Main Menu

ছি ছি ছি- তুমি এতো খারাপ

ইমদাদুল হক মিলনের রচনায় শেখ রিয়াজ উদ্দিন বাদশার প্রযোজনায় নব্বই দশকে বিটিভিতে প্রচারিত ‘রুপনগর’ এর কথা নিশ্চয়ই দর্শকদের এখনো মনে আছে কিংবা পরবর্তী প্রজন্ম যারা ইউটিউবে দেখেছেন তারা একবাক্যে মেনে নিবেন এই ধারাবাহিকের মূল আকর্ষন হেলাল। যদিও নায়ক চরিত্রে অভিনয় দেখানোর যথেষ্ট সুযোগ ছিল,দেখিয়েছেও। কিন্তু খল ভূমিকায় হেলাল এতটাই আলো কেড়ে নিয়েছিল,এই চরিত্রটিই বেশি জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। হেলাল চরিত্রে অভিনয় করে দর্শকদের মধ্যে নিজেকে সবচেয়ে বেশি আলোচিত করেছিলেন কিংবদন্তি অভিনেতা ‘খালেদ খান’।
শুধু রুপনগরের ‘হেলাল’ই নয়,এর পুরো বিপরীত চরিত্র এইসব দিনরাত্রির ‘যাদুকর আনিস’ এর কথাও দর্শকদের কাছে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। ইমদাদুল হক মিলনের ই আরেকটি সাড়া জাগানো ধারাবাহিক নাটক ‘কোন কাননের ফুল’ এ বুড্ডা চরিত্রটি ক্যারিয়ারের আরেকটি অন্যতম সেরা কাজ। বিটিভির ধারাবাহিক নাটকের ইতিহাসে পথিকৃৎ ‘সকাল সন্ধ্যা’তেও ছিলেন বিশেষ চরিত্রে। প্রথম নাটক সিঁড়িঘর,হুমায়ূন আহমেদের ‘একা একা’য় প্রশংসিত হন। যদিও রহস্যজনিত কারনে এই জুটি আর সেভাবে দেখা যায় নি। বাংলা নাটকের ইতিহাসে থ্রিলার হিসেবে মোহাম্মদ হোসেন জেমীর লোকার শিকল ও দমন বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য,দুইটাতেই ছিলেন মুখ্য ভূমিকায়। বর্নাঢ্য অভিনয় জীবনে আরো দেখা গেছে ফেরা,ওথেলো এবং ওথেলো,মফস্বল সংবাদ,শীতের পাখি,দক্ষিনের ঘর,মৃত্যু ও একটি প্রশ্ন সহ অসংখ্য নাটকে। সিনেমায় দেখা গেছে মাত্র দুইটি ছবিতে,পোকামাকড়ের ঘর বসতি ছিল প্রথম সিনেমা এবং অনেকদিন পর অভিনয় করেন আহা! তে।
খালেদ খানের ডাকনাম ছিল যুবরাজ,তার কাছের মানুষেরা এই নামেই ডাকতো। সত্যিই অভিনয় গুণে তিনি বাংলা নাটকের একজন যুবরাজ।
খালেদ খানের অভিনয় জীবনের হাতেখড়ি মঞ্চে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রের মঞ্চে প্রথম নাটক নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’,অনেক বছর পর্যন্ত এই নাটকে অভিনয় করেছেন। আরো করেছেন গ্যালিলিও,নুরুলদীনের সারাজীবন,অচলায়তন সহ বেশকিছু মঞ্চ নাটক,নির্দেশনাও দিয়েছেন। রক্তকরবীর ‘বিশু পাগলা’ করে তো আজীবন মঞ্চপ্রেমীদের কাছে প্রিয় হয়ে থাকবেন।
খালেদ খান নিঃসন্দেহে এক শক্তিমান অভিনেতা,সব ধরনের চরিত্রেই মানিয়ে নেয়ার প্রতিভা ছিল,কন্ঠস্বর ছিল অন্যদের চেয়ে আলাদা,দারুণ আবৃত্তি করতেন। তবে দুঃখের বিষয় নতুন প্রজন্মের কাছে তিনি বেশ অচেনা। তিনি আর পৃথিবীতে বেঁচে নেই,অদেখা ভুবনে চলে গেছেন ২০১৩ সালে,তার ও অনেক বছর আগ পর্যন্ত টিভিতে অনিয়মিত ই ছিলেন,তাই নতুন প্রজন্ম তার নাটক সেভাবে দেখেনি। সিনেমাও করেছেন খুব কম,অথচ সিনেমার একজন দুর্দান্ত অভিনেতা হতে পারতেন তিনি হউক সেটা খল থেকে নায়ক কিংবা বৈচিত্র্যময় চরিত্রে।
১৯৫৮ সালের ১০ফেব্রুয়ারী তিনি জন্মগ্রহণ করেন,বেঁচে থাকলে আজ পেরোতেন ৬৩ বছর,বড় অকালেই চলে গেলেন এই প্রবাদপ্রতিম অভিনেতা। মঞ্চের একনিষ্ট কর্মী,টিভিতেও রয়েছে কালজয়ী অভিনয়। তবুও পাওয়া হয় নি একুশে পদক,বেঁচে থাকাকালীন সেইরকম কোন উল্লেখযোগ্য পুরস্কার ই পাওয়া হয় নি উনার। মরনোত্তর একুশে পদক আদৌ পাবেন কিনা সেটা কর্তৃপক্ষ ই জানেন।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.