Main Menu

সিলেটে চলছে পরিবহন ধর্মঘট: কপাল খুল মোটারসাইকেল রাইডারদের

বুধবার দ্বিতীয় দিনের মতো সিলেটে চলছে পরিবহন ধর্মঘট। সিলেটের সবগুলো পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে চলা এ ধর্মঘটের কারণে নাগরিক ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। রাস্তায় গণপরিবহন না থাকায় বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী যাত্রীরা, বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার যান চলাচলও। আর সেই সুযোগে অ্যাপস ছাড়াই চুক্তিতে যাত্রী পরিবহন করছেন রাইড শেয়ারিংয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করা মোটরসাইকেল চালকরা। এজন্য তারা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছেন যাত্রীদের কাছে।

করোনাকালীন স্বাস্থ্যঝুঁকি বিবেচনায় না নিয়ে সিলেট নগরীর প্রায় সবক’টি মোড়েই লোকাল বাসের মতো ডেকে হেঁকে মোটর সাইকেলে যাত্রী উঠানো হচ্ছে। নগরীর প্রায় সবগুলো স্পট থেকেই ডেকে ডেকে যাত্রী পরিবহন করছে রাইড শেয়ারের মোটরসাইকেলগুলো। আর ভাড়া নিয়ে রীতিমতো দরদামে মেতে উঠছেন তারা।

এদিকে অ্যাপস ব্যবহারের মাধ্যমে যাত্রী না উঠে মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে চড়ে বসা যাত্রী বা চালক উভয়ই অপরিচিত থাকায় কারও তথ্যই কারও কাছে থাকছে না। এতে করে দুজনই বিপদ নিয়ে চলাচল করছেন সড়কে।

নগরের রিকাবীবাজার পয়েন্ট থেকে টিলাগড়ের গাড়ির অপেক্ষায় ছিলেন অমিতাভ দেবনাথ নামের একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি পাঠাও-উবারের অ্যাপস ব্যবহারও করেন। অন্যদিন যেখানে রিকোয়েস্ট পাঠানোর সাথে সাথে মোটরসাইকেল হাজির হতো, আজ সেখানে রিকোয়েস্ট গ্রহণই হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ‘একজন ফোন রিসিভ করেছিলেন, কিন্তু তিনি অ্যাপসের পরিবর্তে চুক্তিতে যাবেন বলে জানিয়েছেন। রিকোয়েস্ট ক্যান্সেল করে দেই। পরে বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে মোটরসাইকেল করে অফিসে যাই।

উপশহর পয়েন্ট থেকে শিবগঞ্জ পয়েন্টে অ্যাপসে ভাড়া আসে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। সেখানে দ্বিগুণ ৫০ টাকা দিয়ে যাতায়াত করছেন রাইড নেয়া যাত্রীরা। এদিকে সিলেটের রাইডাররা মোটরবাইক নিয়ে ট্রিপ দিচ্ছেন মৌলভীবাজার পর্যন্ত। সেখানে ভাড়া হাঁকানো হচ্ছে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া শেরপুর পর্যন্ত রাইডাররা চাচ্ছেন ৩০০ থেকে ৫০০ পর্যন্ত।

এদিকে বন্দর বাজার কোর্ট পয়েন্টে বেশ কয়েকজন মোটরসাইকেল চালককে অবস্থান করতে দেখা গেছে। তারা সবাই রাইড শেয়ারিংয়ের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো তাদের কেউ অ‌্যাপসে ভাড়ায় যাবেন না। চুক্তিতে যাবেন।

তেমনই নগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে মোটরসাইকেল নিয়ে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছেন চালকরা। তাদের মধ্যে একজন চালক জসিম মিয়া বলেন, ‘প্রথম প্রথম অনলাইনে চলেছি, যখন দেখছি অনেকই অফলাইনে খ্যাপ মারছে দেখে আমিও শুরু করলাম। অনলাইন থেকে অফলাইনে আয় করা যায় বেশি। তাই এখন অফলাইনে ট্রিপ মারতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। একই বিষয়ে জানতে চাইলে একই সুরে কথা বলেন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা রতন ও লুৎফুর নামে আরও দুই চালক।

এছাড়া দক্ষিন সুরমা এলাকার চন্ডিপুল এলাকায় যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করা রাইডচালক ফারুক হোসেনের কাছে একই প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বলেন, ‘দুই টাকা বেশি কীভাবে আয় হবে সে চিন্তা করি। চুক্তিতে ট্রিপ মারলে যাত্রী পাওয়া যায় বেশি, ভাড়াও বেশি।’

একই অবস্থা অন্য সব রোডেও। সবমিলিয়ে ধর্মঘটে যানবাহন না থাকায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েই গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।

নিয়মিত রাইড নেন এমন একজন যাত্রী শামসুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘অনেকের মতোতো আমার আর ব্যক্তিগত গাড়ি নেই তাই রাইড শেয়ারিংটাকে বেছে নিয়েছি। তাই আমি নিয়মিত রাইড নিয়ে থাকি। কিন্তু হঠাৎ করেই গতকাল থেকে খেয়াল করে দেখলাম তারা নিয়ম মানছে না, নিয়ন্ত্রণহীনভাবে চলছে। দরদাম করে যেতে হচ্ছে। কিলোমিটার কোনো হিসাব নেই, চুক্তিতে যেতে হচ্ছে। নিয়মহীনভাবে চলায় আমাদের অতিরিক্ত ভাড়াও গুনতে হচ্ছে। চালকরা নানা অজুহাতে ভাড়াও বেশি নিচ্ছে। পথে তাড়াহুড়া করে। এসব ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন চলতে হচ্ছে।’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট শুক্রবার ভোর ৬টা পর্যন্ত চলবে। দাবি আদায় না হলে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন পরিষদের নেতৃবৃন্দ।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.