1. abusufian7389@gmail.com : .com : sk .com
  2. ashfakur85@gmail.com : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. b.c.s.bipro@gmail.com : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. zihad0292@gmail.com : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. ahmedmdmahfuz@gmail.com : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. nazimahmed2042@gmail.com : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. shahadotchadni@gmail.com : Md Sh : Md Sh
  8. ashfakur86@gmail.com : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. shuddhobarta24@gmail.com : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. surveyor.rasid@gmail.com : Abdur Rasid : Abdur Rasid
করোনায় জর্জরিত বাংলাদেশ        
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৫ অপরাহ্ন

করোনায় জর্জরিত বাংলাদেশ

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই, ২০২১

আজ ৮ জুলাই। দেশে করোনা মহামারির ১৬ মাস পার হলো। আর এই ১৬ মাসের মধ্যে চলতি বছরের জুন থেকে করোনার আঘাতে বেশি জর্জরিত হয়েছে বাংলাদেশ। দেশে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্তের ঊর্ধ্বগতি চলছে, চলছে মৃত্যুর মিছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানাচ্ছে, রাজধানী ঢাকার অন্যতম বড় সরকারি আটটি হাসপাতালের ১২৭টি আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) বেডের সবগুলোতে রোগী ভর্তি। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে আশঙ্কাজনক হারে কমে আসছে ফাঁকা আইসিইউর সংখ্যা। অপরদিকে দেশের ১৩ টি হাসপাতালে সাধারণ শয্যার বিপরীতে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি রয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় (৭ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত) করোনায় নতুন করে আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১১ হাজার ১৬২ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, রোগী শনাক্তের সংখ্যা এভাবে বাড়তে থাকলে মহামারিকালের দ্বিতীয় ঢেউয়ের এপ্রিল মাস এবং সদ্য শেষ হওয়া ভয়ংকর জুন মাসকে ছাড়িয়ে যাবে চলতি জুলাই মাস।
২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী শনাক্তের পর তা বাড়তে থাকে সমান তালে। অবশ্য চার মাস পর শনাক্তের হার নিম্নমুখী হলেও একেবারে কমে যায়নি। বছরের শেষ দিকে এসে সংক্রমণ অনেকটাই কমে যায়, এমনকি এক পর্যায়ে দৈনিক শনাক্ত তিনশর কাছাকাছি ছিলো বেশ কিছুদিন। কিন্তু চলতি বছরের মার্চ থেকে সংক্রমণ আবার বাড়তে থাকে। সেসময় দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের ওপরে চলে যায়। শনাক্ত ও মৃত্যু বাড়তে থাকায় পাঁচ এপ্রিল থেকে মানুষের চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এ বিধিনিষেধের ফলাফলে সংক্রমণ পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ঈদুল ফিতরে বিধিনিষেধ শিথিল হয়ে পড়ে। শহর ছেড়ে যাওয়া মানুষ গ্রামমুখী হয়, যেখানে স্বাস্থ্যবিধির কোনও নিয়ম ছিল না। তাতে করে জনস্বাস্থ্যবিদরা আশঙ্কা করেন ঈদের পর সংক্রমণ আবার বেড়ে যাবে, ঘটেও তাই।