1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
সিলেটে ডাবল মার্ডার রহস্য: এ যেন ‘ক্রাইম থ্রিলার’
       
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

সিলেটে ডাবল মার্ডার রহস্য: এ যেন ‘ক্রাইম থ্রিলার’

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : রবিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২০

কৌশল অবলম্বন করেও পার পায়নি ঘাতকরা। একদিনের মধ্যেই ‘ডাবল মার্ডার (জোড়া খুন)’ রহস্য উদঘাটন করেছে সিলেট মহানগর পুলিশ। ঘাতকদেরও ধরা হয়েছে। অভিযুক্ত ঘাতকরা স্বীকারোক্তিও দিয়েছেন আদালতে। যেভাবে খুনের ঘটনা ঘটেছে, যেভাবে খুনকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে এবং পুলিশ যেভাবে রহস্য উন্মোচন করেছে, তা কোনো ‘ক্রাইম থ্রিলার’ সিনেমার কাহিনীর চেয়ে কোনো অংশে কম নয়!

গেল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে সিলেট মহানগরীর লালমাটিয়া এলাকায় একটি ট্রাকের মধ্য থেকে দুটি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ট্রাকটি এমনভারে রাখা হয়েছিল, যাতে মনে হয় এটি দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ঘাতকরা দুর্ঘটনা সাজাতে চাইলেও ট্রাকটি ক্ষতিগ্রস্থ না হওয়ায় ও ট্রাকের চাকা না থাকায় প্রথম সন্দেহ দানা বাঁধে পুলিশের মনে। এছাড়া ট্রাকের ভেতর লাশ দুটি এমনভাবে রাখা ছিল, যা দেখে সেটি দুর্ঘটনা মনে হয়নি তাদের। এটিকে তাই হত্যাকাণ্ড ধরেই জোরেশোরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ট্রাকে পাওয়া একটি ইনভয়েসের সূত্র ধরে এগিয়ে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়।

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে পৌনে ১১টার দিকে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। লালমাটিয়া এলাকাস্থ সিটি করপোরেশনের ময়লার ভাগাড়ের দক্ষিণ দিকের প্রবেশপথে সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়কে একটি ট্রাক (ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৪০৩০) পাওয়া যায়। ট্রাকের ভেতর (সামনে চালক ও হেলপার বসার স্থান) দুটি লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

পরে অনুসন্ধানে পুলিশ জানতে পারে, লাশ দুটি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা থানার বাসবাড়ির বাগদী গ্রামের মো. কাদেরের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (২৫) ও দীন মোহাম্মদের ছেলে মো. রাজুর (২৫)।

সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার জেদান আল মুসা জানান, শুক্রবার খবর পেয়ে পুলিশের একটি বড় টিম লালমাটিয়ার ওই ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থলের পার্শ্বস্থ দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙে ট্রাকটি চালিত অবস্থায় এমনভাবে রাখা হয়েছিল, যাতে দুর্ঘটনার নাটক সাজানো যায়। কিন্তু ট্রাকটি ক্ষতিগ্রস্ত না হওয়ায় এবং ট্রাকের চাকা না থাকায় পুলিশের মনে সন্দেহের দানা বাঁধে। এছাড়া ট্রাকের ভেতর লাশ দুটি এমনভাবে পড়েছিল যাতে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বলে মনে হয়নি।

তিনি জানান, পরিচয় সনাক্ত করতে পুলিশ লাশ দুটির ফিঙ্গারপ্রিন্ট সংগ্রহ করে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির সময় লাশ দুটির গলায় চিহ্ন থাকায় প্রাথমিকভাবে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হয়।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, ট্রাকে তল্লাশির সময় একটি মালামালের ইনভয়েস (চালান) পাওয়া যায়। এর মধ্যে কয়েকটি মোবাইল নাম্বার ছিল। এসব নাম্বারের সাহায্যে ট্রাক মালিক আতাউর রহমানের নাম্বার পাওয়া যায়। পুলিশ তার সাথে যোগাযোগ করে।

ট্রাক মালিক আতাউর পুলিশকে জানান, গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থেকে লুমিনাস এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে অটোরিকশার পার্টস নিয়ে গেল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে চালক জাহাঙ্গীর ও হেলপার রাজু রওয়ানা দেন। ওইদিন রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি (আতাউর) ফোন দেন জাহাঙ্গীরকে। কিন্তু ফোন রিসিভ করে ট্রাকের আগের চালক ইব্রাহিম তালুকদার জানান, চালক জাহাঙ্গর ঘুমিয়ে আছেন। এরপর ফের ফোন দেওয়া হলে জাহাঙ্গীরের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

পুলিশের কাছে ট্রাক মালিক আরো জানান, শুক্রবার সকালে ইব্রাহিম ফোন দেন তাকে (আতাউর)। ইব্রাহিম তাকে জানান, ট্রাকের চালক জাহাঙ্গীর তাকে (ইব্রাহিম) ও তার সহযোগী ফজর মিয়াকে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানাধীন আউশকান্দিতে নাস্তা করার সময় ফেলে চলে গেছেন।

ট্রাক মালিক আতাউর রহমানের কাছ থেকে এসব তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার দিনেই ইব্রাহিম তালুকদারের মোবাইল নাম্বার ট্র্যাক করে সিলেট নগরীর হুমায়ুন রশীদ চত্বরে অবস্থান সনাক্ত করে পুলিশ। তবে হুমায়ুন রশীদ চত্বরে অভিযান চালিয়ে তাকে ধরা যায়নি। পরে শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ইব্রাহিমের মোবাইল নাম্বারের অবস্থান বিমানবন্দর থানাধীন ধোপাগুলে পাওয়া যায়।

এসএমপি কর্মকর্তা জেদান আল মুসা জানান, পুলিশের একটি দল ধোপাগুল থেকে ইব্রাহিম তালুকদারকে গ্রেফতার করে। তিনি ধোপাগুলের ফৌজদার মিয়া তালুকদারের ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ইব্রাহিম তার সহযোগী ফজর মিয়ার কথা জানান। পরে ফজরের মোবাইল নাম্বার ট্র্যাক করে অবস্থান সনাক্ত করা হয় আম্বরখানায়। সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। ফজর মিয়া বিশ্বনাথের শ্বাসরাম গ্রামের রুস্তুম আলীর ছেলে।

এই পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, এ দুজন পুলিশের কাছে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেন। এছাড়া তাদেরকে আদালতে হাজির করা হলে সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তাদের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে মোগলাবাজার থানার ওসি আক্তার হোসেন শনিবার সিলেটভিউকে জানান, চুয়াডাঙ্গার আতাউর রহমানের ট্রাক চালাতেন সিলেটের ইব্রাহিম তালুকদার। গত বৃহস্পতিবার মালিক তাকে চাকুরিচ্যুত করে নতুন চালক জাহাঙ্গীরের কাছে ট্রাক হস্তান্তরের নির্দেশ দেন। গাজীপুরে ইব্রাহিমের কাছ থেকে জাহাঙ্গীর ট্রাক বুঝে নেন। পরে একটি কোম্পানির মালামাল নিয়ে সিলেটের উদ্দেশ্যে ট্রাক নিয়ে রওয়ানা হন জাহাঙ্গীর ও রাজু। সিলেটে আসার জন্য ট্রাকে ওঠেন আগের চালক ইব্রাহিম ও তার হেলপার ফজর। রাস্তায় পালাবদল করে ট্রাক চালানোর দায়িত্ব নেন ইব্রাহিম।

ওসি আরো জানান, হবিগঞ্জের মাধবপুরে আসার পর ট্রাকের ভেতর ঘুমন্ত অবস্থায় থাকা জাহাঙ্গীর মিয়া ও তার বন্ধু রাজুকে গলায় ফাঁস দিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করেন ইব্রাহিম ও ফজর। এরপর হবিগঞ্জের জগদীশপুর এসে ট্রাকের ১০টি চাকার মধ্যে চারটি খুলে ও ভেতরে থাকা আরেকটি মিলিয়ে মোট ৫টি চাকা জয়নাল মিয়ার কাছে বিক্রি করেন তারা। পরে চলে আসেন সিলেট নগরীর দক্ষিণ সুরমার লালমাটিয়ায়। সেখানে একটি দেয়ালের কিছু অংশ ভেঙে ট্রাকটিকে ধাক্কা লাগিয়ে দুর্ঘটনার নাটক সাজান ইব্রাহিম ও ফজর।

জোড়া খুনের ঘটনাকে দুর্ঘটনা হিসেবে সাজানোর চেষ্টা করলেও পুলিশের অনুসন্ধানী চোখে ধরা পড়ে যায় সব।

এদিকে, ট্রাকচালক জাহাঙ্গীর ও তার সহযোগী রাজুর ব্যবহৃত তিনটি ফোন দক্ষিণ সুরমার কোজাবাইন সাকিনের ফলিক মিয়ার ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ফলিক সম্পর্কে ফজর মিয়ার শ্বশুর। এছাড়া ট্রাকের চাকার ক্রেতা মো. জালাল মিয়াকেও আটক করা হয়েছে। তিনি হবিগঞ্জের মাধবপুরের উত্তর বেজুড়া গ্রামের আব্দুল বাছিরের ছেলে।

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.