1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
ডাকাতি নাকি ভিন্ন কিছু, জাহাজে সাত খুন নিয়ে রহস্যের ইঙ্গিত
       
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ০৭:৪৩ অপরাহ্ন

ডাকাতি নাকি ভিন্ন কিছু, জাহাজে সাত খুন নিয়ে রহস্যের ইঙ্গিত

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করে রাখা এমভি আল-বাখেরা জাহাজে সাত হত্যাকাণ্ডের পেছনে রহস্যের ইঙ্গিত রয়েছে। শুরুতে বিষয়টি ডাকাতি বলে মনে করলেও ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা এটিকে ডাকাতির ঘটনা মনে করছেন না। এখানে ভিন্ন কিছু রয়েছে বলে জানালেন তারা। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছে পুলিশ, নৌ পুলিশ, কোস্টগার্ড, সিআইডি ও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।

এর আগে বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে মেসার্স বৃষ্টি এন্টারপ্রাইজের মালিকানাধীন এমভি আল-বাখেরা জাহাজটি থেকে পাঁচ জনের লাশ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। এ সময় আরও তিন জনকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদের চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর দুজনের মৃত্যু হয়। তবে কারা তাদের হত্যা করেছে, তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে একই কায়দায় সবাইকে হত্যা করার ঘটনাটি রহস্যজনক।

সহকর্মীদের দেওয়া তথ্যমতে, নিহতরা হলেন জাহাজটির চালক (মাস্টার) কিবরিয়া, ইঞ্জিনচালক সালাউদ্দিন, সুকানি আমিনুল মুন্সি, গ্রিজার সজিবুল, আজিজুল ও মাজেদুল ইসলাম। নিহত আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি। আহত অপর ব্যক্তির নাম জুয়েল। তাদের সবার বাড়ি নড়াইলে। জুয়েলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

জাহাজের মেঝেতে পড়ে ছিল রক্তাক্ত কুড়াল, সারের একটি বস্তাও খোয়া যায়নি

এ সম্পর্কে জানতে চাইলে হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, ‘চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক স্যারের কাছ থেকে খবর পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যেই ওসিসহ ওখানে যাই। গিয়ে দেখলাম, জাহাজের মেঝেতে পড়ে ছিল রক্তাক্ত একটি চাইনিজ কুড়াল। এটি ছিল সারের জাহাজ। অবাক করা বিষয় একটি বস্তাও খোয়া যায়নি। কেউ ডাকাতি করতে এলে তো সার বা জাহাজ কোনও একটি নিয়ে যাবে। কিছুই নেয়নি। আবার জাহাজের কর্মীদের ঘুমন্ত অবস্থায় কোপানো হয়েছে। অবস্থা দেখে বোঝা যায়, তাদের হত্যার পর পর বিছানার চাদর দিয়ে ঢেকে রেখে গেছে একই বিছানায়। সবাই নিজ নিজ কক্ষে একই কায়দায় হত্যার শিকার হওয়ায় কাউকে ডাকাতিতে বাধা দেওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আহত অবস্থায় তিন জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছিলাম। তাদের মধ্যে দুজন মারা গেছেন। ফলে কোনও তথ্য জানা সম্ভব হয়নি। আহত অপরজনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। শ্বাসনালি কেটে ফেলায় তার কাছ থেকেও কোনও তথ্য আমরা নিতে পারিনি। তবে পুরো ঘটনার তদন্ত করছি আমরা। আশা করছি, তদন্তে বেরিয়ে আসবে এর পেছনে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা। বিষয়টি তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। তবে এটি ডাকাতি নয়, ভিন্ন কিছু যে তা বোঝাই যাচ্ছে।’

খোয়া যায়নি জাহাজের কোনও মালামাল

খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘জাহাজের কোনও মালামাল খোয়া যায়নি। সার কী পরিমাণ ছিল, তা মালিকপক্ষ জানালে নিশ্চিত হওয়া যাবে। সারের বস্তাগুলো সাজানো-গোছানো দেখেছি। সেগুলো ঠিকমতো আছে। প্রাথমিকভাবে বোঝা যাচ্ছে, জাহাজ থেকে কিছুই চুরি হয়নি। সাত জনকে হত্যা করা হয়েছে। একজন জীবিত থাকলেও মৃতপ্রায়। কিছু রহস্য তো আছেই। আসলে কী ঘটেছে, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘তবে বিষয়টিকে আমরা আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি বলছি না। মাঝেমধ্যে অনেক জায়গায় এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা সচেতন ও সতর্ক আছি। তদন্ত করছি। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ধরা যায়। তবে পুলিশের তদন্তের আগে পরিষ্কার করে কিছু বলা যাচ্ছে না। নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে নৌপথে নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলেছি। কারণ এই নৌপথে পণ্যবাহী জাহাজ চলে। যাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়, সেটি নিশ্চিত করছি আমরা।’

প্রত্যেকের মাথায় গুরুতর আঘাত

নৌ-পুলিশের চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘ধারণা করছি রবিবার রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে। আমরা সোমবার দুপুর ২টার দিকে খবর পেয়েছি। এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। প্রত্যেকের মাথায় গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। জাহাজের পাঁচটি কক্ষে পাঁচ জনের লাশ পেয়েছি আমরা। আরও তিন জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় পেয়েছি। পরে তাদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে দুজনের মৃত্যু হয়। আট জনই জাহাজটিতে ছিলেন। ধারণা করছি, ঘুমন্ত অবস্থায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলায় ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে।’

ডাকাতি নয়, তাদের টার্গেট ছিল হত্যা উল্লেখ করে সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘জাহাজের মালিকপক্ষ এখানে আসলে আমরা কিছু বিষয় জানতে পারবো। জাহাজে থাকা কোনও মালামাল চুরি হয়নি। ডাকাতি বলে প্রচার হলেও আমার মনে হচ্ছে এটি ডাকাতি নয়। কারণ জাহাজে কয়েক কোটি টাকার সার ছিল। সেগুলো স্পর্শও করেনি তারা। নিহতদের মোবাইলগুলো আমরা পেয়েছি। খুনিরা কিছু নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। খুনিদের টার্গেট ছিল হয়তো হত্যা, অন্য কিছু নয়। তদন্ত সাপেক্ষে এটি নিশ্চিত করে বলা যাবে। আপাতদৃষ্টিতে বলা যায়, এটি ডাকাতি নয়।’

আর কী কারণে ডাকাতি বলে মনে হচ্ছে না জানতে চাইলে এসপি সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘একটি কার্গো জাহাজে যারা থাকেন তারা সবাই কর্মচারী। তাদের কাছে সবমিলিয়ে ২০ থেকে ৪০ হাজার টাকাও থাকে না। শুধু পথ খরচ থাকে। ডাকাতরা সাধারণত ধরলে কর্মচারীরা সব দিয়ে দেয়। কারও কোনও ক্ষতি করে না, ডাকাতি করে চলে যায়। কিন্তু এসব কর্মচারীকে একই কায়দায় হত্যা করা হয়েছে। যদি তারা বাধা দিতেন তাহলে শরীরের অন্য কোথাও আঘাত থাকতো। অথচ সবার লাশ নিজ নিজ কক্ষে বিছানার চাদরে ঢাকা ছিল। সবার মাথায় আঘাত করা হয়েছে, অন্য কোথাও আঘাত দেখা যায়নি। একজনের ছিল গলায় আঘাত। কাজেই এটি কোনোভাবেই ডাকাতি বলে মনে হচ্ছে না আমাদের। এজন্য পুলিশ, কোস্টগার্ড, সিআইডি, পিবিআইসহ পুলিশের সব টিম গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত করছে। ফরেনসিকের জন্য যেসব আলামত সংগ্রহ করা দরকার, সব সংগ্রহ করা হয়েছে। মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

তরিকুল নামের একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে ঘটনাটি জানান

হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, ‘তরিকুল ইসলাম নামের একজন ৯৯৯ নম্বরে ফোন করেছিলেন। ওই ফোনে প্রাপ্ত খবরের ভিত্তিতে ডিসি স্যার আমাকে বিকাল ৩টার দিকে বিষয়টি জানিয়েছেন। স্যার ঠিক জানেন না কোন জায়গায় জাহাজটি আছে। পরে আমরা জানতে পেরেছি, জাহাজের মালিক গত রাত থেকে স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তখন একই কোম্পানির মালিকানাধীন আরেকটি জাহাজের স্টাফদের বলেন জাহাজটি কোথায় আছে, তার খোঁজ নিতে। তারা আল-বাখেরা জাহাজটিকে মেঘনা নদীর ইশানবালা খালের মুখে নোঙর করে রাখা অবস্থায় দেখেন। পরে তারা জাহাজে উঠে দেখতে পান, পাঁচ জন মৃত। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। তাদের গায়ে কাঁথা, শাল ও চাদর মোড়ানো ছিল। এমনভাবে ছিল; যেন তারা ঘুমিয়ে আছেন। কিন্তু তাদের মাথা ক্ষতবিক্ষত। কোপানো হয়েছে। আর তিন জন আহত অবস্থায় ছিলেন। এরপর উদ্ধার অভিযান শুরু হলো।’

যা জানালেন সহকর্মীরা

জাহাজটির মালিক দিপলু রানা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রওনা হওয়ার পর রবিবার রাত সাড়ে ৮টায় চালকের (মাস্টার) সঙ্গে আমার সর্বশেষ কথা হয়। তখন চালক জানান মেঘনা নদীতে তারা জাহাজের মধ্যেই আছেন। তবে সকালে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও কেউ সাড়া দেননি। বারবার যোগাযোগ করে কাউকে না পেয়ে আমাদের আরেকটি জাহাজের (মুগনি-৩) নাবিকদের বিষয়টি জানাই। ওই জাহাজ এমভি আল বাখেরার কাছাকাছি ছিল। তারা আল-বাখেরার কাছাকাছি যাওয়ার পরই হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানতে পারেন।’

মুগনি-৩ জাহাজের চালক মোহাম্মদ বাচ্চু মিয়া ও গ্রিজার মো. মাসুদ জানিয়েছেন, আমরা খালি জাহাজ নিয়ে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় মালিকের ফোন পেয়ে দুপুর ১টায় আমরা আল-বাখেরা জাহাজের কাছে যাই। সেখানে গিয়ে আল-বাখেরা জাহাজে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচ জনকে পড়ে থাকতে দেখেন আমাদের সুকানি রবিউল। তারা জীবিত ছিলেন না। পাঁচ জনের বাইরে গুরুতর আহত অবস্থায় তিন জন জাহাজে পড়ে ছিলেন। দ্রুত বিষয়টি আমরা পুলিশকে জানাই। তখন পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুজনের মৃত্যু হয়। দেখে বোঝা যাচ্ছে তাদের কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.