Home » ‘বঙ্গভ্যাক্স’ রাখার প্রস্তাব গ্লোবের কোভিড-১৯ টিকার নাম

‘বঙ্গভ্যাক্স’ রাখার প্রস্তাব গ্লোবের কোভিড-১৯ টিকার নাম

নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশীয় কোম্পানি গ্লোব বায়োটেকের ‘ব্যানকোভিড’ ভ্যাকসিনের নাম ‘বঙ্গভ্যাক্স’ রাখার প্রস্তাব করেছেন স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান।

মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) তেজগাঁওয়ে গ্লোব বায়োটেকের ল্যাব পরিদর্শনে গিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। এর আগে গ্লোব বায়োটেক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনাতেও তিনি এই ভ্যাকসিনের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব দেন।

আবদুল মান্নান বলেন, ব্যানকোভিডের নাম শুনে কেমন যেন ‘ব্যান ব্যান’ মনে হয়। আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি। দেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গটা আপনাদের নামে থাক। এজন্য নামটা পরিবর্তন করে ‘বঙ্গভ্যাক্স’ রাখার প্রস্তাব করেছি। এটি সবার কাছেই গ্রহণযোগ্য হওয়ার মতো। এতে জাতির জনকের বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং ভ্যাকসিন— এই তিনটিকেই প্রতিনিধিত্ব করে।

তিনি বলেন, সরকার দেশীয় প্রতিষ্ঠানের তৈরি টিকা করোনাভাইরাস মোকাবিলায় কাজে লাগাতে চায়। সেজন্য টিকা তৈরির কাজ এগিয়ে নিতে সহায়তা করতে চায় সরকার। সে কারণেই প্রতিষ্ঠানটি পরিদর্শনে এসেছি আমরা।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা এবং ভারত থেকে বাংলাদেশ যে টিকা পাবে, তাতে দেশের সব মানুষকে দেওয়া সম্ভব হবে না। এ কারণে দেশীয় উৎস থেকে টিকা সংগ্রহের বিষয়টিও মাথায় রাখছে সরকার।

আবদুল মান্নান বলেন, আমাদের প্রায় ১৮ কোটি মানুষ। এ কারণে বিদেশ থেকে সব টিকা এনে পারব না। একটা সময় দেশে উৎপাদনের ব্যবস্থা আমাদের করতেই হবে। এক্ষেত্রে তারা যদি এগিয়ে আসে, সে বিষয়টি আমাদের দেখতে হবে। যদি ভ্যাকসিন উৎপাদন করা যায়, সেক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশের নামও উজ্জ্বল হবে।

তিনি বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পেলে সরকার গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাকসিন নেবে। এর জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতাও করা হবে। এই টিকা সফল হলে দেশের ভাবমূর্তিও বাড়বে। ১৭ কোটি মানুষকে কোভিড ভ্যাকসিন দিতে হলে দেশীয় কোম্পানির ভ্যাকসিন নিতেই হবে বলেও জানান স্বাস্থ্য সচিব।

তিনি বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। প্রয়োজনে দুই ধাপের ট্রায়াল একসঙ্গে করার অনুমোদন দেবে সরকার।

এ সময় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, যেকোনো টিকার পরীক্ষামূলক শুরু প্রটোকল মেনে করতে হয়। গ্লোব বায়োটেক এই টিকার অ্যানিম্যাল ট্রায়াল করেছেন। প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় ট্রায়ালের জন্য প্রতিটি পর্যায়েই আমাদের কাছ থেকে অনুমোদন নিতে হবে। যদি এটার সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে প্রতিটি পর্যায়ে যত দ্রুতসম্ভব আমরা সহায়তা করব।

তিনি বলেন, সেফটি, অ্যাফিক্যাসি এবং কোয়ালিটির সঙ্গে কোনো কম্প্রোমাইজ করা হবে না। এটি আমরা স্ট্রিক্টলি মেনে চলব। এজন্য কত সময় লাগবে, বলা যাবে না। তবে এক থেকে দেড় বছর লাগবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, গ্লোব বায়োটেকের টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের কাজ এগিয়ে নিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সব ধরনের সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছে।

গ্লোব বায়োটেকের চেয়ারম্যান হারুনুর রশিদ বলেন, আমি যখন এই টিকার ঘোষণা দিই, তখনই বলেছি— এটা বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করছি। টিকার ট্রায়াল বিষয়ে আইসিডিডিআর,বি’র সঙ্গে করা সমঝোতা স্মারক চুক্তি বাতিলের বিষয়েও জানান।

এ সময় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক হলেন অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন ও গ্লোব বায়োটেকের অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

 

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *