Main Menu

মুসলিমদের থেকে উইঘুরকে আড়াল করতে চীনের যত অপচেষ্টা

চীনের শিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের ওপর ‘পুনঃশিক্ষণ’ নামে দেশটির সরকার যে হত্যাকাণ্ড ও মানবতাবিরোধী অপরাধ করছে তা থেকে মুসলিম নেতৃবৃন্দের নজর সরিয়ে রাখতে কৌশলে উন্নয়নের মুলা ঝুলাচ্ছে শি চিন পিং সরকার। অন্যদিকে অর্থনৈতিক সুবিধার কথা বিবেচনা করে সে ফাঁদে পা দিচ্ছে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্ব করা নেতৃবৃন্দগণ।

বিশ্বে মুসলিমদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দেখভালের জন্য প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) কাশ্মির ইস্যুতে নিজেদের অবস্থান ব্যক্ত করে। যার পেছনে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করে দিল্লি। সভায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের মুসলমানদের প্রতি সর্বসম্মত সমর্থন জানায়। এছাড়া কাশ্মিরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানিয়ে ‍বিবৃতি দেয় সংস্থাটি।

কিন্তু চীন নির্মিত বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ এর সুবিধা নিতে উইঘুর মুসলিমদের উপর যে অত্যাচার ও গণহত্যা চালানোর জোরালো দাবি উঠেছে সে বিষয়ে চীনকে চাপ দিচ্ছে না সংস্থাটি। মুসলিমদের নিয়ে তাদের ভাবনা এখানে অর্থনৈতিক সুবিধার কাছে মারত্মভাবে আহত হয়েছে! ঠিক এই জায়গাটিতে দ্বিমুখী আচরণ করছে বিশ্বে মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্বে থাকা সর্বোচ্চ এ সংস্থাটি।

এত গেল অর্থনৈতিক আধিপত্যের গল্প। এর বাইরেও বিবদমান পক্ষের বাইরে থেকেও এর ফল ঘরে তুলেছে বেইজিং। পশ্চিমা বিশ্ব যখন মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে শতবর্ষব্যাপী চলে আসা রাজতন্ত্রের পরিবর্তে গণতন্ত্রব্যবস্থা চালুতে উদগ্রীব, তখন বিশ্ব মঞ্চে হাজির হয় চীন। চিন পিং সরকারের হাত ধরেই রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও কিউবার মতো দেশের কর্তৃত্ববাদী শাসকরা আরও বেশি সুসংহত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।

মধ্যপ্রাচ্যের বিবদমান দুটি দেশ- সৌদি ও ইরান আঞ্চলিক পরাশক্তির হওয়ার দৌড়ে সংঘাতে লিপ্ত। তারা মধ্যপ্রচ্যকে সুসংহত করায় কখনোই মনোনিবেশ করেনি। এ সুযোগে ইরানকে পাশে রেখে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিয়েছে চীন। পাশাপাশি এ প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া সৌদির সাথেও সময়ে সময়ে দর কষাকষি করেছে চীন। যার বড় উদাহরণ সৌদির ক্রাউন প্রিন্স সালমানের চীন সফর।

অবস্থাদৃষ্টে এমন মনে হচ্ছে এই দুটি দেশই যেন চীনকে পাশে পেতে জাতীয় ও আঞ্চলিক স্বার্থকে বিসর্জন দিতে দুইবার ভাবছে না। যার একটা প্রভাব সরাসরি মুসলিম বিশ্বের উপর পড়ছে। আর তার প্রতিফলন হিসেবে ওআইসির দ্বিমুখী ভূমিকার উদাহরণ টানা যায়।

এখানে আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা যেতে পারে, ইরানের সাথে চীনের নিবিড় সম্পর্ক এবং পাকিস্তানের চীনমুখী পররাষ্ট্রনীতি। পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সৌদি আরব থেকে বিপুল পরিমাণি ঋণ নিয়ে তা পরিশোধে বেইজিংয়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, যা সৌদি-পাকিস্তান সম্পর্কের উষ্ণতা ছিন্ন করে ইসলামাবাদকে বেইজিংমুখী করেছে। সৌদির উপর ইরানের আরেক পশলা বিজয়ের নামান্তর। চীন একাই পুরো সমীকরণ পরিবর্তন করে দিয়েছে। আর স্বার্থের সেই ঘোরে মুসলিম দেশ হয়েও তারা উইঘুরদের জন্য ফলপ্রসূ কিছু করতে ব্যর্থ হবে এটাই স্বাভাবিক।

এমন পরিস্থিতি তাদের এবং ওআইসির উপর ভরসা করে চীনের গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের লাগাম টানা সম্ভব নয়। তাই জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের উচিত যৌথ উদ্যেগের মাধ্যমে এর লাগাম টেনে ধরা। বেইজিং যেখানে তাদের নৈতিকতার স্খলন ঘটিয়েছে, জাতিসংঘকে সাথে নিয়ে ওয়াশিংটনের উচিত সেখানে মানবতার কেতন পুনরুত্থিত করা। ভাষান্তর- উইঘুর আন্দোলন ফাউন্ডেশনের সহযোগী লেখক জর্জিয়া লেদারডেল গিলহলি এর কলাম থেকে।

 

সূত্র: আমাদের সময়

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.