Home » স্ত্রীকে বিসিএস দেওয়ানো হলো না: ডা. ইমরানের

স্ত্রীকে বিসিএস দেওয়ানো হলো না: ডা. ইমরানের

স্ত্রী বিসিএস ক্যাডার হবে। চিকিৎসা সেবা নিয়ে দাঁড়াবে অসহায় মানুষের পাশে। এমন স্বপ্ন ছিল ডা. ইমরান খানের। স্বপ্ন অভিন্ন ছিল স্ত্রী ডা. শারমিন আক্তার অন্তরারও। তাই বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন ইমরান। কিন্তু চিকিৎসক দম্পতির মানবসেবার স্বপ্ন তছনছ করে দিয়েছে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা।

গতকাল সকাল সাড়ে ৬টায় সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিণ সুরমার রশিদপুর এলাকায় লন্ডন এক্সপ্রেস ও এনা পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন ডা. ইমরান। আর গুরুতর আহত হয়ে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডা. অন্তরা। তবে বাসায় রেখে যাওয়ায় ভাগ্যক্রমে দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে গেছে তাদের দুই শিশু সন্তান। ডা. ইমরান খান সিলেটের উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ও ডা. অন্তরা জালালাবাদ রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক। ডা. ইমরানের পরিবারের প্রায় সবাই চিকিৎসক।

বাবা আমজাদ হোসেন খান সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের প্রধান ছিলেন। আমজাদ হোসেনের এক ছেলে এক মেয়ে। দুজনই চিকিৎসক। ছেলে, ছেলের বউ আর দুই নাতনি নিয়ে ছিল আমজাদ দম্পতির সুখের সংসার। শুক্রবার ছুটির দিন সকালে একটি দুর্ঘটনায় উবে গেছে সেই সংসারের শান্তি।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান নিহত ডা. ইমরানের বাবা আমজাদ খান। হাসপাতালের মর্গের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা স্বজনরাও যেন খুঁজে পাচ্ছিলেন না সান্তনার ভাষা। গাল বেয়ে নামছিল সবার চোখের জল। নগরীর ফাজিল চিশত এলাকার বাসায় বারবার মূর্চ্ছা যাচ্ছিলেন ইমরানের মা।

আর কানাইঘাট যাওয়া হবে না ইমরান দম্পতির : সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার সিলেটের কানাইঘাটে যেতেন ডা. ইমরান ও ডা. অন্তরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে চেম্বার করতেন দুজন। ইমরান আজাদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে আল্ট্রাসনোগ্রাম করতেন আর অন্তরা একই মালিকের অপর প্রতিষ্ঠান আজাদ ফার্মেসিতে রোগী দেখতেন। রোগীদের কাছে খুবই প্রিয় ছিলেন এ দম্পতি। স্ত্রীর বিসিএস পরীক্ষা না থাকলে গতকালও হয়তো এ চিকিৎসক দম্পতি থাকতেন কানাইঘাটে। চেম্বারে বসে রোগী দেখে ব্যবস্থাপত্র দিতেন ডা. অন্তরা। আর ডায়াগনস্টিক সেন্টারে রোগ নির্ণয়ে ব্যস্ত সময় পার করতেন ইমরান। ডা. ইমরানের মৃত্যুর খবর পেয়ে কানাইঘাটেও নেমে আসে শোকের ছায়া।

আজাদ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘ইমরান স্যার অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। সবার সঙ্গে তাঁর অনেক ভালো সম্পর্ক ছিল। খুব সহজেই তিনি সবাইকে আপন করে নিতেন। এভাবে স্যার চলে যাবেন তা আমরা বিশ্বাসই করতে পারছি না।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *