Main Menu

রৌমারীতে বড়াইবাড়ী দিবস পালিত : রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি

২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল রক্তাক্ত হয়েছিলো বড়াইবাড়ী গ্রাম। এই তারিখে রাতের শেষভাগে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ গ্রামের ঘুমন্ত মানুষ ও বিডিআর ক্যাম্পের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। সেসময় তৎকালীন বিডিআর ক্যাম্প বর্তমান বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ক্যাম্প ও বড়াইবাড়ী ছিটমহল দখলে নেয়ার জন্য ভারতীয় বিএসএফের অপচেষ্টা রুখে দেয় বিডিআর জোয়ান ও সীমান্তবাসীরা।

স্থানীয়রা গ্রামটিকে বীর গ্রাম বড়াইবাড়ী নামকরণ করেন। তখন থেকে ওই গ্রামে প্রতিবছর সাবেক সংসদ সদস্য কুড়িগ্রাম-৪ আসনের রুহুল আমিন এমপি ও গ্রামবাসীর উদ্যোগে এ দিবসটি পালন করে আসছে।

আজ শুক্রবার পালিত হয়েছে ২৪তম বাড়াইবাড়ী দিবস। সাবেক বিডিআর সদস্য ঢাকা, সাবেক সেনাবাহিনীর সদস্য ঢাকা, সাবেক সংসদ সদস্য, স্থানীয় এলাকাবাসী, বিভিন্ন স্কুল কলেজ ও রাজনৈতিক দলসহ সবাই দিবসটি পালন করেন।

সেসময় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মাঝে সংঘর্ষের ঘটনায় ৩ বিডিআর জোয়ান ও ১৬ জন ভারতীয় বিএসএফ সদস্য নিহত হয়। গুলিবিদ্ধ হন ৬ বাংলাদেশী গ্রামবাসী। আর বিএসএফের মর্টার সেল ও আগুনে বড়াইবাড়ী ছিটমহল ধ্বংসস্তপে পরিণত হয়।

ওই ঘটনার পর থেকে বড়াইবাড়ী সীমান্তের মানুষ বড়াইবাড়ী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে। প্রতিবছরের ন্যায় র‌্যালি, আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল, তিনজন শহীদ বিডিআর পরিবার, পাঁচজন যোদ্ধাহত বীর সৈনিক, ঢাকা থেকে আসা (অব:) বিডিআর, সেনাবাহিনীর ১৫ জন সদস্যের মাঝে, প্রধান অতিথি ও সভাপতিকে প্রাথমিক শিক্ষা পরিবার রৌমারী কুড়িগ্রামের পক্ষ থেকে ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্মারক প্রদানসহ ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।

এসময় প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারসহ এলাকাবাসী সরকারের কাছে বড়াইবাড়ী দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি, পাঠ্য-পুস্তকে বড়াইবাড়ী দিবসের ইতিহাস লিপিবদ্ধ করণ, বড়াইবাড়ী গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি ক্লিনিক, জমি বাংলাদেশীয় রেকর্ডভুক্তকরণ, পর্যটন কেন্দ্র ও স্মৃতিসৌধ নির্মাণের দাবি জানান।

এসময় সাবেক সংসদ সদস্য রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- কর্নেল মো: জয়নাল আবেদীন (অব:)।

বিশেষ অতিথি প্রফেসর তসলিম উদ্দিন সাবেক অধ্যক্ষ সরকারি কলেজ ময়মনসিংহ, মেজর এম ডি জামাল হায়দার, কর্নেল কাজী জাকারিয়া, মেজর হুমায়ুন কবির, মেজর শাকিল নেওয়াজ, হান্নান শাহীন, মেজর আনিসুর রহমান, আজিজুর রহমান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য, রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক রৌমারী সদর ইউপি চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক উপজেলা বিএনপি, মোখলেছুর রহমান আহ্বায়ক চর রাজিবপুর উপজেলা বিএনপি, মোস্তাফিজুর রহমান রঞ্জু উপজেলা বিএনপি সদস্য সচিব, হায়দার আলী উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির।

অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আবু তালেব মাস্টারসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল বিএসএফ ও বিডিআরের মাঝে প্রায় ৪২ ঘণ্টার সম্মুখ লড়াইয়ে বড়াইবাড়ী ছিটমহলের ১৭৯টি বাড়িতে অগ্নি সংযোগ ঘটানো হয়। বিডিআরের সাথে সীমান্তবাসীর প্রবল প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় ভারতীয় বিএসএফ সদস্যরা।

যুদ্ধে বিডিআরের সদস্য নায়েক সুবেদার ওয়াহিদ মিয়া, সিপাহী মাহফুজার রহমান ও সিপাহী আব্দুল কাদের শহীদ হন। শহীদ তিনজনের স্মরণে ক্যাম্পের সামনে বাংলাদেশ সরকার স্মৃতিসৌধ ফলক নির্মাণ করে।

২০০৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি স্মৃতিফলকটি উদ্বোধন করেন তৎকালীন বিএনপি সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফজ্জামান বাবর।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.