Main Menu

গাছে চড়ে অনলাইনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করলেন কলেজছাত্র

অনলাইন ডেস্কঃ সরকারি শাহ সুলতান কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের এক পরীক্ষার্থী গাছে চড়ে অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে বাংলা বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। এছাড়া কেউ খড়ের পালা আবার কেউ উচু ঢিবিতে উঠেও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন।

অনলাইন প্লাটফর্ম জুমে মৌখিক পরীক্ষা নিতে গিয়ে নেটওয়ার্ক দুরাবস্থায় শিক্ষার্থীদের অবস্থা এবং নিজের অভিজ্ঞতার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করেছেন সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন।

গত মঙ্গলবার (২২ জুন) ‘গাছে চড়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ’ শিরোনামে এই স্ট্যাটাস দেয়ার পর সেটি ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন তার স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘গতকাল বগুড়া সরকারি শাহ সুলতান কলেজে (জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে) চতুর্থ বর্ষ অনার্স বাংলা বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষা নিচ্ছিলাম জুম প্লাটফর্মে। পরীক্ষা চলাকালীন হঠাৎ লক্ষ্য করি এক শিক্ষার্থী গাছে চড়ে ভাইভা দিচ্ছে! বোর্ডের সকলের দৃষ্টি তখন তার দিকে। বোর্ডের অন্য সদস্যদের মতো আমিও তখন শঙ্কিত!

“শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞেস করলাম- তুমি গাছে ওঠেছো কেন? সে বললো, স্যার আমার গ্রামে ঠিকমতো নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না! পরীক্ষা যদি মিস যায়! তাই বাধ্য হয়ে গাছে চড়েছি! সকালে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। গাছ ভেজা ছিল। যে কোনো সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারতো!”

তিনি আরও লেখেন, সবাই মিলে দ্রুত ওকে গাছ থেকে নামালাম। ওর কথা যে মিথ্যে নয় আরও কয়েকজনের ভাইভা নিতে গিয়ে তার প্রমাণ পাওয়া গেল। কেউ বাড়ির বাইরে খড়ের গাদায়, কেউ মাচাংয়ে বা ফাঁকা মাঠে, কেউ বা বাঁশ ঝাড় ও উঁচু ঢিবির ওপর দাঁড়িয়ে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণের চেষ্টা করেছে। ওদের কথা আমরা শুনি তো ওরা আমাদের কথা শুনতে পায় না! যেটুকু পাওয়া যায় সেটাও ভাওয়াইয়া গানের সুরের মতো ভাঙা ভাঙা! আমাদের গ্রামাঞ্চলে ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক ও গতি কেমন আমরা সবাই জানি।

“আমরা ৫জির স্বপ্ন দেখছি, কিন্তু ৪জির সেবাই ঠিকমতো দিতে পারিনি! আমাদের ৬০/৭০ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনও খুব কষ্ট করে পড়ালেখা করে। কেউ পার্টটাইম চাকরি করে, কেউ টিউশনি, কেউ বা গার্মেন্টসে শ্রম দেয়! অনার্সে ভর্তি হয় শত শত শিক্ষার্থী। কিন্তু ক্লাসে আসে হাতে গোনা কয়েকজন! এদের আমরা না দিতে পারছি ঠিকমতো পাঠ, না পারছি জীবনের শিক্ষা দিতে! আর দক্ষ মানবসম্পদ সে এক অধরা স্বপ্ন! আমাদের শিক্ষার্থী আমাদের শিখিয়ে গেল, গাছে শুধু সে একা ওঠেনি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাও উঠেছে!”

স্ট্যাটাসের বিষয়ে অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, ছেলেটি বড়ুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার প্রত্যন্ত কোন গ্রামের। সত্যি কথা বলতে আমাদের ইন্টারনেট বা মোবাইল নেটওয়ার্ক এখনও গ্রামাঞ্চলে সেভাবে কাজ করে না। আর ওই ছেলেটার গ্রামের ওদিকে সম্ভবত টাওয়ার ছিল না যার জন্য নেটওয়ার্ক জটিলতার কারণেই সে গাছে উঠেছিল যাতে করে পরীক্ষায় নির্বিঘ্ন হয়। এরকম ভাইভা নিতে গিয়ে খুব মনোকষ্ট পেয়েছি। যার জন্য ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দেয়া।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.