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, দেশে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামাজিক সংক্রমণ হয়েছে। যার ফলে প্রথমে সীমান্তবর্তী জেলা এবং পরে সেসব জেলা থেকে সংক্রমণ ছড়িয়েছে পাশের জেলাগুলাতেও। আর পরেই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনার সংক্রমণ রোধে বিধিনিষেধ আরোপের যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং ব্যক্তিপর্যায়ে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তা বাস্তবায়নে শিথিলতার পরিচয় দিলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেই আশঙ্কাকে সত্যি করে জুনের পরিস্থিতি খারাপ হয়। দেশে করোনা মহামারিকালের দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ের এপ্রিলকে ছাড়িয়ে জুন হয়ে ওঠে ভয়ংকর। ভয়ংকর এ পরিস্থিতির ভেতরেই সংক্রমণ রুখতে গত ১ জুলাই থেকে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে না যাওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়, যা একদফা সময়সীমা বাড়িয়ে আগামী ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে চলমান এই কঠোর বিধিনিষেধে প্রথম দিকে মানুষকে বাড়িতে রাখা গেলেও দিনে দিনে তা শিথিল হতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে সড়কে যান চলাচল বাড়তে দেখা গেছে, কর্মজীবী মানুষের চলাচলও বেড়েছে।
এমনটা চলতে থাকলে এবারের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক নাজমুল ইসলাম বলেন, দেশের চলমান লকডাউন বা কঠোর বিধিনিষেধ অমান্য করার ঘটনা ঘটছে। এতে করে রোগী সংখ্যা যদি অস্বাভাবিক বেড়ে যায় তাহলে আবারও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। সংক্রমণের উচ্চমুখী এই প্রবণতা যদি অব্যাহত থাকে, জুলাইয়ের রোগী সংখ্যা এপ্রিল ও জুন মাসকেও ছাড়িয়ে যাবে।
তিনি আরও বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২১ হাজার ৬২৯ জন। এপ্রিলে সেটি লাখ ছাড়িয়ে যায়। গেল জুন মাসেও তা এক লাখ ১২ হাজার ৭১৮ জনে এসে থামে। আর চলতি জুলাই মাসের প্রথম ছয় দিনেই শনাক্ত হয়েছেন ৫৩ হাজার ১৪৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ৬ জুলাই সকাল ৮টা থেকে পরের ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ২০১ জন। মহামারিকালে এই প্রথম একদিনে এত মৃত্যু দেখলো বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে পরপর দুইদিন ধরে শনাক্ত হচ্ছে ১১ হাজারের বেশি। দেশে গত এক সপ্তাহ ধরে মৃত্যু একশর উপরে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ২০১ জনকে নিয়ে দেশে করোনাতে আক্রান্ত হয়ে সরকারি হিসাবমতে মোট মারা গেলেন ১৫ হাজার ১৫ হাজার ৫৯৩ জন। এর আগে গত ১ জুলাই ১৪৩ জন, ২ জুলাই ১৩২ জন, ৩ জুলাই ১৩৪ জন, ৪ জুলাই ১৫৩ জন, ৫ জুলাই ১৬৪ জন এবং ৬ জুলাই ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দেশে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর কথা জানানো হয় ২০২০ সালের ১৮ মার্চ। এরপর থেকে দেশে প্রথম ১ হাজার রোগীর মৃত্যু হয় ৮৪ দিনে। এরপর গেল বছরের ৫ জুলাই দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ২ হাজার ছাড়িয়ে যায়। পরের ১ হাজার রোগীর মৃত্যু হয় মাত্র ২৫ দিনে। তৃতীয় ১ হাজার রোগীর মৃত্যু হয় আরও কম সময়ে মাত্র ২৩ দিনে। দেশে করোনায় মৃত রোগীর সংখ্যা চার হাজার পূর্ণ হয় পরের ২৮ দিনে। পাঁচ হাজার পূর্ণ হয় আরও ২৮ দিনে, ছয় হাজার পূর্ণ হতে সময় লাগে আরও ৪৩ দিন, সাত হাজার পূর্ণ হয়েছে আরও ৩৮ দিনে, আট হাজার পূর্ণ হয়েছে পরের ৪২ দিনে, নয় হাজার পেরিয়ে পরের ৬৭ দিনে আর মাত্র ১৫ দিনে পরের এক হাজার রোগী মারা গিয়ে দেশে ১০ হাজার রোগীর মৃত্যু হয় চলতি বছর এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখে এসে।
এরপর ১০ থেকে ১১ হাজার অর্থাৎ একাদশতম হাজার রোগীর মৃত্যু হতে সময় লেগেছে মাত্র ১০ দিন, দেশে মৃত রোগী ১২ হাজার হয়েছে পরের ১৬ দিনে, ১৩ হাজার হয়েছে পরের ৩১ দিনে, ১৪ হাজার হয়েছে পরের ১৫ দিনে আর ১৪ থেকে ১৫ হাজার মৃত্যু হয়েছে মাত্র আটদিনে। এর আগে সবচেয়ে কম সময়ে ১ হাজার সংখ্যক রোগীর মৃত্যু হয়েছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে গত এপ্রিল মাসে। সেবারে এক হাজার মৃত্যুর হয়েছিল ১০ দিনে। এবার আরও কম সময় আটদিনেই মৃত্যু হল এক হাজার মানুষের।
আর গত ১ জুলাই ৮ হাজার ৩০১ জন, ২ জুলাই ৮ হাজার ৪৮৩ জন, ৩ জুলাই ৬ হাজার ২১৪ জন, ৪ জুলাই ৮ হাজার ৬৬১ জন, ৫ জুলাই ৯ হাজার ৯৬৪, ৬ জুলাই ১১ হাজার ৫২৫ এবং ৭ জুলাই ১১ হাজার ১৬২ জন শনাক্ত হয়েছেন। অর্থাৎ গত সাতদিনে করোনাতে রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৬৪ হাজার ৩১০ জন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগতাত্তিক নিয়ম অনুযায়ী ১ জুলাইয়ের সর্বাত্মক বিধিনিষেধের আগের অবস্থার কারণে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত করো’নার এই ভ’য়াল রূপ দেখতে হবে। তারপর অবস্থার কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে আবার নাও হতে পারে।
বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই তৃতীয় ঢেউ হয়ে গেছে, তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে আমরা আছি জানিয়ে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন  বলেন, গত ঈদের পর থেকেই দেশে সংক্রমণ বেড়েছে এবং সেটা তৃতীয় ঢেউয়ে পরিণত হয়েছে এখন। এটা যদি আরও আগে নেমে যেতো তাহলে হয়তো দ্বিতীয় ঢেউয়ের অংশ হতো, কিন্তু সেটা না হয়ে তৃতীয় ঢেউয়ে পরিণত হয়েছে।
এই সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে কিনা প্রশ্নে তিনি বলেন, আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর মৃত্যুও বাড়বে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত। কারণ ১ জুলাইয়ে দেওয়া বিধিনিষেধের প্রভাব মৃত্যুর ক্ষেত্রে পড়বে তিন সপ্তাহ পরে অর্থ্যাৎ ২১ জুলাইয়ের পর। ২১ জুলাই নাগাদ মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তবে কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে আড়াই সপ্তাহ পরে। কিন্তু সে পর্যন্ত আমাদের প্রতিদিনই শনাক্ত এবং মৃত্যুর এই ভয়ংকর রূপ দেখতে হবে।
একইসঙ্গে প্রতিটি ঢেউ তার আগের ঢেউয়ের চাইতে বেশি বিধ্বংসী হয়, ভয়াল হয়, মারাত্মক হয়, সংখ্যায় বেশি হয়। আগের ঢেউয়ের চাইতে এবারে আরও বেশি জর্জরিত হচ্ছে বাংলাদেশ, বলেন ডা. মুশতাক হোসেন।
তবে এমন হারে মৃত্যু ও শনাক্তেও বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের পিক বা চূড়া নিয়ে সন্দিহান স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য আবু জামিল ফয়সাল। তার ভাষ্য, ‘দেশে আসলে (সর্বোচ্চ চূড়া) কোথায় বলা মুশকিল।’ এই ঊর্ধ্বগতি আরও চলবে, শনাক্তের সংখ্যা বাড়বে, মৃত্যুও বাড়বে- শঙ্কা জামিল ফয়সালের।
এখন যারা মারা যাচ্ছেন তারা সংক্রমিত হয়েছিলেন ১৪ থেকে ২১ দিন আগে। কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে যে সংক্রমণের যে ঊর্ধ্বগতি, প্রতিদিন যে আট হাজারের বেশি মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন তাদের মৃত্যু রোগতাত্ত্বিক নিয়ম অনুযায়ী হবে আগামী অন্তত দেড় সপ্তাহ পর্যন্ত।
আবু জামিল ফয়সাল বলেন, এবারের ঢেউয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি জর্জরিত হয়ে গেল- অথচ আমরা কিছুই করতে পারলাম না।

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.