1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
নেত্রী সেজে পতিতা ও মাদক ব্যবসা
       
রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ০১:০৭ অপরাহ্ন

নেত্রী সেজে পতিতা ও মাদক ব্যবসা

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

যুব মহিলা লীগের পদ বাগিয়ে অভিজাত এলাকায় জমজমাট নারী ব্যবসাসহ ভয়ঙ্কর সব অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ। নিজেকে পরিচয় দিতেন ক্ষমতার রাঘববোয়ালদের কর্মী হিসেবে। রাজনৈতিক কর্মসূচিতে গিয়ে নেতাদের ফুল দিয়ে সেই ছবিরও অপব্যবহার করতেন তার সব খারাপ কাজে। শুধু গত এক মাসেই এই নারী রাজধানীর অভিজাত এক পাঁচ তারকা হোটেলে বিশাল অঙ্কের বিল পরিশোধ করেছেন। আর এ অর্থ খরচের কারণেই গোয়েন্দাদের চোখ পড়ে পাপিয়ার ওপর। একের পর এক বেরিয়ে আসতে থাকে তার সব অপকর্মের কাহিনি।

জানা গেছে, সব পাঁচ তারকা হোটেলেই ছিল পাপিয়ার এসকর্ট ব্যবসা। আলোচিত এই নারী হচ্ছেন নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাাদক। তিনি নিজেকে কেন্দ্রীয় নেত্রী হিসেবেও পরিচয় দিতেন। সর্বশেষ প্রচার করতেন সংরক্ষিত এমপি পদ পাচ্ছেন। কিন্তু তা না পেলেও থেমে ছিল না তার অপরাধমূলক কাজকর্ম। গতকাল সকালে স্বামী মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন, সাবিক্ষর খন্দকার (২৯), শেখ তায়্যিবা (২২)সহ আরও দুজন বিদেশে যাওয়ার প্রাক্কালে বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে আটক করেছে র‌্যাব। শুরুতে পাপিয়া প্রথমে নিজের দাপুটে অবস্থানের পরিচয় দেন। তবে কোনো কিছুতে গুরুত্ব না দিয়ে পাপিয়ার কাছ থেকে র‌্যাব কর্মকর্তারা উদ্ধার করতে থাকেন অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেছে, এই পাপিয়া হেন অপকর্ম নেই, যার সঙ্গে জড়িত নন।

পাঁচ তারকা হোটেলে নারী ও মাদক ব্যবসাই তার আয়ের মূল উৎস। দেশের অভিজাত কিছু মানুষ ও বিদেশিরাই এর গ্রাহক। ইন্টারনেটে স্কট সার্ভিস খুলে বসে খদ্দেরদের কাছে তাদের চাহিদামতো সুন্দরী তরুণী পাঠাতেন। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষিত সুন্দরী তরুণীদের সংগ্রহ করতেন। একপর্যায়ে তাদেরকে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের শয্যাসঙ্গী হতে বাধ্য করতেন পাপিয়া। এরই মধ্যে পাপিয়ার কাছ থেকে গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত অনেক ধনাঢ্য ও প্রভাবশালী ব্যক্তির অন্তরঙ্গ দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করেছেন র‌্যাব কর্মকর্তারা।

গোপন ক্যামেরায় মেয়েদের ছবি ধারণ করে তাদের নিয়মিতভাবে ব্ল্যাকমেইল করতেন তিনি। পাপিয়ার কাছ থেকে উদ্ধারকৃত একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়- পাপিয়া বসে আছেন বাইজিবাড়ির সর্দারনির মতো। তার হাতে মোটা একটি বেতের লাঠি। তার কব্জায় থাকা মেয়েরা কথা না শুনলে পেটাতেন। পাপিয়া একাধিক অভিজাত হোটেলের রুম ভাড়া নিতেন নামে-বেনামে। সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত একটি হোটেলের প্রেসিডেনশিয়াল স্যুটে তার নামে পাওয়া গেছে। এই পাঁচ তারকা হোটেলে বিভিন্ন মেয়েকে পাপিয়া নিজেই নিয়ে যেতেন। তাদেরকে দিয়ে করাতেন অবৈধ দেহব্যবসা। এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদে সবকিছুই কবুল করেছেন পাপিয়া।

গত ১২ অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ৫৯ দিন প্রেসিডেনশিয়াল স্যুট ভাড়া ছিল পাপিয়ার নামে। ওই ৫৯ দিনে তিনি ৮১ লাখ ৪২ হাজার টাকা নগদ (ক্যাশ) পরিশোধ করেছেন। পাপিয়ার স্বামী সুমন চৌধুরী বেশির ভাগ সময় থাইল্যান্ডে অবস্থান করলেও গত থার্টিফার্স্ট নাইটে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে অবস্থান করেন। ওই রাতে তার কক্ষেও চার-পাঁচ জন সুন্দরী নারী ছিল বলে গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে। পাপিয়ার সব কর্মকান্ডের অন্যতম অংশীদার তার স্বামী সুমন। একসময় নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ছিলেন সুমন।

পরে ছিলেন নরসিংদীর প্রয়াত পৌর মেয়র লোকমানের বডিগার্ড। র‌্যাব-১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফি উল্লাহ বুলবুল জানান, তার বার্ষিক আয় ১৯ লাখ টাকা হলেও পাপিয়া গত তিন মাসে শুধু একটি পাঁচ তারকা হোটেলে ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা বিল পরিশোধ করেছেন! এ ছাড়া তার নামে একটি হোটেলের প্রেসিডেন্ট স্যুট সব সময় বুকড থাকত। ওই হোটেলেই তার নিয়ন্ত্রণে ছিল সাতটি মেয়ে। গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, নগদ ২ লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ১১ হাজার ৯১ ইউএস ডলার, বিভিন্ন দেশের মুদ্রাসহ বিপুল পরিমাণ জাল মুদ্রা জব্দ করা হয়।
র‌্যাবসূত্র ও আমাদের নরসিংদী প্রতিনিধির পাঠানো তথ্যানুযায়ী, নরসিংদী শহর ছাত্রলীগের সাবেক আহ্বায়ক মফিজুর রহমান চৌধুরী সুমন। প্রয়াত মেয়র লোকমান হোসেনের দ্বারা রাজনীতিতে হাতেখড়ি। শৈশব থেকেই সন্ত্রাস কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন সুমন। ২০০১ সালে পৌরসভার কমিশনার মানিক মিয়াকে যাত্রা প্যান্ডেলে গিয়ে হত্যার অভিয়োগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওই হত্যাকান্ডের এজাহারভুক্ত আসামি সুমন ওরফে মতি সুমন। হত্যাকান্ড ও সন্ত্রাস কর্মকান্ডের ওপর ভর করে তার উত্থান।
বছর দশেক আগে প্রেমের সম্পর্কের পর পাপিয়া চৌধুরীকে বিয়ে করেন সুমন। লোকমান হত্যাকান্ডের পর বর্তমান মেয়র কামরুজ্জামানের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন। মেয়রের ক্যাডার হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। বছর তিনেক পর পাপিয়া চৌধুরীর ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়। ওই সময় পাপিয়াকে গুলি করে সন্ত্রাসীরা। এরপর তারা নরসিংদী ছেড়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। ঢাকায় এমপি সাবিনা আক্তার তুহিনের সঙ্গে সখ্য গড়ে ওঠে। এর পর থেকে পাপিয়া চৌধুরী ও তার স্বামী সুমন ওরফে মতি সুমন রাজধানীর সাবেক এক সংরক্ষিত এমপির আস্থাভাজন হয়ে ওঠেন।
ওই এমপির সঙ্গে তার গাড়ির ব্যবসা আছে বলে জানা গেছে। নরসিংদীর শালিদা এলাকায় আরএসএম কার ওয়াশ নামে একটি গাড়ির সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। নরসিংদীতে রয়েছে সুমন ও তার স্ত্রী পাপিয়ার বিশাল কর্মীবাহিনী। নরসিংদী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী যারা তার অনুসারী তারা ‘কিউ অ্যান্ড সি’ ট্যাটু ব্যবহার করেন। মাঝেমধ্যেই তারা বিশাল শোডাউন দেন আওয়ামী লীগের মিছিল-মিটিংয়ে। মাস্টারমাইন্ড সুমনের সন্ত্রাসের পাশাপাশি অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গেও সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।যত সম্পদ : নরসিংদী জেলা শহরে বাগদী মারকাজ মসজিদ এলাকায় একটি পাকা ও আরেকটি সেমিপাকা টিনশেড বাড়ি আছে পাপিয়ার। সেমিপাকা টিনশেড বাড়িটি তিনি এবং তার অনুসারীরা বিরোধীদের শায়েস্তা করার জন্য টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহার করেন। একই এলাকার বেলদী মোড়ে প্রায় ২ কোটি টাকা মূল্যের ১০ শতাংশ এবং আরেকটি ৬ শতাংশের মূল্যবান দুটি প্লট রয়েছে। তার শ্বশুরবাড়ি ব্রাহ্মণদীতে স্বামীর দোতলা একটি বাড়ি আছে।

রাজধানীর ফার্মগেট ইন্দিরা রোডে ‘রওশন ডমিনো রিলিভো’ বিলাসবহুল ভবনে তার ও তার স্বামীর নামে দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে। এ ছাড়া তার কালো ও সাদা রঙের দুটি হায়েস মাইক্রোবাস, একটি হ্যারিয়ার, একটি নোয়া ও একটি ভিজেল কার আছে। নরসিংদী শহরে পাঁচটি মোটরসাইকেল রয়েছে বলে জানা গেছে। মোটরসাইকেলগুলো তার অনুসারীরা ব্যবহার করেন। নরসিংদী জেলা শহরে সুমন চৌধুরীর কেএমসি কার ওয়াশ নামে একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আছে। কার ওয়াশ ব্যবসার আড়ালে এখানে মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাস কর্মকান্ড চলে। তার স্বামীর মালিকানায় থাইল্যান্ডে একটি বারও আছে।

নরসিংদীর এসএমই শাখায় গত বছরের জুন পর্যন্ত ১ লাখ ২৩ হাজার ৮২৯ টাকা জমা ছিল। শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের নরসিংদী শাখায় পাপিয়ার হিসাবে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭০ টাকা ছিল। সিটি ব্যাংকে তার তিনটি হিসাব নম্বরের খোঁজ পাওয়া যায়। এর একটিতে ১ লাখ, অন্য দুটিতে ৫০ হাজার ও ১ লাখ ২০ হাজার টাকার ডিপোজিট পাওয়া যায়। তার সিটি ব্যাংকের একটি এমেক্স গোল্ড ক্রেডিট কার্ড ও একটি এমেক্স গ্রিন ক্রেডিট কার্ড রয়েছে। রাজধানীর এফডিসি গেটের সঙ্গে ‘কার এক্সচেঞ্জ’ নামে তার একটি গাড়ির শোরুম আছে বলে জানা গেছে।

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.