Main Menu

এইচএসসি থেকে হঠাৎ এমবিবিএস এক আ.লীগ নেতা

২০১৪ সালে চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক তিমির বরণ চৌধুরী। কিন্তু ওই নির্বাচনে তিনি জিততে পারেননি। ২৪ মার্চ অনুষ্ঠেয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আরও এক ধাপ নিচে নেমে তিনি ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী হয়েছেন। কিন্তু ২০১৪ সালে তিনি শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন উচ্চমাধ্যমিক পাস। এবারের হফলনামায় নিজেকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী দাবি করায় নানা মহলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।হলফনামায় তিমির বরণ চৌধুরী নিজেকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী দাবি করলেও তাঁর এ তথ্য চ্যালেঞ্জ করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে গতকাল রোববার আপিল করেছেন পটিয়া উপজেলার আরেক ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সাহাব উদ্দিন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারের হলফনামার সঙ্গে তিমির বরণ চৌধুরী বিএমডিসির একটি সনদ সংযুক্ত করেন। এমবিবিএস কিংবা ডেন্টাল ডিগ্রিধারীদের কেবল এই সনদ দেওয়া হয়। কিন্তু হলফনামায় এমবিবিএসের কোনো সনদ সংযুক্ত ছিল না। যদিও হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতা দেখিয়েছেন এমবিবিএস। ফলে তাঁর বিএমডিসির সনদের বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।স্থানীয় সূত্র জানায়, তিমির বরণ চৌধুরী একসময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে পড়াশোনা করেছিলেন। তাঁকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইউএসটিসিতে ভর্তি হন। সেখান থেকেও তাঁকে ১৯৯০ সালে বহিষ্কার করা হয়। ফলে তাঁর এমবিবিএস চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অপূর্ণ থেকে যায়। এরপর তিনি কখনো নিজেকে এমবিবিএস চিকিৎসক, কখনো রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। যদিও তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে এখন দায়িত্ব পালন করছেন।

অভিযোগকারী পটিয়া উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে তাঁর লিখিত আপিলের ফটোকপি এ প্রতিবেদকের কাছে রয়েছে।সাহাব উদ্দিনের লিখিত আপিল প্রসঙ্গে একই প্যানেলের পটিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী (স্বতন্ত্র) ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য মো. সাজ্জাত হোসেন , তিমির বরণ নিজেকে এইচএসসি পাস বলে উল্লেখ করে ২০১৪ সালে হলফনামা দাখিল করেছিলেন। এটি বাস্তব সত্য। কিন্তু এবারের নির্বাচনে তিমির নিজেকে এমবিবিএস ডিগ্রিধারী দাবি করে হলফনামা দাখিল করেন। তাঁর এই দাবি নিয়ে সর্বত্র প্রশ্ন উঠেছে বলে মো. সাহাব উদ্দিন তা চ্যালেঞ্জ করেছেন।সাজ্জাত আরও বলেন, তিমিরের প্রার্থিতা বাতিল করতে সাহাব উদ্দিন জেলা প্রশাসকের কাছে আপিল করেছেন। আর হলফনামায় এমবিবিএস ডিগ্রিধারী দাবি করলেও কোনো সনদ দেননি। তবে বিএমডিসির যে সনদ দিয়েছেন, সেটির কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। কারণ এমবিবিএস পাস না করলে কেউ বিএমডিসির নিবন্ধন পান না। তাঁর বিএমডিসির এই সনদও জাল।

অভিযোগ প্রসঙ্গে তিমির বরণ চৌধুরী গতকাল রোববার তিনি এমবিবিএস ডিগ্রিধারী। তাই হলফনামায় বিএমডিসির সনদ সংযুক্ত করেছেন।এমবিবিএস পাস কবে করেছেন, জানতে চাইলে তিমির ১০ মিনিট পর জানাতে পারবেন বলে জানান। অনেকক্ষণ পর তিমির বলেন, ‘১৯৯৯ সালে এমবিবিএস পাস করার সম্ভাবনা বেশি।’ তাহলে ২০১৪ সালের হলফনামায় এইচএসসি পাস উল্লেখ করেছিলেন কেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিমির বরণ বলেন, তখন তাড়াহুড়ো করে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে হয়েছে। হাতের কাছে এমবিবিএস সনদ ছিল না। এবারও হলফনামায় এমবিবিএসের সনদ সংযুক্ত করেননি কেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিমির বলেন, ‘সনদ আমার কাছে আছে। এমবিবিএসের সনদ দেখতে চাইলে আপনাকে দেখাতে পারি।’সনদ দেখার এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। সেখানে সংযুক্তি করেননি কেন? এ প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিমির দিতে পারেননি।বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক ফয়সল ইকবাল চৌধুরী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী তিমির বরণের এমবিবিএস ডিগ্রি নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে তিনি বলেন, এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রির সঙ্গে এক বছরের ইন্টার্নশিপ (প্রশিক্ষণ) শেষ করতে হয়। এরপর কেবল বিএমডিসির স্থায়ী নিবন্ধন সনদ পাওয়া যায়।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.