মিয়ানমারের সেনাবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে একটি বেসামরিক-নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার তারা এ ঘোষণা দেয়।
বার্তা সংস্থ রয়টার্স জানায়, ডিসেম্বরে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের আগে এই পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, দেশটির নিয়ন্ত্রণ এখনও সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং-এর হাতেই রয়ে গেছে। কারণ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্টও তিনিই থাকছেন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত এক ঘোষণায় জানানো হয়, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেনাবাহিনীর হাতে থাকা নির্বাহী ক্ষমতার আদেশ বাতিল করা হয়েছে। পরিবর্তে একটি অন্তর্বর্তী সরকার এবং একটি নির্বাচন কমিশন গঠিত হয়েছে—যা আগামী নির্বাচন তদারকি করবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বাস্তব পরিস্থিতি খুব একটা বদলায়নি। কারণ, মিন অং হ্লাইং একইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ও সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে তার পূর্ণ ক্ষমতা বজায় রেখেছেন।
আসন্ন নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে। তাদের মতে, এই ভোট সেনা শাসনকে বৈধতা দেওয়ার নাটক মাত্র। অধিকাংশ বিরোধী দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না, এবং সামরিকপন্থী প্রার্থীরাই ভোটে অংশ নেবেন বলে ধারণা।
মিয়ানমার বিশ্লেষক ডেভিড ম্যাথিসন এই ঘোষণাকে একেবারে প্রতারণাপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, তারা কেবল পুরনো শাসনকেই নতুন নামে সাজাচ্ছে। বাস্তবে কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। এটা নির্বাচনের নামে নতুন ছলনা।
মিয়ানমারে সবশেষ নির্বাচন হয়েছিল ২০২০ সালের নভেম্বরে। সেই নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে ২০২১ সালের ১ নভেম্বর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী এবং দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করে। ক্ষমতা দখলের পর সামরিক সরকারের প্রধান হন সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইং।
অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন এনএলডি সরকার। গ্রেপ্তার হন সু চি ও তাঁর দলের বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী। এর পর থেকে দেশজুড়ে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। এতে হাজারো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
বার্তা বিভাগ প্রধান