Home » পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য রায়হানের লাশ কবর থেকে তোলা হবে

পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য রায়হানের লাশ কবর থেকে তোলা হবে

কবর থেকে তোলা হবে রায়হান মরদেহ, সিলেট নগরীর বন্দরবাজার ফাঁড়িতে মারা যাওয়া যুবক রায়হান আহমদের মরদেহ। মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খালেদুজ্জামান।

তিনি জানান, পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য নিহত রায়হান আহমদের মরদেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) বাতেন পুনরায় ময়না তদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের অনুমতি চেয়ে জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেন।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পিবিআই) মোহাম্মদ খালেদুজ্জামান আরও জানান, পূর্বে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই বাতেনের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক অনুমতি প্রদান করে একজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছেন। পরবর্তীতে ম্যাজিস্ট্রেটের সাথে কথা বলে মৃত রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের ব্যাপারের সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

এর আগে বুধবার দুপুরে পিবিআইয়ের একটি দল সিলেটের বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে মারা যাওয়া রায়হান আহমদের মৃত্যুতে হওয়া হত্যা মামলার তদন্তে নামেন। পিবিআই কর্মকর্তারা বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে প্রবেশ করেন বেলা বারোটার দিকে।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে রায়হান আহমদের মারা যাওয়া ঘটনায় হওয়া মামলা পিবিআইতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় পুলিশ সদর দপ্তর। পরে এদিন রাতেই মামলার নথি আনুষ্ঠানিকভাবে পিবিআইতে হস্তান্তর মহানগর পুলিশ।

উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর (রোববার) ভোরে রায়হান আহমদ (৩৩) নামে সিলেট নগরের আখালিয়ার এক যুবক নিহত হন। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রথমে প্রচার করা হয়, ছিনতাইয়ের দায়ে নগরের কাষ্টঘর এলাকায় গণপিটুনিতে নিহত হন রায়হান। তবে বিকেলে পরিবারের বক্তব্য পাওয়ার পর ঘটনা মোড় নিতে থাকে অন্যদিনে। পরিবার দাবি করেন সিলেট মহানগর পুলিশের বন্দর বাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনে প্রাণ হারায় রায়হান।

পরে একইদিন রাত আড়াইটার দিকে পুলিশকে অভিযুক্ত করে সিলেটের কোতোয়ালি থানায় আসামিদের অজ্ঞাত রেখে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি। পরদিন রায়হানের মৃত্যুর ঘটনায় সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (উত্তর) শাহরিয়ার আল মামুনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে সিলেট মহানগর পুলিশ।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- কোতোয়ালি থানার সহকারি কমিশনার নির্মল চক্রবর্তী ও বিমানবন্দর থানার সহকারী কমিশনার প্রবাস কুমার সিংহ।

এদিকে তদন্তে নেমে পুলিশ হেফাজতে রায়হান উদ্দিনের মৃত্যু ও নির্যাতনের প্রাথমিক সত্যতাও পায় তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটি জানতে পারে রোববার ভোর ৩টার দিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে রায়হান আহমদকে আনা হয় বন্দরবাজার ফাঁড়িতে। সেখানে ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়ার নেতৃত্বেই তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। নির্যাতনে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে রায়হানকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সকাল ৭টার দিকে মারা যান তিনি।

প্রসঙ্গত, রায়হান নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়া এলাকার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি স্টেডিয়াম মার্কেট এলাকায় এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারি হিসেবে কাজ করতেন।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *