সিলেটে বন্ধ পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে কঠোর আন্দোলন শুরু হচ্ছে শনিবার (২৮ জুন) থেকে। সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষণ্ট ব্যবসায়ী মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পাথর কোয়ারি ও লোড-আনলোড পয়েন্টে কর্মবিরতি, অনির্দিষ্টকালের জন্য পণ্য ও গণপরিবহন বন্ধ- ইত্যাদি। পাথর কোয়রি চালুর এ দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেছে সিলেট বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী শনিবার (২৮ জুন) থেকে পাথর কোয়ারি ও লোড আনলোড পয়েন্টে শুরু হবে ৪৮ ঘন্টার কর্মবিরতি। এরপর ৩০ জুন থেকে ৪৮ ঘন্টার জন্য বন্ধ থাকবে সব ধরনের পণ্য পরিবহন।
এই দুই কর্মসূচি পালনের পরেও যদি সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে বা ঘোষণা না দেয়, তাহলে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু হবে ২ জুলাই থেকে। এদিন থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের পণ্য ও গণপরিবহন বন্ধ করে দেওয়া হবে।
গত প্রায় পাঁচ বছর ধরে বন্ধ সিলেট অঞ্চলের পাথর কোয়ারিগুলো। পরিবেশবাদী সংগঠন বেলা, বাপাসহ সচেতন নাগরিকদের দাবির মুখে ২০২০ সালে সিলেটের পাথর কোয়ারি ও সংলগ্ন এলাকাগুলোকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকেই এসব কোয়ারি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যায়। বেকার হয়ে পড়েন এখাতের প্রায় ২০ লাখ শ্রমিক। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে সিলেট অঞ্চলের সার্বিক অর্থনীতিতে। হতাশা বাড়তে থাকে সংশ্লিষ্ট প্রায় সব মহলে।
চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি দেশের অন্যান্য পাথর কোয়ারির নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়। কিন্তু সিলেটের পাঁচটি কোয়ারির নিষেধাজ্ঞা বহাল থেকে যায়। এতে ক্ষোভ বাড়তে থাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে। সেই ক্ষোভের আগুনে বলতে গেলে ঘি ঢেলে দিয়েছেন পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। সম্প্রতি সিলেট সফরে এসে তিনি ঘোষণা করেন, সিলেটে আর কোনো পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া হবেনা। তার এমন ঘোষণার সাথে সাথে প্রতিরোধের মুখে পড়েন তিনি। গোয়াইনঘাটে তিনি অবরোধের মুখে পড়েন।
এরপর গত ২৪ জুলাই সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদমিনারের সামনে অনুষ্টিত সিলেট জেলা পাথর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সমাবেশ থেকে কঠোর এ আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। পাথর কোয়ারি খুলে দেয়ার দাবিতে ওই সমাবেশে একাত্মতা ঘোষণা করেন সিলেটের বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর নেতৃবৃন্দ।
এদিকে এই আন্দোলন সফল করতে জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাটসহ কোয়ারি সংশ্লিষ্ট উপজেলাগুলোতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সিলেট জেলা পাথর – সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ।