল। তিনি যেসব ভিডিও পোস্ট করতেন তার মধ্যে প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতাকে তুলে ধরা হতো।
নাসিম আগদামকে বিভিন্ন জায়গায় একজন ‘ভেগান বডিবিল্ডার, শিল্পী এবং র্যাপ গায়ক’ বলে বর্ণনা করা হয়েছে।
ইউটিউব সদর দপ্তরে গুলি চালানোর আগেই হামলাকারী নারী তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক ওয়েবসাইটে এ ইউটিউবের কর্মকাণ্ড নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন।
৩৯ বছর বয়সী হামলাকারী নারীর সঙ্গে ওয়েবসাইট নাসিমেসাবজ ডটকমের যোগ ছিল বলেও দাবি মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর। ওয়েবসাইটটিতে পারস্য সংস্কৃতি, ভেগানিজম ও ইউটিউবের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিষোদগার করা বেশ কয়েকটি পোস্টও আছে।
যেসব ব্যবহারকারী ইউটিউবের জন্য ভিডিও কনটেন্ট বানায়, তাদের সঙ্গে ভিডিও কনটেন্ট শেয়ারিং সাইটটি ন্যায্য লভ্যাংশ ভাগ করে নেয় না বলেও ওইসব পোস্টে অভিযোগ করা হয়েছে।
ইউটিউবে বিকাশের ক্ষেত্রে সমান সুযোগ দেয়া হয় না, ভিডিও শেয়ার করা হয় এমন কোনো সাইটেও না; আপনার চ্যানেল তখনই বিকশিত হবে, যখন তারা চাইবে, নাসিমেসাবজ ডটকমের একটি পোস্টে দেখা মিলেছে এমন ক্ষোভের।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাসিমেসাবজ নামের ইউটিউব অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেয় হয়। গত বছর জানুয়ারি মাসে অভিযোগ করেন, ইউটিউব তার ভিডিওগুলো ফিল্টার করছে। এ কারণে অপেক্ষাকৃত কম লোক তা দেখতে পারছে এবং এ থেকে তিনি যে অর্থ আয় করতেন তাও কমে যাচ্ছে।
তিনি এডলফ হিটলারকে উদ্ধৃত করে তার ওয়েবসাইটে বলেন, একটা বড় মিথ্যাকে বারবার বলতে থাকলে এক পর্যায়ে লোকে তা বিশ্বাস করবে।
নাসিমওয়ান্ডারওয়ান নামে তার চ্যানেলটি এখন মুছে দেয়া হয়েছে। এর পাঁচ হাজার সাবস্ক্রাইবার ছিল।
আঘদামের পিতা ইসমাইল বলেছেন, ইউটিউব তার ভিডিও’র জন্য অর্থ দেয়া বন্ধ করে দেয়ায় তার মেয়ে ক্ষুব্ধ ছিল।
তিনি আরো জানান, দু’দিন ধরে নাসিম আঘদাম তার ফোন ধরছিলেন না। সোমবার থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। এরপর ইউটিউব সদর দপ্তরের ১৫ মাইল দূরে রাস্তার ওপর পুলিশ তাকে খুঁজে পায়। তিনি গাড়ির মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন বলে পুলিশ তার পরিবারকে জানায়, তবে আঘদামকে আটক করা হয়নি।
আঘদামের পিতা ইসমাইল স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তার মেয়ে ‘ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে ঘৃণা করতো’ বলেই হয়তো তাদের সদর দপ্তরে গিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে এ ঘটনার যোগসূত্র পাওয়া যায়নি।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গুলির ঘটনায় শোক জানিয়েছেন। তিনি দ্রুত প্রতিক্রিয়া দেখানোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশংসা করেছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ায় ইউটিউবের এই প্রধান কার্যালয়ে ১৭০০ লোক কাজ করেন। ইউটিউবের মালিকানা রয়েছে গুগলের হাতে।
গুগল বলেছে, গোলাগুলির ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে তারা। ইউটিউবের মুখপাত্র ক্রিস ডেল পুলিশের তৎপরতার প্রশংসা করেছেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান