Home » তাঁতশিল্প বাঁচাতে তাঁতীদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ

তাঁতশিল্প বাঁচাতে তাঁতীদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ

ডেস্ক নিউজ : প্রায় বিলুপ্ত তাঁতশিল্প বাঁচাতে তাঁতীদের প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার, গত ১৫ বছরে তাঁতশিল্প উন্নয়নে তেমন কোন উদ্যোগ নেয়নি কেউ।

বর্তমানে তাঁতীদের সঠিক পরিসংখ্যান করতে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) একটি প্রকল্প নিয়েছে।

বিবিএস সূত্র জানায়, বিদেশী কাপড়ের আগ্রাসন, প্রয়োজনীয় সুতার অভাব, মূলধনের ঘাটতি ও প্রশিক্ষণের অভাবে ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্প ছেড়ে দিচ্ছেন তাঁতীরা। বর্তমানে কাপড় ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন্ত আসছে অথচ তাঁতীদের উন্নত প্রযুক্তি প্রশিক্ষশণের কোন ব্যবস্থা নেই। ফলে এই শিল্পছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন তাঁতীরা। ১৯৯০ সালের আগে হস্তচালিত তাঁতশীল্প ছিলো বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প। ঐ সময় তাঁতশিল্পে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ১৫ লাখ লোক নিয়োজিত ছিলো।

এছাড়া কর্মসংস্থানের দিক থেকে কৃষি ও গার্মেন্টস শিল্পের পরেই তৃতীয় বৃহত্তম এবং গ্রামীণ কমর্সংস্থানের দিক থেকে দ্বিতীয় বৃহত্তম খাত ছিলো এটি। বিগত দুটি শুমারির (১৯৯০ ও ২০০৩ সালের) ফলাফল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় দিনদিন বাংলাদেশে তাঁতের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। ১৯৯০ সালে দেশে মোট ২ লাখ ১২ হাজার ৪২১টি তাঁত ছিল, যা ২০০৩ সালে কমে হয়েছিলো ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫১২ টি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সবশেষ তাঁতশিল্প নিয়ে এক জরিপে এ তথ্য জানা গেছে।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব সৌরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের তাঁত বস্ত্রের রয়েছে সোনালি ঐতিহ্য। দেশের অভ্যন্তরীণ বস্ত্র চাহিদার ৪০ শতাংশ তাঁতশিল্প যোগান দিয়ে আসছে। অথচ এই শিল্প প্রতিনিয়তই কমে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দেশে তাঁত শিল্পের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক এবং এ বিষয়ে তিনি বিভিন্ন সময় তার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ তাঁত বোর্ডের মাধ্যমে তাঁতীদের উন্নয়নে অনেক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন।

বিবিএস সূত্র জানায়, তাঁতশিল্প খাতকে এগিয়ে নিতে উদ্যোগ নিয়েছেন বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। তাছাড়া দেশের সমস্ত তাঁতীদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিয়ে পিছিয়ে পড়া শিল্পকে টেনে তুলতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছেন মির্জা আজম। সবশেষ ২০০৩ সালের পরে তাঁতীদের নিয়ে আর কোনো জপির বা উন্নয়নমূলক কাজ দেশে হয়নি। ফলে মির্জা আজম প্ররিকল্পনামন্ত্রীর বরাবর তাঁতীদের জরিপ জন্য টাকা চেয়ে ডিও লেটার পাঠান। ডিও লেটারের পরিপ্রেক্ষিতে ৭ কোটি ৭৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে পরিকল্পনামন্ত্রী। পরিকল্পনামন্ত্রীর বরাদ্দের ফলে শুরু হতে যাচ্ছে তাঁত শুমারি-২০১৮ শীর্ষক প্রকল্প।

প্রকল্প পরিচালক মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক সময় গ্রামীণ অর্থনীতিতে কৃষির পরেই তাঁতের অবস্থান ছিলো। কিন্তু নানা কারণে ঐতিহ্যবাহী শিল্পটা বিলুপ্ত হতে চলেছে। দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির চাকা সচল ও দেশীয় কাপড়ের চাহিদা মেটাতে এই শিল্পকে ধরে রাখতে হবে। দেশীয় তাঁতীদের উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিবিএসের তাঁত শুমারি জরিপের ফলাফলের পর এ শিল্প উন্নয়নে সুষ্ঠু ও সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ করতে সাহায্য করবে বলে জানান তিনি।

Leave a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *