Main Menu

গাজায় ইসরায়েলের বড় আকারের অভিযান শুরু

গাজায় হামাসকে পরাজিত করে বাকি জিম্মিদের মুক্ত করতে বড় আকারের সামরিক অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। অভিযানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘গিডিয়নের রথ’—যা বাইবেলের এক যোদ্ধার নাম থেকে নেওয়া। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) শুক্রবার এক্স-এ তাদের হিব্রু ভাষার অ্যাকাউন্টে জানায়, এই অভিযানের লক্ষ্য হলো গাজা উপত্যকার ‘কৌশলগত এলাকাগুলো দখল ও নিয়ন্ত্রণে নেওয়া’। তবে আইডিএফের ইংরেজি ভাষার পোস্টে অভিযানের নামটি উল্লেখ করা হয়নি।

আইডিএফ জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় তারা গাজাজুড়ে ১৫০টিরও বেশি ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুতে’ হামলা চালিয়েছে এবং ‘যতক্ষণ না হামাস ধ্বংস হয় ও সব জিম্মিকে মুক্ত করা যায়, ততক্ষণ অভিযান অব্যাহত থাকবে’।

গাজায় হামাস-পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় ২৫০ জন নিহত হয়েছেন।

চলতি বছরের মার্চে দুই মাসের অস্ত্রবিরতি ভেঙে পড়ার পর গাজায় সব ধরনের ত্রাণ সহায়তা বন্ধ করে দেয় ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার বলেন, ‘গাজায় অনেক মানুষ অনাহারে ভুগছে।’

দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, ‘গিডিয়নের রথ’ অভিযানের মাধ্যমে আইডিএফ গাজার নির্দিষ্ট এলাকাগুলো দখল করে সেখানে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করবে, বেসামরিক লোকদের দক্ষিণে সরিয়ে নেবে, হামাসকে দমন করবে এবং ত্রাণ সহায়তা যেন হামাসের হাতে না পড়ে, তা নিশ্চিত করবে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু চলতি মাসের শুরুর দিকে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘গাজায় প্রবেশ করে এলাকা দখল ও নিয়ন্ত্রণে’ নিতে প্রস্তুতি চলছে। তবে এই অভিযান ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্থগিত ছিল। ট্রাম্প শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্য ত্যাগ করেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ফোলকার তুর্ক সতর্ক করে বলেছেন, ইসরায়েলের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।

তিনি বলেন, নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে মানুষদের জোর করে স্থানান্তর, বিস্তৃত এলাকাজুড়ে বোমা বর্ষণ ও মানবিক সহায়তা বন্ধের মাধ্যমে গাজায় স্থায়ীভাবে জনসংখ্যার কাঠামো পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে—যা আন্তর্জাতিক আইনের বিরুদ্ধে এবং জাতিগত নিধনের সমতুল্য।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, গাজার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন।

খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালে কর্মরত ব্রিটেনের পুনর্গঠনমূলক সার্জন ভিক্টোরিয়া রোজ বিবিসি রেডিও ৪-এ বলেন, আমরা সবাই শারীরিক ও মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। আমাদের সবার ওজন অনেক কমে গেছে।

তিনি বলেন, শিশুরা অত্যন্ত দুর্বল। অনেকের দাঁত পড়ে যাচ্ছে। গুরুতর পুড়ে যাওয়া শিশুদের মধ্যে সংক্রমণের হার বেশি। অপুষ্টির কারণে সুস্থ হওয়ার ক্ষমতাও কমে গেছে।

জাতিসংঘ-সমর্থিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গাজার জনগণ এখন দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত ঝুঁকিতে রয়েছে। যদিও ইসরায়েল বারবার গাজায় খাদ্য ঘাটতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের এক সীমান্ত হামলার পর ইসরায়েল হামাসকে ধ্বংস করতে সামরিক অভিযান শুরু করে। ওই হামলায় প্রায় ১২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জন জিম্মি হন। বর্তমানে হামাসের হাতে এখনও ৫৭ জন জিম্মি রয়েছে। জবাবে ইসরায়েলি সামরিক অভিযান গাজার জনগণকে উদ্বাস্তুতে পরিণত করেছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

Leave a comment






Related News

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *