Main Menu

বিএসএফ’র কারণে সিলেট ভাসবে ভয়াবহ বন্যায়

দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্তঘেঁষা জনপদ জকিগঞ্জ। ভারতের বরাক নদী জকিগঞ্জের আমলসীদ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে সুরমা-কুশিয়ারা নামধারণ করে প্রবাহিত হয়েছে। নদী দুটির প্রায় ৬৬ কিলোমিটার অংশ সীমান্ত নদী হিসেবে পরিচিতি। গত ২০২২ ও ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় সুরমা-কুশিয়ারার বাঁধের (ডাইকের) অন্তত ৩০টি স্থান ভেঙে পানি প্রবেশ করে।

বন্যা পরবর্তী সময়ে বাঁধ মেরামত করতে গেলে ভারতের সীমান্তরক্ষী বিএসএফ’র বাঁধার সম্মুখিন হতে হয় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো)। বিএসএফ’র বাঁধার কারণে মাটি ফেলা সম্ভব না হওয়ায় অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে আছে সুরমা-কুশিয়ারার বাঁধ। এতে আগামী বর্ষায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ২০২২ ও ২০২৪ সালে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর প্রায় অর্ধশত স্থানের বাঁধ ভেঙে কয়েক দফা বন্যায় প্লাবিত হয় জকিগঞ্জ উপজেলা। বন্যা পরবর্তী সময়ে বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেয় পাউবো। দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারও নিয়োগ দেওয়া হয়। কিন্তু বাঁধে মাটি ফেলার কাজ শুরু হলে বাঁধা দেয় বিএসএফ। দফায় দফায় বাঁধার মুখে বন্ধ হয়ে যায় বাঁধ মেরামতের কাজ।

পাউবো জানায়, কুশিয়ারার ৪১ কিলোমিটার ও সুরমার ২৫ কিলোমিটার আন্ত:সীমান্ত নদী। আইন অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতরে কৃষি কাজ, মাছ আহরণ ও পানি ব্যবহারসহ কিছু কাজ করার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু স্থাপনা নির্মাণের কোন বিধান নেই। তবে অতীতে নদীর বাঁধ নির্মাণের কাজে কখনো বিএসএফ বাঁধা দেয়নি। বন্যায় সুরমা-কুশিয়ারার যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দেয় শুষ্ক মৌসুমে পাউবো সেসব স্থানে মাটি ফেলে বাঁধ নির্মাণের কাজ করে। কিন্তু এবছর বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে বিএসএফ বাঁধা দেয়। কোনভাবেই তারা বাঁধ মেরামতের জন্য মাটি ফেলতে দেয়নি।

সরেজমিনে জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ছবড়িয়া এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, কুশিয়ারা নদীর বাঁধের বিশাল অংশ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। ২০২২ ও ২০২৪ সালের বন্যায় বাঁধের বিশাল অংশ ভেঙে গেছে। স্থানীয় লোকজন ভাঙা বাঁধে মাটি ও বালুর বস্তা ফেলে রেখেছেন।

ছবড়িয়া এলাকার আবদুল করিম জানান, বাঁধ মেরামতের কাজ শুরু করলেই বিএসএফ বাঁধা দেয়। বাঁধার কারণে এবছর শুষ্ক মৌসুমে বাঁধে মাটি ফেলার কাজ করতে না পারায় এলাকার লোকজন আতঙ্কে আছেন। বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ভেঙে এলাকায় পানি ঢুকে ঘরবাড়ি ও ফসল তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন স্থানীয় লোকজন।

জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ জানান, কুশিয়ারা নদীর ছবড়িয়া, ছয়লেন, মাইজকান্দি, সষ্যকুড়ি, বাখরশাল, মানিকপুর, রারাই এবং সুরমা নদীর বাল্লা, শরীফাবাদ ও হাজীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় বাঁধ অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। বিএসএফ’র বাঁধার কারণে বাঁধ মেরামত করতে না পারায় আগামী বর্ষায় বিনা বাঁধায় পানি ঢুকবে। এতে উপজেলাজুড়ে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হবে। ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ ফসলহানী ঘটবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, বিএসএফ’র বাঁধার কারণে সুরমা ও কুশিয়ারার অন্তত ৩০টি স্থানে বাঁধ নির্মাণের কাজ করা যাচ্ছে না। এক্সেভেটর ও ড্রাম ট্রাক নিয়ে বাঁধে মাটি ভরাটের কাজ করতে গেলেই বিএসএফ বাঁধা দিচ্ছে। ফলে বাধ্য হয়ে বাঁধ নির্মাণের কাজ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে আগামী বর্ষায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.