Main Menu

বিশ্বনেতাদের যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

বিশ্বনেতাদের প্রতি শান্তি ও অগ্রগতি নিশ্চিত করার জন্য যুদ্ধ বন্ধ ও দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি বলেন, মানব সংযোগ শান্তি ও অগ্রগতির লাইফলাইন।আমাদের অবশ্যই যুদ্ধ, সংঘাত ও অস্ত্র প্রতিযোগিতার অবসান ঘটাতে হবে।শেখ হাসিনা এখানে তার আবাসস্থলের জিজিএফ কনফারেন্স হলে ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণদানকালে এ কথা বলেন।তিনি বাংলাদেশের মসৃণ এলডিসি উত্তরণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) অব্যাহত বাণিজ্য অগ্রাধিকারও চেয়েছেন।

ইইউকে বাংলাদেশের জন্য একটি বিশ্বস্ত বাণিজ্য, উন্নয়ন ও মানবিক অংশীদার হিসেবে বর্ণনা করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা আমাদের মসৃণ এলডিসি উত্তরণে ইইউর অব্যাহত বাণিজ্য অগ্রাধিকার চাই।প্রধানমন্ত্রী ইইউভুক্ত দেশগুলোকে বাংলাদেশে বিশেষ করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও দেশজুড়ে হাই-টেক পার্ক নির্মাণে বৃহত্তর বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

 

 

বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের অন্যতম আকর্ষণীয় পরিবেশ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সুতরাং আমি ইইউ বিনিয়োগকারীদের আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাই-টেক পার্কের সুবিধাগুলো অন্বেষণের আমন্ত্রণ জানাই।তিনি বলেন, তার দেশের শালীন কাজ ও সার্কুলার অর্থনীতিতে আরো কাজ করার সুযোগ রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও গাজায় ইসরাইলি হামলার প্রেক্ষাপটে ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলায় আরো ভালো প্রস্তুতি এবং পারস্পরিক সম্মান পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, আমাদের ভবিষ্যতের সংকটের জন্য আরো ভালোভাবে প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের অবশ্যই পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বিভিন্ন দেশের মধ্যে বোঝাপড়ার প্রতি বিশ্বাস ফিরিয়ে আনতে হবে।প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য এটি এক মহান সংযোগ হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, সবুজ হাইড্রোজেন উন্নয়নে বাংলাদেশ ইইউর সঙ্গে যোগ দিতে ইচ্ছুক।তিনি বলেন, আমরা সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দক্ষতা থেকে উপকৃত হতে পারি। আমাদের কৃষি উৎপাদন সংরক্ষণের জন্য আমাদের কোল্ড চেইন নেটওয়ার্কগুলোতে বিনিয়োগের প্রয়োজন।শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের ফার্মাসিউটিক্যালস ও চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্প উৎপাদন বহুমুখীকরণে ইইউর প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে পারে।

 

 

তিনি বলেন, আমরা আমাদের আগামী দিনের ইনস্টিটিউটগুলোর জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে অংশীদার খুঁজছি। বাংলাদেশের গতিশীল তরুণ জনগোষ্ঠী ইইউর দক্ষতা ও প্রতিভা অংশীদারিত্ব কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রস্তুত।

 

 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি গ্লোবাল গেটওয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’র জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের গতিশীলতার ক্ষেত্রে তাদের ফলপ্রসূ সহযোগিতা রয়েছে। আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ ও অঙ্গীকার ইইউর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তিতে আলোচনা শুরু করেছেন।তিনি বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগের জন্য ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো ঋণের জন্য ইআইবির সঙ্গে একটি যুগান্তকারী চুক্তি স্বাক্ষর করেছি।

বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের এ ৫০তম বার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি আমাদের কৌশলগত সম্পৃক্ততা আরো জোরদার করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করছি। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি, কারণ আমাদের ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ১৫ বছরেরও কম সময়ে ৪৬৫ বিলিয়নে উন্নীত হয়েছে।

আমরা আমাদের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করে এনেছি। চরম দারিদ্র্য ২০০৬ সালের ২৫.১ শতাংশ থেকে ৫.৬ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ ২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে উন্নীত হতে চলেছে- বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার খাদ্য নিরাপত্তা, সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তি, কমিউনিটিভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি ও স্যানিটেশন, বিনা খরচে আবাসন, গ্রামীণ যোগাযোগ, দুর্যোগ স্থিতিস্থাপকতা, জলবায়ু অভিযোজন, ১০০ শতাংশ বিদ্যুৎ কভারেজ, দেশজুড়ে ইন্টারনেট সংযোগ, শিল্প প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে অগ্রসর হচ্ছে। আমরা জলবায়ু ঝুঁকি সহনশীলতা ও সমৃদ্ধির দিকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার বাবা বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সেতবন্ধু নির্মাতা হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে কৌশলগতভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত এবং এটির এ অঞ্চলের ৩ বিলিয়ন গ্রাহকের একটি বাণিজ্য কেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাদেশের সড়ক, রেল ও বন্দর অবকাঠামো আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডরের অংশ হিসেবে নির্মিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশের নিজস্ব সম্পদে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করেছি।

তিনি বলেন, আমরা নেপাল, ভুটান ও উত্তরপূর্ব ভারতের স্থল-সংযুক্ত অঞ্চলগুলোকে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশের প্রস্তাব দিয়েছি। আমাদের বিমানবন্দরগুলো পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে। আমাদের ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশ ও ইইউর মধ্যে সংযোগ একটি সাধারণ বন্ধনমূলক উপাদান।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা পরিবহন নেটওয়ার্ক, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, সবুজ জ্বালানি, ডিজিটাল রূপান্তর, গবেষণা ও উদ্ভাবনের ওপর গ্লোবাল গেটওয়ের ফোকাসের প্রশংসা করি।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.