গ্রেটা থুনবার্গকে বিতাড়ন করেছে ইসরায়েল, অন্যদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হচ্ছে ব্যবস্থা

সুইডিশ পরিবেশবাদী গ্রেটা থুনবার্গসহ ফিলিস্তিনপন্থি অন্য মানবাধিকার কর্মীদের তেল আবিব বিমানবন্দরে নিয়ে গেছে ইসরায়েল। সেখান থেকে তাদেরকে ফেরত পাঠানো শুরু হয়েছে বলে মঙ্গলবার (১০ জুন) জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, গ্রেটাকে ফ্রান্সগামী এক উড়োজাহাজে তুলে দেওয়া হয়েছে। তিনি প্রয়োজনীয় নথিতে স্বাক্ষর করে চলে যেতে সম্মত হলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সেলফি ইয়াটের’ কয়েকজন আরোহী পরবর্তী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েল ছাড়বেন বলে আশা করা হচ্ছে। যারা প্রয়োজনীয় কাগজে স্বাক্ষর করে ইসরায়েল থেকে চলে যেতে অস্বীকৃতি জানাবেন ,তাদেরকে যথাযথ বিচারিক কর্তৃপক্ষের সামনে উপস্থিত করা হবে। সেখানে ইসরায়েলি আইন অনুসারে তাদের বিতাড়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব্রিটিশ পতাকাবাহী ইয়াটের নাম ম্যাডেলিন। ফিলিস্তিনপন্থি মানবাধিকার সংস্থা ফ্রিডম ফ্লোটিল্লা কোয়ালিশন বা এফএফসির তত্ত্বাবধানে এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছিল। ইসরায়েলি অবরোধ অমান্য করে গাজায় প্রতীকী পরিমাণ চাল ও শিশুখাদ্য সরবরাহের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিল দলটি।
নিজেদের টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টে এফএফসি জানিয়েছে, গন্তব্যে পৌঁছানোর ঠিক আগের রাতে তাদের জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেয় ইসরায়েল।
পরবর্তী সময়ে ইয়াটের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয় নিশ্চিত করে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সব আরোহী অক্ষত ও নিরাপদ আছেন। তাদেরকে পানি ও স্যান্ডউইচ দেওয়া হয়েছে। ইয়াটটি ইসরায়েলি আশদোদ বন্দরে কড়া পাহাড়ায় নিয়ে যায় দেশটির সেনাবাহিনী। সেখান থেকে আরোহীদের কিছুক্ষণ পরেই বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরোহীদের নিজ দেশীয় কূটনীতিবিদরা তাদের সঙ্গে বিমানবন্দরে সাক্ষাৎ করেছেন বলে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ম্যাডেলিনের ১২ জন আরোহীর মধ্যে থুনবার্গ ছাড়াও রয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসান। তাদের দাবি, ত্রাণ বিতরণের মাধ্যম আন্তর্জাতিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে চেয়েছিলেন তারা।
তবে পুরো অভিযানটিকে ফিলিস্তিনপন্থি পাবলিসিটি স্টান্ট বলে তকমা দিয়ে দিয়েছে ইসরায়েল। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, ইয়াটে থাকা সামান্য খাবার যা সেলেব্রিটিরা সাবড়ে দেয়নি, তা যথাযথ পথে গাজায় পাঠানো হবে।
এদিকে, ইসরায়েলের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন থুনবার্গ। তার অভিযোগ, আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে তাকে অপহরণ করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি বাহিনীর ম্যাডেলিনের দখল নেওয়ার কিছু আগে এক ভিডিও বার্তায় থুনবার্গ বলেন, আমি এবং আমার সহযোদ্ধাদের যতদ্রুত সম্ভব ছাড়িয়ে আনতে সুইডিশ সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমার অনুরোধ রইল।
তবে অপহরণের বিষয়ে ইসরায়েলের দিক থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া না গেলেও, প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অপহরণের দাবি খারিজ করে দিয়ে তিনি বলেছেন, গ্রেটা থুনবার্গকে অপহরণ বাদেই ইসরায়েলে হাতে বহু সমস্যা রয়েছে বলে আমি মনে করি। গ্রেটা আসলে একজন মাথা গরম তরুণী। আমার ধারণা তার রাগ নিয়ন্ত্রণের কোর্স করা উচিত।
Leave a comment
এই বিভাগের আরো সংবাদ

পাল্টা হামলা, গত কয়েক ঘন্টায় ইরান ইসরায়েলে ২০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে
ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। গত কয়েক ঘণ্টায় ইরান ইসরায়েলে ২০০টিরও বেশি ড্রোন ছুঁড়েছে। ইসরায়েলিবিস্তারিত

ইরান বলছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনের জন্য আমেরিকা দায়ী
শুক্রবার ভোরে তেহরানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলার ইরান জোর দিয়ে বলেছে যে, এই আগ্রাসনের পরিণতি মার্কিনবিস্তারিত
Comments are Closed