Home » কুমিল্লা রেল ষ্টেশনের পাশে দই-চিড়া

কুমিল্লা রেল ষ্টেশনের পাশে দই-চিড়া

কুমিল্লা : দই-চিড়া, মুড়ি-মাখন-গুড়-নারকেল দিয়ে একসাথে মিশিয়ে খাওয়ায় একটা রীতি আচে বাঙালিদের। বিশেষ করে ভোজনপ্রিয়দের কাছে চিরচেনা খাবারের এই আয়োজনটা বেশ পরিচিত এবং মুখরোচক। বৈশাখ জৈষ্ঠ্য মাস মূলত মধূমাস হিসেবেই আমাদের কাছে পরিচিত। আর এই মাসের সকলের ঘরে আমের রস চিড়া-মুড়ি দই-গুড় নারকেল দিয়ে মেখে খাওয়ার একটা রীতি সেই যুগযুগান্তর ধরে চলে আসছে। তবে এই খাবারটি গত ৩০ বছরের অধিক সময় ধরে কুমিল্লা রেলওয়ে ষ্টেশনে ক্রেতাদের কাছে খুব সাশ্রয়ী মূল্য পরিবেশিত হচ্ছে।’

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশন। এখানে যারাই নানান প্রয়োজনে যান তারা হয়ত লক্ষ্য করে থাকেন স্টেশনে প্রবেশের রাস্তার ডানপাশে দই, চিড়া, মুড়ি খাওয়ার বেশ ভালো ব্যবস্থা করা হয়েছে। ষ্টেশনে দুটি দোকানের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন চিড়া-মুড়ি দইয়ের দোকানটি পুলিন চন্দ্র ঘোষের। কথা হয় দই চিড়া বিক্রেতা পুলিন চন্দ্র ঘোষের সাথে।
তিনি জানান, গত ৩০-৩২ বছর ধরে রেলস্টেশনের এ দোকানটিতে তিনি ভোজন রসিকদের জন্য দই-গুড়, চিড়া, নারকেলগুড়া, মাঠা-মাখন, কলার ব্যবস্থা করে চলছেন। ক্রেতারা দোকানে এসে অর্ডার করলেই প্লেটে করে পরিবেশন করেন। ৫০ টাকায় একজনের যথেষ্ঠ পরিমান হয়ে যায়। খাবার বেশ সুস্বাধু-পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্য সম্মত। প্রায় সব বয়সী ক্রেতাদের আগমন ঘটে পুলিন চন্দ্র ঘোষের দোকানে ক্রেতাদের মধ্যে সন্ধ্যায় বেশী আসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ, কুমিল্লা সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। দৈনিক গড়ে ৩-৪ হাজার টাকার বেচাকেনা করেন। চিড়া-মুড়ি, গুড়, নারকেল কিনে আনেন। আর দই মাঠা-মাখন নিজেই তৈরি করেন। বংশ পরম্পরায় তিনি দুগ্ধজাত খাবার তৈরি করছেন পুলিন চন্দ্র ঘোষ।’

পুলিন চন্দ্র ঘোষের দোকানে দই চিড়া খেতে আসা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র আবু ফয়েজ, ওমর ফারুক, অথৃনীতি বিভাগের ছাত্র জুয়েল, ইরফান ও সোহেল জানান, তারা প্রায়ই পুলিন মামার দোকানে দই চিড়া-মুড়ি-নারকেল ও গুড় দিয়ে মেখে খাওয়ার জন্য আসেন। জুয়েল জানান, বেশ মুখরোচক এবং স্বাস্থ্যকর তাই আমরা প্রায়ই আসি পুলিন মামার দোকানে।

চিড়া দইয়ের অর্ডার দিয়ে পা এলিয়ে বসেন আবদুস ছামাদ। রেলওয়ে স্টেশনে চাকরি করেন। তিনি জানান, আগে বাড়িতে চিড়া-মুড়ি খেতাম। তবে পুলিন দাদার দোকানের দই চিড়ার স্বাদ বেশী।

কিভাবে একটি ব্যতিক্রম খাবার সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছেন সে গল্পটিও বলেন পুলিশ চন্দ্র ঘোষ। তিনি জানান, তার বাড়ি কুমিল্লা আদর্শ সদর এবং বুড়িচং এই দুই উপজেলার সীমান্তে লক্ষ্মীপুরে। আজ থেকে ৩০-৩৫ বছর পূর্বে দই মাঠা বানানোর পাশাপাশি তার ইচ্ছে হয় সাথে দই চিড়া দিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করে বিক্রি করবেন। ‘সেই ভাবনা থেকে কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনে এসে দোকান ভাড়া নেন। বর্তমানে ৩ হাজার টাকা দোকান ভাড়া দেন প্রথম প্রথম মানুষজন বেশ কৌতূহল হয়ে দেখতো। পরে আস্তে আস্তে দোকানে এসে খেতে শুরু করলো সবাই। সেই থেকে শুরু এখনো চলছে। গত ৩০-৩৫ বছর ধরে এই খাবারের দোকানটির আয় দিয়ে স্ত্রী দুই ছেলে এক মেয়ে নিয়ে দিয়ে তার পরিবারের চালিয়ে নিচ্ছেন।’

পুলিনের দোকানের পাশে ইন্দ্রজিৎ চন্দ্র ঘোষ নামে আরেকজন দই চিড়ার দোকান দিয়েছেন। ইন্দ্রজিত জানান, গত ২০০০ সালে আমি দই চিড়ার দোকানটি দেই, বেশ ভালোই চলছে।’

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *