Main Menu

কক্সবাজারে কৃষকের হাসি ম্লান, ব্লাস্টরোগে বোরো ধানে চিটা

শাহীন মাহমুদ রাসেল : কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় বোরো ধান চিটা হয়ে যাওয়ায় চাষীরা পড়েছে বিপাকে। জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক বিশেষ করে প্রান্তিক চাষীদের বোরো ধানের উপরই তাদের সুখ শান্তি নির্ভর করে। বছরের সিংহভাগ সময়ের খাদ্যের প্রধান উৎস্য এ বোরো ধান। স্বাবলম্বি কৃষক বছরের খাদ্য সংরক্ষণ ও উদ্বৃত্ত ধান বিক্রি করে সংসার পরিচালনা করেন।

কিন্তু এবার বেশ কিছু প্রান্তিকচাষী তাদের জমিতে নতুন জাতের ব্রি-৮১ ও ব্রি-২৮ আবাদ করে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। ব্রি-২৮ ও ৮১ জাতের বেশীর ভাগ জমির ধানই চিটা হয়ে পড়েছে। আগামী বছর কিভাবে সংসার চালাবেন তা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষক।
সদর উপজেলার খরুলিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম এ বছর দেড় বিঘা জমিতে ৮১ জাতের ধান আবাদ করেছিলেন। কদিন বাদেই সোনার এই ফসল ঘরে তোলার কথা। ঠিক এই সময় দেখতে পান তার ক্ষেতের সব ধান শুকিয়ে গেছে। দূর থেকে দেখলে বোঝার উপায় নেই। তবে কাছ থেকে পরখ করে দেখলেই জানা যাবে কি ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন কৃষক আব্দুস সালামা। অজানা এক রোগের আক্রমণে তার ক্ষেতের ধান চিটায় পরিণত হয়েছে।

শুধু কৃষক আব্দুস সালাম নয়, একই এলাকার কৃষক নুরুল ইসলাম, দেলোয়ার, শকু, মনির আলম, গোলাম রহমানসহ আরো কয়েকজন কৃষকের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ ধান চিটায় পরিণত হয়েছে। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ বলছে ভুল ওষুধ প্রয়োগের কারণে এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার পিএমখালী ইউনিয়নের পাতলী বিলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ধানের শীষ সাদা হয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। তবে শীষের গোড়ায় পচন লক্ষ্য করা যায়নি। শুধুমাত্র হাইব্রিড-৮১ জাতের ধানে দেখা দিয়েছে এই অজানা রোগ।

কৃষক দেলোয়ার বলেন, আমার দেড় বিঘা জমিতে ৮১ জাতের ধান চাষ করেছি। ধানের বাড়ন্ত গাছ দেখে মনে হয়েছিল এবার ধানের ব্যাপক ফলন হবে। কিন্তু কপালে নেই। ডিকপাড়া গ্রামের কৃষক মোঃ হামজা বলেন, আমি এক বিঘা জমিতে ৮১ জাতের ধান চাষ করেছি। পুরো জমির ধানের শীষ সাদা হয়ে শুকিয়ে চিটা হয়ে গেছে।

কক্সবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ আবুল কাশেম বলেন, কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে থাকি। কখনো কখনো তারা পরামর্শ না শুনে ইচ্ছামতো ওষুধ ব্যবহার করে থাকেন। ট্রপার ও নাটিভো ওষুধ দেওয়ার পরামর্শ দিলেও তারা জমিতে অন্য ওষুধ স্প্রে করেছে। সে কারণে ধান ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এবছর জেলায় ৫২ হাজার ৮শ ৮৫ হেক্টর জমিতে করা হয়েছে বোরোর ধানের আবাদ হয়েছেন বলে তিনি জানান।

তিনি আরোও জানান, কক্সবাজার জেলায় চলতি বোরো মৌসুমে অর্ধলক্ষাধিক হেক্টর চাষে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে এবার বিআর-২৮ জাতের ধান লাগানো হয়েছে। কম সময়ে এ জাতের ধানের ক্ষেতে ফলন এসেছে প্রচুর। যারা নিয়ম জানেন; তারা সঠিক সময়ে সঠিক কীটনাশক প্রয়োগ করায় ক্ষেতে পোকা আক্রমণ করেনি। কিন্তু অসাবধানতার কারণে খুরুশকুলসহ বিক্ষিপ্ত কয়েক এলাকায় ১০-১৫ হেক্টর জমির ধানে মাজরা পোকা আক্রমণ করেছে।
সদর উপজেলার কিছু কিছু এলাকায় জমির ধান এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই কৃষি কর্মকর্তা। তবে সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম সরওয়ার তোষার বলেন, আমি নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের সাথে কথা বলি। যারা ২৮ জাতের বীজে এ ধরনের সমস্যা কয়েকটি জায়গায় সীমিত পরিমাণে হয়েছে বলে জেনেছি। তাই আমরা ব্রি ২৮ না করার জন্য কৃষকদের নিরুসাহিত করি।

Leave a comment






এই বিভাগের আরো সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.