Home » ট্রেনেও হাজারো সংকট

ট্রেনেও হাজারো সংকট

ডেস্ক নিউজ : আসন্ন ঈদে নাড়ির টানে বাড়ি যাওয়া কিংবা বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফিরতে ট্রেনযাত্রায় স্বাছন্দ্যবোধ করে বেশির ভাগ যাত্রী। সড়কপথে যানজট, নৌপথে ভোগান্তির কথা ভেবে রেলপথকে স্বস্তিদায়ক মনে করে তারা। কিন্তু কতটুকু নির্বিঘ্ন হবে এই রেলযাত্রা? প্রতি বছর ঈদে যাত্রী সাধারণের চাপ সামলাতে রেল কর্তৃপক্ষ নানা উদ্যোগ নিলেও আখেরে তার সুফল দেখতে পাওয়া যায় না।”

সাধারণ মানুষের ঈদ যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রথম পর্বে মহাসড়ক নিয়ে  প্রতিবেদন প্রকাশের পর সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের তৎপর হয়ে আশ্বস্ত করেছেন, মহাসড়কের সংস্কারকাজ এরই মধ্যে শেষ করা হবে। যেখানে সংস্কারকাজ শেষ হবে না সেখানে ঈদের সময়টায় যাত্রীদের যাতে দুর্ভোগ না হয় সে জন্য সংশ্লিষ্টদের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। একইভাবে নদীপথে ফেরিঘাট নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সরকার নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়ে যাত্রীদের স্বাভাবিক চলাচল নিশ্চিত করতে তৎপরতা শুরু করেছে। ভুক্তভোগীরা আশা করছে, ঈদ যাত্রায় ট্রেনের ব্যাপারেও সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে মানুষের চলাচল নির্বিঘ্ন করবে।”

এদিকে, এবারও চাহিদার চেয়ে টিকিট কম। এবারও টিকিটের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তার বড় অংশ কালোবাজারিতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঈদের সময় অসাধু কর্মকর্তাদের আশকারায় দালালরা টিকিট-বাণিজ্য করছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যদিও এমন অভিযোগ রেল কর্তৃপক্ষ অস্বীকার করে আসছে। যাত্রীসাধারণের দাবি সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলে এবারের ঈদ যাত্রা সুখকর হবে। নইলে ভোগান্তি লাঘব হবে না।”

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকাসহ বিভিন্ন রেলস্টেশন থেকে এবার কমপক্ষে ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন দুই লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী ট্রেনে চলাচল করবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে অতিরিক্ত যাত্রী, ইঞ্জিনঘরে বসে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে। তাতে কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। যাত্রীরা বলছে, পর্যাপ্ত বগির ব্যবস্থা, সুশৃঙ্খল ব্যবস্থাপনা থাকলে ঝুঁকি নিয়ে এমন যাত্রা কেউ করবে না।
ট্রেনের ছাদ কিংবা ইঞ্জিনে যাত্রা করে এমন যাত্রীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছে, তারা নিম্ন আয়ের মানুষ। ট্রেনের টিকিট তুলনামূলক দামও কম। কিন্তু সে টিকিট তারা পায় না। ফলে বাধ্য হয়ে এভাবেই যাত্রা করে। নয়তো ট্রাক-বাসের ছাদে উঠতে হবে তাদের।

পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে যেসব ট্রেন চলাচল করে সেসব ট্রেনে এবার বগি ও ইঞ্জিন সংকট নিয়েই ঈদ যাত্রা শুরু হবে। যদিও বলা হচ্ছে, এবার ঈদ যাত্রায় ৯০টি অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হবে। অনেকের মতে, বিষয়টি ‘আইওয়াশ’ ছাড়া আর কিছুই নয়। ঈশ্বরদী জংশন হয়ে আসনসংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে প্রতিটি ট্রেন। ঈদ যাত্রায় এর মাত্রা আরো বাড়বে। ফলে যাত্রীদের ভোগান্তি থাকছেই। প্রতিবছর এই অবস্থার সৃষ্টি হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি রেল কর্তৃপক্ষ।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে চাহিদার চেয়েও টিকিট সংকট ও কালোবাজারি, প্ল্যাটফর্মে নোংরা পরিবেশ, লোকবলের অভাব, ট্রেন আসার ঘোষণা দিচ্ছে দোকানদার।

রংপুর থেকে ঢাকাগামী ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ নামের একটি মাত্র ট্রেন চলাচল করে। আরো আন্তনগর ট্রেন বৃদ্ধির জন্য এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও তা পূরণ হয়নি। ফলে আসন্ন ঈদে ঘরমুখো ও রাজধানী ফিরতি যাত্রীদের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই।
বিভিন্ন রেলস্টেশন, জংশন ঘুরে, যাত্রী ও রেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের অনুসন্ধানী প্রতিবেদন—

কমলাপুর রেলস্টেশন : ঈদ যাত্রা সামনে রেখে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ টিকিট বিক্রি করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। ঢাকা রেলস্টেশন নামে পরিচিত কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ৩১টি আন্তনগর ট্রেনের ২৯টিতেই তাত্ক্ষণিকভাবে দাঁড়িয়ে গন্তব্যে যাওয়ার স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হবে। ঢাকাসহ বিভিন্ন রেলস্টেশন থেকে এবার কমপক্ষে ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন দুই লাখ ৭৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে রেলওয়ে। তবে এই বৈধ যাত্রীর বাইরেও নিষিদ্ধ হলেও ছাদে চড়ে, ট্রেনের ইঞ্জিনঘরে বসে যাত্রী পরিবহন করা হয়ে থাকে। তাতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো নিয়ন্ত্রণই থাকে না।”

বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন মহাসড়কে সংস্কারকাজ না টিকলে যানজটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে যাত্রীদের বেশি আগ্রহ ট্রেনেই। গতকাল ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন রেলস্টেশন থেকে ঈদ যাত্রার আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ও রাত থেকে ঢাকা স্টেশনে দাঁড়িয়েছিল মানুষ। ধৈর্যের বড় পরীক্ষা নিয়ে কেউ সকালে, কেউ দুপুরে টিকিট নিয়ে হাসিতে উজ্জ্বল হয়ে ফিরেছে। কমলাপুর ছাড়াও ঢাকা বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, সিলেট, খুলনা, রাজশাহীসহ বড় রেলস্টেশনগুলো থেকে গতকাল আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে।”

বাংলাদেশ রেলওয়ের তথ্যানুসারে, স্বাভাবিক সময়ে সারা দেশে ট্রেনে দিনে দুই লাখ ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা হয়। এবার বাড়তি চাপ সামাল দিতে আগে ঘোষিত সাতটি বিশেষ ট্রেনের সঙ্গে আরো দুটো বিশেষ ট্রেন যোগ হচ্ছে। সব মিলিয়ে ঢাকা থেকে লালমনিরহাট, খুলনাসহ বিভিন্ন রুটে চলবে ৯ জোড়া বিশেষ ট্রেন।”

বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আমজাদ হোসেন  বলেন, ‘ঢাকা থেকে লালমনিরহাট ও খুলনায় বিশেষ ট্রেন চলাচল করবে। এবারও সময়সূচি যাতে ভেঙে না পড়ে সেদিকে বেশি লক্ষ্য রাখা হবে। ঢাকা-কলকাতা রুটে চলাচলকারী মৈত্রী এক্সপ্রেস ঈদের জন্য বন্ধ থাকবে। এই ট্রেনের বগিগুলো দিয়ে ঢাকা-খুলনা রুটে বিশেষ ট্রেন চালানো হবে। ছাদে যাত্রী পরিবহনরোধে সীমিত জনবল দিয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব।”

ঢাকা রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক সীতাংশু চক্রবর্তী  বলেন, ‘আগের বছর স্বস্তিদায়ক ছিল ট্রেনে ঈদ যাত্রা। এবারও স্বস্তি দেওয়ার জন্য আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছি। তবে ট্রেনে বিশেষ বিশেষ গন্তব্যে সবচেয়ে বেশি চাপ থাকবে। কাউন্টারের বাইরে অনলাইনেও টিকিট বিক্রি হচ্ছে।”

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে : আসছে ঈদ ট্রেনের দিকে যাত্রীর জোয়ার। কথা ছিল চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম রেলপথে ‘ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে দ্বিতীয় শ্রেণির ছয়টি বগিতে (কোচ) যাত্রী পরিবহনের। বলা হচ্ছে, ট্রেনটি চালুর পর থেকে যাত্রীদের চাহিদা বেশি থাকলেও বগি কমের কারণে অনেকের ভাগ্যে টিকিট মিলে না। অথচ ট্রেনটিতে দ্বিতীয় শ্রেণির বগি কমতে কমতে এখন আছে মাত্র দুটি। চারটি বগি কম চলছে। বর্তমানে ‘ময়মনসিংহ এক্সপ্রেস’ চলছে মাত্র চারটি বগি দিয়ে। এর মধ্যে দুটি দ্বিতীয় শ্রেণি, একটি গার্ড ব্রেক এবং একটি মালবাহী বগি। একইভাবে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ‘ঢাকা মেইল’ ও ‘চট্টগ্রাম মেইল’ দুই ট্রেনে অন্যান্য বগির পাশাপাশি ছয়টি করে দ্বিতীয় শ্রেণির বগি থাকার কথা থাকলেও এখন দুটি কম।”

অনুসন্ধানে জানা গেছে, শুধু এসব ট্রেনই নয়, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন মেইল এক্সপ্রেস ও লোকাল ট্রেনে ৬৭টি দ্বিতীয় শ্রেণির বগি কম। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, দ্বিতীয় শ্রেণির বগি কম, এর মধ্যে রয়েছে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগে মেইল এক্সপ্রেসে ২২টি ও লোকাল ট্রেনে ১৩টি এবং চট্টগ্রাম বিভাগে মেইল এক্সপ্রেসে ২৪টি ও লোকাল ট্রেনে ৮টি বগি কম রয়েছে।
জানা গেছে, এবারের ঈদ যাত্রায় পূর্ব রেলে ৯০টি অতিরিক্ত বগি সংযোজনের বিষয়টি অনেকটা ‘আইওয়াশ’। মাত্র কয়েক দিন আগে ঈদ প্রস্তুতির বৈঠকে অতিরিক্ত বগি সংযোজনের কথা বলা হয়েছিল। চট্টগ্রামের পাহাড়তলী ক্যারেজ অ্যান্ড ওয়াগন ওয়ার্কশপের সর্বশেষ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক হিসাব অনুযায়ী এবারের ঈদ প্রস্তুতিতে তারা ১০৫টি বগি মেরামতের জন্য ওই কারখানায় রাখার কথা উল্লেখ করে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, রেলের ঈদ প্রস্তুতি নিয়ে অতিরিক্ত নতুন বগি সংযোজনের যে কথা বলা হয়েছে, তা আইওয়াশ ছাড়া আর কিছু নয়। এমনিতে নিয়মিত প্রতি মাসে গড়ে ১৫ থেকে ২০টি বগি ওই কারখানা থেকে মেরামত করে বিভিন্ন ট্রেনে সংযোজন করা হয়। এটা নিয়মিত প্রক্রিয়া।”

ঈশ্বরদী জংশন : ঈশ্বরদী জংশন, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন, চাটমোহর স্টেশন, এবং ভাঙ্গুড়া উপজেলার বড়াল ব্রিজ স্টেশন ও শরত্নগর স্টেশন থেকে পাবনার রেলযাত্রীরা ট্রেনে চলাচল করে থাকে। ঈশ্বরদী জংশন স্টেশন থেকে প্রতিদিন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে চিত্রা, রাত ১২টা ৪৫ মিনিটে সুন্দরবন এক্সপ্রেস, ঈশ্বরদী বাইপাস স্টেশন থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় সিল্কসিটি, দুপুর দেড়টায় দ্রুতযান এবং বিকেল ৫টায় পদ্মা আন্ত নগর ট্রেনগুলো ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।”

“রেলওয়ে পাকশী বিভাগের বিভাগীয় রেল ব্যবস্থাপক (ডিআরএম) অসীম কুমার তালুকদার জানান, ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রতিবছরের মতো রেল বিভাগের পক্ষ থেকে এবারও প্রতিটি ট্রেনে অতিরিক্ত বগি সংযোজন, বিশেষ ট্রেন সার্ভিস চালুসহ বেশ কিছু পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাত্রীর তুলনায় ট্রেন অপর্যাপ্ত থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি রেল চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে। তিনি আরো বলেন, আন্ত নগর ট্রেনগুলো সাধারণত ৯টি বগি নিয়ে চলার কথা থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে এখন ট্রেনপ্রতি ১৬টি করে বগি দেওয়া হয়েছে। এর পরও যাত্রীদের চাহিদা মতো আসনসংখ্যা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
রংপুরে ঈদেও নেই বিশেষ ট্রেনের বরাদ্দ, ক্ষোভ : রংপুর থেকে ঢাকাগামী ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ নামের একটিমাত্র ট্রেন চলাচল করে। আরো আন্ত নগর ট্রেন বৃদ্ধির জন্য এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি থাকলেও তা পূরণ করা হয়নি। ফলে আসন্ন ঈদে ঘরমুখো ও রাজধানী ফিরতি যাত্রীদের দুশ্চিন্তার অন্ত নেই। রংপুরে ঈদেও নেই বিশেষ ট্রেনের বরাদ্দ। ফলে সিমিত টিকিট সংগ্রহে নাকাল যাত্রীসাধারণ। এ ছাড়া রয়েছে টিকিট কালোবাজারি।”

”রংপুর অঞ্চলের স্বল্প আয়ের মানুষ তুলনামূলক কম টাকায় ট্রেনে যাতায়াত করতে আগ্রহী। টিকিট পেলে ভালো, না হলে সড়কপথে ঝুঁকি নিয়ে বাস-ট্রাকের ছাদে যাতায়াত করে। দুর্ঘটনার শিকারও হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ট্রেন বাড়লে, বগি সংযোগ হলে, টিকিট কালোবাজারি না হলে যাত্রীসাধারণ উপকৃত হতো।”

“রেলওয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের পাকশী ডিভিশন অনেক সমৃদ্ধ হলেও লালমনিরহাট ডিভিশনের অবস্থা তিমিরেই রয়ে গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া থেকে ২৭০টি কোচ সংযুক্ত হয়েছে। অথচ বিগত ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে লালমনিরহাট ডিভিশনে নতুন কোচ সংযুক্ত হয়নি।”

আখাউড়া রেলওয়ে জংশন : আখাউড়া দেশের অন্যতম রেলওয়ে জংশন। ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, নোয়াখালী থেকে চলাচলকারী আট জোড়া আন্ত নগর ও ১২ জোড়া মেইল ট্রেন আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেয়। এ ছাড়া আরো কয়েকটি আন্ত নগর ও মালবাহী ট্রেন আখাউড়া হয়ে দেশের বিভিন্ন দিকে চলাচল করে। কিন্তু এ স্টেশনের প্রধান সমস্যা টিকিট। টিকিট সংকটে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমনিতে টিকিট কম, তার ওপর রয়েছে কালোবাজারিদের দৌরাত্ম্য।”

“গতকাল সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, লোকবল সংকটের কারণে সেবা পাচ্ছে না যাত্রীরা। ট্রেন আসার বিষয়ে নিয়মিত ঘোষণা দেওয়া হয় না। প্ল্যাটফর্মে অতিরিক্ত হকারের কারণে বিড়ম্বনা আরো বেশি। স্টেশনের যাত্রী বিশ্রামাগারের টয়েলেটের অবস্থা খুবই নাজুক। বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা নেই। পুরো স্টেশনেই নোংরা পরিবেশ। সরকারি বাসভবনের অবস্থা নাজুক বলে খুব একটা ভালো নেই রেলওয়ে জংশনে কর্মরত কর্মচারীরাও।”

আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল বলেন, ‘ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য আখাউড়া থেকে এখন বেশ কয়েকটি ট্রেন রয়েছে।’ আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের প্রচেষ্টায় সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক ট্রেনের যাত্রাবিরতি হয়েছে আখাউড়ায়।’ আশা করছি, মন্ত্রী মহোদয়ের মাধ্যমে আমরা টিকিটের সমস্যার সমাধানও করতে পারব।সূত্র : কালের কণ্ঠ

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *