Main Menu

ক্যামেরা আতঙ্কে কুমিল্লার দর্শনীয় স্থান

ভ্রমণপিপাসুদের আগ্রহের প্রথম চাহিদা কুমিল্লার পর্যটন নগরী কোটবাড়ি। ঈদকে ঘিরে জমে উঠেছে পর্যটন নগরী। তবে পর্যটনে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে ফটোগ্রাফার আতঙ্ক। পর্যটকদের হয়রানি করে ছবি তুলে টাকা হাতিয়ে নিতে একটি চক্র তৈরি হয়েছে। এদিকে একটি সূত্র বলছে, দায়িত্বশীল কর্মকর্তার অনুমতি ছাড়া কেউ সংরক্ষিত এলাকায় প্রবেশ করে পর্যটক হয়রানি করতে পারবে না।

সূত্র বলছে, কুমিল্লার পর্যটন আগ্রহের স্থানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় কুমিল্লার কোটবাড়ির শালবন বিহার, রূপবান মুড়া, ইটাখোলা মুড়া, ময়নামতি জাদুঘর ও পার্শ্ববর্তী বৌদ্ধ বিহার (মন্দির)। এ ছাড়া বেসরকারি অনেক রিসোর্ট ও পার্ক এই জেলায় পর্যটকদের আকৃষ্ট করছে।

জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরেই সরকারের প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর পরিচালিত কুমিল্লার শালবন বিহার, রূপবান মুড়া, ইটাখোলা মুড়া, ময়নামতি জাদুঘর ও পার্শ্ববর্তী বৌদ্ধ বিহারে (মন্দির) সক্রিয় হয়ে উঠেছে একটি চক্র। এই চক্রের নাম ক্যামেরা চক্র।

স্থানীয় বাসিন্দা ও ঘুরতে আসা পর্যটকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঘুরতে আসা পর্যটকদের পর্যটন কেন্দ্রে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই টার্গেট করে চক্রটি। গলায় ক্যামেরা ঝোলানো আর কাঁধে ব্যাগ নিয়ে ঘোরাফেরা করা এই সিন্ডিকেটের টার্গেট ভ্রমণে আসা তরুণ-তরুণী, পরিবার নিয়ে ঘুরতে আসা পর্যটক ও বিশেষ করে নারী পর্যটক।

ছবিঃ আব্দুর রশিদ

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় অন্তত ১০ জন পর্যটকের। তাদের মধ্যে কুমিল্লার বরুড়া থেকে আসা আবু ইউসুফ জানান, প্রতি ছবি ১০ টাকা করে তুলে দেওয়ার প্রলোভন দেখায় তারা। পরে পাঁচটি ছবির কথা বলে ২০ থেকে ৩০টি কখনও ১০০টি পর্যন্ত তুলে সবগুলোর টাকা দাবি করে। এ ছাড়া যদি কেউ ছবি তোলার জন্য রাজি না হয় তাহলে দূর থেকে অনুমতি ছাড়া ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবেন বলেন হুমকি দেন। বেশিরভাগ এই চক্রের খপ্পরে পড়েন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যদি এভাবে চলতে থাকে তাহলে মানুষ এসব স্থানে আসতে আগ্রহ হারাবে।

চক্রের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তারা জানান, পর্যটন কেন্দ্রে প্রফেশনাল ফটোগ্রাফারদের ঢোকার অনুমতি নেই। তাই অনেক কায়দা করে কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করেই ঢুকতে হয়। তার জন্য কমিশনও দিতে হয়।

চক্রের কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, ‘হাতে ক্যামেরা নিয়ে ঢুকতে নিষেধ আছে। আমরা শপিং ব্যাগে বা স্কুল ব্যাগে করে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশ করি। পরে ছবি তুলে দিই। তবে কাউকে হয়রানির অভিযোগ মিথ্যা। ঈদের সময় মানুষ বেশি হবে, আয়ও ভালো হবে। এখানে প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন ছবি তুলি। সবাই স্থানীয়।’

ইটাখোলা মুড়ায় গিয়ে দেখা যায়, এক নারী পর্যটকের সঙ্গে কথা বলছেন একজন ফটোগ্রাফার। কাছে গিয়ে জানা গেছে, তিনি ৫ টাকায় ছবি তুলে দেবেন বলে রাজি হলেও এখন ১০ টাকা করে দাবি করছেন। ওই ফটোগ্রাফারের অভিযোগ ছবিগুলো সুন্দর হয়েছে তাই বেশি টাকা দিতে হবে।

কমিশন নেওয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন উল্লেখ করে কুমিল্লার ময়নামতি জাদুঘরের কাস্টোডিয়ান হাসিবুল হাসান সুমি বলেন, ‘আমরাও খবর পেয়েছি চক্রটি সক্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করেছি।’

কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আমরা সতর্ক করছি। তারা সবাই স্থানীয়। তাই স্থানীয় মুরব্বিদের ডেকে ওই চক্রের সদস্যদের সতর্ক করেছি। টুরিস্ট পুলিশের সমন্বয়ে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে কুমিল্লা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালকের কার্যালয়ের আঞ্চলিক পরিচালক এম সাইফুর রহমান বলেন, ‘এই ক্যামেরা চক্রের বিরুদ্ধে আমি এর আগেও জোরালো অভিযোগ পেয়েছি। এরা বিনা অনুমতিতে ঢুকে যায়। আমি যখন সেখানে যাই আগেই তারা খোঁজ পেয়ে যায়। আমি গিয়ে আর কাউকে পাই না। জানি না কীভাবে খোঁজ পায়।’

তিনি বলেন, ‘কমিশন নেওয়ার কথা আমি আগে শুনিনি। যদি এমনটি হয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাছাড়া এটা কাস্টোডিয়ানের দায়িত্বে আছে। আমি খুব শক্তভাবে উনাকে দিয়ে পরিচালনা করছি। এমনটি হওয়ার কথা নয়। আর যদি আমরা তাৎক্ষণিক অভিযোগ পাই তাহলে অবশ্যই তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.