হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে সাম্প্রতিক সহিংসতায় ফারুক মিয়া নামের এক এম্বুলেন্স চালক খুনের ঘটনায় নবীগঞ্জ পৌর যুবদলের সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম সোহেলকে প্রধান আসামী করে ১৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী সালমা বেগম বাদী হয়ে শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে এ মামলা দায়ের করেন।
মামলায়, জহিরুল ইসলাম সোহেল ছাড়াও সাংবাদিকসহ ১৩৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রায় এক বছর আগে, সৌদি আরব পাঠানোর কথা বলে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আশাহীদ আলী আশা নবীগঞ্জ পৌর এলাকার পূর্ব তিমির পুর গ্রামের খসরু মিয়ার নিকট থেকে এক লাখ টাকা নেন। কিন্তু সময়মতো বিদেশ পাঠাতে না পারায় খসরু মিয়া তার পাওনা টাকা ফেরত চেয়ে ফারুক মিয়াকে নিয়ে একাধিকবার আশাহীদকে তাগিদ দেন। কিন্তু টাকা না দিয়ে আশাহীদ আলী আশা তাদের গালাগাল করে হুমকি দেন।
এ নিয়ে বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাতে তিমিরপুর গ্রামের খরচু মিয়া তালুকদারের সঙ্গে ইনাতগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আশাহিদ আলী আশার কথাকাটাকাটি হয়। এরপর যুবলীগ নেতা আশার পক্ষ নিয়ে আনমনু গ্রামের লোকজন তিমিরপুর গ্রামের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এর জের ধরে শুক্রবার (৪ জুলাই) রাতে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এরই ধারাবাহিকতায় সোমবার (৭ জুলাই) দুপুরে পূর্ব তিমিরপুর ও চরগাঁও গ্রামের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে আনমনু, রাজাবাদ, রাজনগর, কানাইপুর, নোয়াপাড়া ও আশপাশের মৎস্যজীবী অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রামের লোকজন। বিকেল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত চলা এই সংঘর্ষে পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের ফারুক মিয়া নামে এক ব্যক্তি নিহত হন এবং দেড় শতাধিক মানুষ আহত হন। নিহত ফারুক মিয়া নবীগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব তিমিরপুর গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে।
নবীগঞ্জ থানা পুলিশ জানিয়েছে, মামলার এজাহার পাওয়ার পর থেকে আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘ফারুক মিয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে, মামলা নম্বর-১১। এজাহারভুক্ত ১৩৫ আসামির গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।’
বাহুবল-নবীগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘ফারুক মিয়া হত্যার ঘটনায় তার স্ত্রী থানায় এজাহার দিয়েছেন, মামলা রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।’