শুদ্ধবার্তা ডেস্ক- বিমান দুর্ঘটনায় দুই পায়ের হাঁটুর নিচ থেকে অনেক জায়গায় ভেঙে যায় কবির হোসেনের। দগ্ধও হয়েছেন তিনি। ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে একবার অস্ত্রোপচারের পর তাকে আইসিইউতে রাখা হয়। এখানকার চিকিৎসকরা তার ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ কেটে ফেলার পক্ষে মত দিয়েছিলেন। সে সময় পরিবার তাকে সিঙ্গাপুর নেওয়ার আগ্রহ জানালে সোমবার ভোরে ইউএস- বাংলার একটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে কবিরকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। ওই হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ডা. সি জ্যাকের অধীনে চিকিৎসাধীন আছেন কবির। মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার বাজিতপুর গ্রামের মৃত মোসলেম আলী মাতব্বরের ছেলে কবির হোসেন স্ত্রী, দুই ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে ঢাকার উত্তরখানের কুনিপাড়া এলাকায় নিজের বাড়িতে থাকেন। প্রসাধনী সামগ্রীর আমদানিকারক কবির ব্যবসার কাজে প্রতি মাসে একাধিকবার দেশের বাইরে যেতেন বলে তার পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন। ডা. জ্যাকের বরাত দিয়ে ডা. ইমাম বলেন, কবির হোসেনের ডান পায়ের হাঁটুর নিচের অংশ মঙ্গলবার কেটে ফেলা হয়েছে। তার বাঁ পায়েও ইনফেকশন আছে। এ পায়ের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। কবির এখনও আউট অফ ডেঞ্জার নন। কবিরের আগে এই দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক ইমরানা কবির হাসির বাঁ হাতের চারটি আঙুল কেটে ফেলা হয়। তিনিও সিঙ্গাপুরের এই হাসপাতালে ডা. সি জ্যাকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এদিকে শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় ওই ঘটনায় আহত মেহেদী হাসান অমীয় ও তার স্ত্রী সাঈদা কামরুন্নাহার স্বর্ণা এবং রাশেদ রুবায়েত বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বলে সেখানকার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. হোসেইন ইমাম জানিয়েছেন। মেহেদী, স্বর্ণা ও রুবায়েতের শারীরিক ও মানসিক দিক বিবেচনা করে মেডিকেল বোর্ড বুধবার সকালে তাদের হাসপাতাল থেকে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয় বলে ডা. ইমাম জানান। তাদের আর হাসপাতালে রাখার প্রয়োজন নেই। ফলোআপ চিকিৎসার জন্য আমরা শিডিউল করে দিয়েছি, তারা সময়মতো এসে চেকআপ করিয়ে যাবে।
আহতদের মধ্যে মেহেদী, স্বর্ণা ও রুবায়েত ছাড়া আলমুন্নাহার অ্যানি ও শাহরিন আহমেদ ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ছিলেন। তিনজন চলে যাওয়ায় এখন শুধু অ্যানি ও শাহরিন সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। ডা. ইমাম বলেন, শাহরিনের ডিপ বার্ন ছিল। অপারেশনের পর সে ভালো আছে। তাকে আরও কিছুদিন রাখতে হবে। আর অ্যানির মেন্টাল ট্রমা থেকে কিছু সমস্যা হচ্ছে। সেজন্য আমরা তাকে এখনই ছাড়ছি না।
গত ১২ মার্চ কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলার একটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে ৭১ আরোহীর মধ্যে ৫০ জনের মৃত্যু হয়। তাদের মধ্যে ২৬ জন ছিলেন বাংলাদেশি।আহতদের মধ্যে ১০ জন ছিলেন বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে সাতজনকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছিল। গত সোমবার ভোরে কবির সিঙ্গাপুরে যাওয়ার পর বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শাহীন ব্যাপারী। আহতদের মধ্যে শাহীনই সবচেয়ে বেশি দগ্ধ হয়েছিলেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান