1. [email protected] : .com : sk .com
  2. [email protected] : আশফাকুর রহমান : Ashfakur Rahman
  3. [email protected] : বিপ্র দাস বিশু বিত্রম : Bipro Das
  4. [email protected] : Zihad Ul Islam Mahdi : Zihad Ul Islam Mahdi
  5. [email protected] : মোঃ মাহফুজ আহমদ : মোঃ মাহফুজ আহমদ
  6. [email protected] : Najim Ahmed : Najim Ahmed
  7. [email protected] : Md Sh : Md Sh
  8. [email protected] : শুদ্ধবার্তা ডেস্ক : SB 24
  9. [email protected] : shuddhobarta24@ : আবু সুফিয়ান
  10. [email protected] : Abdur Rasid : Abdur Rasid
সাফল্য কোথায় ?
       
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

সাফল্য কোথায় ?

  • সংবাদ প্রকাশের সময় : বুধবার, ১১ এপ্রিল, ২০১৮

অনলাইন নিউজ: কিছু  লা্ছুদিন আগে আমার অন্যতম প্রিয় অভিনেতা ড্যানিয়েল ডে লুইস ঘোষণা দিলেন যে তিনি সিনেমার অভিনয়জীবন থেকে অবসর নেবেন। তাঁর বয়স মাত্র ৬০। একজন অভিনেতার জীবনে ৬০ বছর বয়সকে মাত্রই বলা যায়। যেখানে তাঁর সহকর্মীরা ৭০, ৮০, ৯০ বছর বয়স পর্যন্ত দাপটের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে লুইসের বয়স তো কিছুই না। অভিনয়জীবনে সাফল্যের বিষয়টা কিঞ্চিৎ আপেক্ষিক। তবে যেভাবেই দেখি, ড্যানিয়েল ডে লুইস নিঃসন্দেহে অন্যতম সফল অভিনেতাদের একজন। তিনি একমাত্র পুরুষ অভিনেতা, যিনি তিন বার অস্কার জিতেছেন। এ ছাড়া আরও তিন বার অস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। ২০১২ সালে টাইমস সাময়িকী তাঁকে বিশ্বের সেরা অভিনেতা উপাধি দিয়েছে। অভিনয় অথবা সিনেমা–বোদ্ধাদের যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই তাঁর নাম প্রথম সারিতে পাওয়া যাবে। তিনি যে সিনেমা–জগৎকে আরও অনেক কিছু দিতে পারেন, এই বিষয়েও নেহাত পাগল না হলে সবাই একমত হবেন। এত কিছুর পরেও তিনি অবসর নিলেন কেন?

অনেকেই বলতে পারেন, তিনি যে সাফল্য অর্জন করেছেন, যে কারও জন্যই সেটা যথেষ্ট। অবসর নিতেই পারেন। সেটা বললে আসলে বিতর্ক করা কঠিন। কিন্তু এখানে একটা মজার ব্যাপার আছে। এটা ড্যানিয়েল ডে লুইসের প্রথম অবসর নয়। তিনি এর আগেও একবার পাঁচ বছরের জন্য অভিনয় ছেড়ে দিয়েছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে নিজের হাতে জুতা বানানোর কাজ শিখেছেন। সেই পাঁচ বছর তাঁর হদিস বেশির ভাগ কাছের মানুষও জানত না। এটা তিনি করেন ১৯৯৭ সালে। যদিও তত দিনে ডাকসাইটে অভিনেতা হিসেবে যথেষ্ট পরিচিত। তারপরও এখনকার তুলনায় তাঁর ওই সময়ের খ্যাতি অনেক কম ছিল। বিশ্বের অন্যতম অভিনেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার মোক্ষম সময় তিনি ‘হাওয়া’ হয়ে গেলেন জুতা বানানোর শখে।

আমার আজকের লেখার বিষয়বস্তু পেশাগত সাফল্য। বিশেষ করে, কখন একজন মানুষ নিজেকে পেশাগতভাবে সফল ভাবতে পারে। আমি নিজে পেশাগত জীবনের মধ্যম পর্যায়ে আছি। সাফল্য নিয়ে ভাববার সময় এখনো হয়নি। কিন্তু অন্য মানুষের উদাহরণ থেকে সাফল্যের বিষয়ে কিছু অনুমান করতে পারি। ড্যানিয়েল ডে লুইসের মতো একজন মানুষকে দেখলে আমার মনে হয় যে আসলে সাফল্য বিষয়টা আসে নিজের ভেতর থেকে। বিষয়টা এ রকমই হওয়া উচিত। খ্যাতি, উপায়ন এসব অবশ্যই একজনকে পেশাগত জীবনে অনুপ্রেরণা দিতে পারে, কিন্তু নিজের মূল্যায়ন এবং নিজের জীবনের মূল্যায়ন আসতে হবে নিজের ভেতর থেকে। নিজেকে প্রশ্ন করতে হবে যে কতটুকুতে আমি খুশি? কীসে আমি খুশি? দিনের শেষে আমাদেরকে নিজের কাছেই জবাবদিহি করতে হয়। নিজের ভেতর শান্তি বা প্রাপ্তি না থাকলে বাহ্যিক কোনো পুরস্কারই আমাদের খুশি করতে পারবে না।

পেশাগত জীবনে আসলে সাফল্যের ভূমিকা কী? অন্যদের কথা জানি না, কিন্তু আমার কাছে অনেক সময়ই বহিরাগত সাফল্যকে পেশাগত জীবনের মাইলফলক মনে হয়েছে। এত বয়সে যদি আমি এত অর্থ উপার্জন করতে পারি, তাহলে আমি সফল। আমার পেশাগত জীবনের এই সময়ের মধ্যে আমি যদি এত খ্যাতি লাভ করতে পারি, তাহলে আমি সফল। সম্প্রতি আমি উপলব্ধি করতে পারছি যে এভাবে ভাবনাটা হয়তো গঠনমূলক না। এর দুটো প্রধান কারণ। প্রথমত, এভাবে ভাবলে আমি নিজেকে একটা বাহ্যিক ও বিধিবহির্ভূত মানদণ্ডের সঙ্গে বেঁধে ফেলছি। আমার নিজের ব্যক্তিগত আশা–আকাঙ্ক্ষা–ইচ্ছাকে জুতসই গুরুত্ব দিচ্ছি না।

দ্বিতীয়ত, সাফল্য নিয়ে আমি যদি শুধুই বাহ্যিকভাবে চিন্তা করি, তাহলে আমি আমার ব্যক্তিগত বিকাশের জায়গাটা বেঁধে ফেলছি। ৩০ বছর বয়সে এত টাকা আয় করব। এটাই যদি আমার সাফল্যের একমাত্র মাপকাঠি হয়ে থাকে, তাহলে সেই উপার্জনের পরে আমার নিজেকে আরও বড় করার কোনো কারণ বা অনুপ্রেরণা থাকে না। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কথা মাথায় আসে। পেশাগত জীবন অনুযায়ী তাঁর বয়স বেশি নয়। এত দিনে তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী পদে দুই বার নির্বাচিত হয়েছেন এবং নোবেল পুরস্কার জয় করেছেন। বাহ্যিক যেকোনো মাপকাঠি অনুযায়ী তাঁর পক্ষে এর চেয়ে সফল হওয়া কঠিন। তিনি যদি সেটা বিশ্বাস করেন, তাহলে তাঁর বাকি জীবন নাকে তেল দিয়ে ঘুমানো উচিত। কিন্তু তিনি সেটা করছেন না। নিজের কাছে যে বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলো নিয়ে দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। কারণ, তাঁর সাফল্যের সংজ্ঞা শুধু বাইরে থেকে না, ভেতর থেকেও আসে।

আবারও বলছি। পেশাগত স্পৃহা জাগানোর জন্য বাহ্যিক সাফল্য অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দিনশেষে আমাদের নিজেদের সাফল্যের মূল্যায়ন আসতে হবে আমাদের নিজেদের ভেতর থেকে। আমরা যখন নিজেদের কাজ করে আনন্দ পাব, নিজেদের কাজে সন্তুষ্টি লাভ করব, তখনই আমাদের নিজেদের সফল ভাবা উচিত। এর পরে যদি খ্যাতি–অর্থ আসে, তাহলে আরও ভালো।

নিজের পারিবারিক উদাহরণ দিয়ে শেষ করি। আমার বাবা আলী যাকের ও মা সারা যাকের দুজনই অভিনয় এবং ব্যবসায়িক জীবনে যেকোনো বাহ্যিক মাপকাঠি অনুযায়ী সফল মানুষ। চাইলেই অবসর নিতে পারেন। কিন্তু এখনো মঞ্চনাটক নিয়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, যেখানে মঞ্চনাটকের বিকাশ–বৃদ্ধি সারাক্ষণই সংকটের মুখে। বাবার গত বছর বেশ কঠিন অসুখ হয়। তাঁর এই বয়সে এমন অসুখ মোকাবিলা করা কঠিন। সফল একটা জীবন পার করে এসেছি, আর কিছু করার নেই—তিনি যদি এভাবে ভাবতেন, তাহলে হয়তো এই অসুখের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি পেতেন না। আমি জানি, বিভিন্ন জিনিসের মধ্যে মঞ্চে আবার দাঁড়ানোর ইচ্ছা থেকেই লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন। চিকিৎসার চাপে যখন কণ্ঠ ক্ষীণ হয়ে এসেছে, তখন আরেকবার ‘জাগো বাহে কোনঠে সবায়’ (নূরলদীনের সারাজীবন নাটকের সংলাপ) বলে হুংকার দেওয়ার স্বপ্ন জিইয়ে রেখেছিলেন। এই জন্যই হয়তো নিজেকে জিইয়ে রাখতে পেরেছেন।

এ দেখে বুঝতে পারি যে নিজের জীবনের সাফল্যের মাপকাঠি হয়তো নিজের হৃদয়ের কোনো এক গভীর জায়গা থেকেই আসতে হয়।

লেখক: অভিনেতা

Leave a comment

এই বিভাগের আরো সংবাদ
shuddhobarta24
Privacy Overview

This website uses cookies so that we can provide you with the best user experience possible. Cookie information is stored in your browser and performs functions such as recognising you when you return to our website and helping our team to understand which sections of the website you find most interesting and useful.