Home » কোভিড টিকার বয়সসীমা এখন ৩০ বছর: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

কোভিড টিকার বয়সসীমা এখন ৩০ বছর: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

করোনাভাইরাসের টিকা নেওয়ার বয়সসীমা আরও পাঁচ বছর কমিয়ে ৩০ বছর করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশিদ আলম। সোমবার তিনি বলেন, “টিকা নেওয়ার বয়সসীমা কমানো হয়েছে। এখন থেকে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে নাগরিকরা টিকার জন্য আবেদন করতে পারবেন।”

দেশে ভাইরাস সংক্রমণের ব্যাপক বিস্তারের পাশাপাশি সিনোফার্মা ও মর্ডানাসহ কোভিড টিকার সরবরাহ বাড়তে থাকার প্রেক্ষাপটে বয়স আরও কমানোর এমন সিদ্ধান্ত এল। গত ৫ জুলাই আগের চেয়ে আরও পাঁচ বছর কমিয়ে টিকার নিবন্ধনের জন্য যোগ্যদের বয়স ৩৫ বছর করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। শুরুতে বাংলাদেশে ৪০ বছর বা এর বেশি বয়সীরা টিকার জন্য নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছিলেন। সরকার ঘোষিত বয়সসীমা অনুযায়ী যারা টিকা নেওয়ার জন্য যোগ্য শুধু তারাই সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েবসাইট বা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করতে পারছেন।

অন্যদিকে অগ্রাধিকার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা বয়সমীমার বাইরে। মহামারী মোকাবিলায় সম্মুখসারির কর্মী, বেশ কিছু পেশাজীবী শ্রেণি, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী, প্রবাসী কর্মী এবং প্রাধিকার তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা নির্ধারিত বয়সসীমার শর্তের বাইরে থেকেও নিবন্ধনের সুযোগ পাচ্ছেন।

দেশে গত ২৬ জানুয়ারি থেকে টিকার জন্য নিবন্ধন শুরু হয়। ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের তিন কোটি ডোজের প্রথম চালান দেশে এলে গণটিকাদানের নিব্নধন শুরু হয় দেশে।

ওই চালান পাওয়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে গণটিকাদান শুরু হয়। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউট দুই চালানে ৭০ লাখ ডোজ পাঠানোর পর ভারত রপ্তানি বন্ধ করে দিলে টিকার সঙ্কটে পড়ে বাংলাদেশ। পর্যাপ্ত টিকা না থাকায় ২৫ এপ্রিল দেশে প্রথম ডোজ দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়।

এ অবস্থায় সরকার চীন ও রাশিয়ার কাছ থেকে কেনাসহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্সসহ অন্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের চেষ্টা শুরু করে।

৩৫ বছর হলেই টিকার নিবন্ধনের সুযোগ মিলবে: স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দুই মাসের বেশি সময় পর ফের শুরু টিকাদান ২৭ মে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় চীনের সিনোফার্মের দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার প্রস্তাব সবুজ সংকেত পায়।

এছাড়া চীনের উপহার হিসেবে দুই দফায় সিনোফার্মের ১১ লাখ ডোজ টিকা দেশে আসে। এরবাইরে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজারের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ টিকা পাওয়া যায়। এগুলো দেশে এলে গত ১ জুলাই থেকে সারাদেশে জেলা পর্যায়ে আবারও টিকাদান শুরু হয়।

এরপর ৩ জুলাই রাতে এবং ৪ জুলাই সকালে দুই চালানে সিনোফার্মের আরও ২০ লাখ ডোজ দেশে আসে। একইভাবে কোভ্যাক্স থেকে পাঠানো দুটি চালানে মর্ডানার টিকার ২৫ লাখ ডোজ ঢাকায় পৌঁছায়।

অর্থাৎ জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশ হাতে পায় ৪৫ লাখ ডোজ কোভিড টিকা। এরপর শনিবার রাতে সিনোফার্মের আরও ২০ লাখ ডোজ আসে, যেগুলো চীনের সঙ্গে টিকা কেনার চুক্তির আওতায় পাওয়া প্রথম চালান বলে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।

সর্বশেষ সোমবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি মর্ডানার আরও ৩৫ লাখ ডোজ টিকা ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এর আগে সাংবাদিকদের বলেন, “টিকাদান কার্যক্রম আমরা জোরেশোরেই শুরু করেছিলাম। টিকা না পাওয়ায় মাঝখানে কিছুদিনের জন্য টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এখন আমরা আনন্দের সাথে বলতে পারি, আগামীতে টিকার আর কোনো অভাব হবে না।”

ডিসেম্বর নাগাদ বাংলাদেশ বিভিন্ন উৎস থেকে ১০ কোটি ডোজ টিকা পাবে জানিয়ে তিনি বলেন, আগামী বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যে বা তার পরে জনসন অ্যান্ড জনসন থেকে আরও সাত কোটি ডোজ টিকা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *