Home » ৫ মাসে ১০ ট্রেন দুর্ঘটনা আতঙ্কে যাত্রীরা

৫ মাসে ১০ ট্রেন দুর্ঘটনা আতঙ্কে যাত্রীরা

মামুনুর রশীদ, ফেঞ্চুগঞ্জ : সিলেট-আখাউড়া রেলপথে উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে ট্রেন দুর্ঘটনা। ১৭৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ রেললাইনে নেই পর্যাপ্ত হুক, নাটবোল্ট, ফিশ প্লেট আর ক্লিপ। কাঠের স্লিপার নষ্ট ও অধিকাংশ ক্লিপ চুরি হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়েছে রেলপথটি। গত ৫ মাসে ১০ বার দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে বিভিন্ন ট্রেন। ঘন ঘন দুর্ঘটনার কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন যাত্রীরা। মেয়াদ উত্তীর্ণ ইঞ্জিন, জরাজীর্ণ বগি, সিডিউল বিপর্যয়, ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার কারণে রেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন যাত্রীরা।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে সিলেটের সঙ্গে ঢাকা ও চট্টগ্রামের যোগাযোগের জন্য রেলপথটি নির্মিত হয়। যাত্রীদের নিরাপদ ও আরামদায়ক ভ্রমণের কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ রেলওয়ে ১৯৮৭ সালে আন্তঃনগর ট্রেন চালু করে। ঢাকা-সিলেট রুটে প্রতিদিন ৪টি আন্তঃনগর ট্রেন, সুরমা মেইল নামে একটি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। সিলেট-চট্টগ্রাম রুটে দুটি আন্তঃনগর ও একটি লোকাল ট্রেন এবং কয়েকটি পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করে। সিলেট-আখাউড়া রুটে দুটি ট্রেন চলাচল করে।

রেলওয়ে সূত্রে আরও জানা যায়, পূর্বাঞ্চলীয় জোনের আওতাভুক্ত রেলের গুরুত্বপূর্ণ এ দুটি রুটে চলাচলকারী ট্রেনের ইঞ্জিনগুলো প্রায় ৫০ বছরের পুরনো। পুরনো ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলাচলের কারণেই ঘটছে ইঞ্জিন বিকলের ঘটনা। রেল সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে মোগলাবাজার স্টেশনে কুশিয়ারা এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন ধরে গেলে তাড়াহুড়া করে নামতে গিয়ে কয়েক যাত্রী আহত হন। ২৮ মার্চ বিকেলে কুলাউড়ার বরমচাল স্টেশনে তেলবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুত হলে ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। ৮ মার্চ ঢাকাগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস মাইজগাঁও রেলস্টেশনে পৌঁছার পর ইঞ্জিনের বাফারের হুকের সেন্টার পিনে ফাটল দেখা দেয়। এ সময় দুই ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বিঘ্নিত হয়। ওই দিন রাতে ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস কুলাউড়া লংলা স্টেশন অতিক্রমকালে একটি বগির স্প্রিং ভেঙে যায়। ২ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও এলাকায় ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেসের ১১টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে প্রায় ১৫ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা মালবাহী ট্রেন ফেঞ্চুগঞ্জের কুশিয়ারা রেল ব্রিজের কাছে একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। ২৩ জানুয়ারি ভোরে ঢাকা থেকে আসা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেন শ্রীমঙ্গল ও বানুগাছ স্টেশনের মধ্যবর্তী লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যোনের পাহাড়ি এলাকায় ইঞ্জিন দুর্বলতার কারণে দু’দফা আটকে পড়ে। প্রায় ৩ ঘণ্টা পর বিকল্প ইঞ্জিন এলে ট্রেনটি সচল হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) মো. এরফানুর রহমান বলেন, নতুন কাঠের স্লিপার বরাদ্দ না পাওয়ায় পুরনো স্লিপারগুলো পরিবর্তন করা যাচ্ছে না।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *